Editorial

1 year ago

New Parliament Building: দেশ পেল এক নব্য সংসদ ভবন! সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের হাত ধরে সাফল্য পেল সরকারের স্বপ্নের প্রকল্প

New Parliament House (Symbolic Picture)
New Parliament House (Symbolic Picture)

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ   উদ্বোধন ঘটল নতুন সংসদ ভবনের। আরও এক স্বপ্ন সাকার করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী তথা নরেন্দ্র মোদী। তবে এই প্রকল্পকে এক উচ্চতর রূপ দিতে নানান কাঠখড় পোড়াতে হয় মোদী সরকারকে। এর গভীরে গেলে দেখা যাবে এর এক সাদাকালো অতীত। এবং প্রত্যক্ষ করা যাবে বিতর্কের সমাহার। এই নানান বিতর্ককে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে রবিবার, ২৮ মে ২০২৩ প্রাণ পেল নয়া সংসদ ভবন। 

নয়া প্রকল্পের ইতিহাসঃ

তবে এই এত কিছুর পিছনে রয়েছে এক ইতিহাস, যা হয়তো এক আচ্ছাদনের অতলে পড়ে কুহেলিকায় অন্তর্নিহিত। কি সেই ইতিহাস? আমাদের ভারত তথা সমগ্র বিশ্বের সেই কালা মহামারীর প্রসঙ্গ যেন বারে বারে ফিরে আসে। ইতিহাসের যেকোনো ঘটনাই যেমন বারংবার পুনরাবৃত হয়, ঠিক তেমনই ২০ সালের করোনার কথা যেন বর্তমান সংবাদের ঘটনায় মিশে থাকবে এবং প্রবাহিত হবে আরও সুদুর ভবিষ্যতে। তবে এই মহামারির সাথে নয়া সংসদ ভবনের একটা যোগসুত্র রয়েছে যার জন্যে মহামারি প্রসঙ্গ টানা। ২০২০ সালে এই ভাইরাসের আঁচ দেশের অনেক বড়সড় কাজ বন্ধ করার পিছনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এই প্রকল্পের কাজ থেমে থাকেনি। সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের এই কাজ বন্ধ না হওয়ায় সমালোচনার ঝড় বয়ে গিয়েছিল মোদী সরকারের উপর দিয়ে। নানান বিতর্কের মধ্য দিয়ে যেতে হয় মোদী সরকারকে। 

নয়া প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ অর্থঃ

নয়া সংসদ ভবনে নির্মাণের পিছনে রয়েছে অর্থনৈতিক হিসেবনিকেশ। তাই সেক্ষেত্রে এর পিছনে ঠিক কত টাকা খরচ করা হল সেটা নিয়ে পর্যালোচনা করতেই হয়। সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের খাতে বরাদ্দ টাকার অঙ্কটা প্রায় ছিল কোটি কোটি। তার মধ্যে থেকে নতুন সংসদ ভবন নির্মাণের জন্য বরাদ্দ টাকার অঙ্ক ছিল ৮০০ কোটি। অবশেষে এল ২০২০ সাল সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পের টাকার অঙ্ক বৃদ্ধি করল মোদী সরকার। সেক্ষেত্রে টাকার অঙ্কের ঊর্ধ্বসীমা বেড়ে হল ১২৫০ কোটি টাকা। সংসদ ভবন নির্মাণের টেন্ডার পেয়েছিল। সেন্ট্রাল ভিস্তার অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে জানা যাচ্ছে, সেই মোতাবেক প্রাথমিকভাবে ৮৬২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল নয়া সংসদ ভবন নির্মাণের জন্য।কিন্তু, ২০২১ সালে লোকসভায় মোদী সরকার একটি প্রশ্নের জবাবে জানিয়েছিল, এই প্রকল্পের খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৭১ কোটি। তবে এই প্রথমবার নয়, এর পরেও প্রকল্পের বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানা গিয়েছে। একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রকল্পের বাজেট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৫০ কোটি। নয়া সংসদ ভবন নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে ২৬ হাজার ৪৫ মেট্রিকটন স্টিল, ৬৩ হাজার ৮০৭ মেট্রিকটন সিমেন্ট। 

প্রকল্পের ফলে সাধারণ মানুষের কর্ম সংস্থান

নয়া সংসদ ভবন নির্মাণের হাত ধরে ঘটেছিল অগ্রগতি। বহু মানুষের কর্ম সংস্থান ঘটেছিল এই প্রকল্কের হাত ধরে। সুতরাং মানুষের কর্মসংস্থানের ভিতকে কিছুটা হলেও পাকা করেছিল এই প্রকল্প। প্রায় ৪ লাখ ১২ হাজার মানুষ কাজ পেয়েছিল এই প্রকল্পের আওতায়। 

এই নয়া সংসদ ভবন নির্মাণ করা হয়েছে বিশেষ কিছু উপাদান দিয়ে। যেমন সংসদ ভবন নির্মাণের জন্য নাগপুর থেকে আনা হয়েছে সেগুন কাঠ, রাজস্থান থেকে আনা হয়েছে বেলেপাথর।

সেঙ্গল নিয়ে সরব বিরোধীরাঃ

জানা যাচ্ছে ইতিমধ্যেই সংসদ ভবনের সেঙ্গল নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী শিবির। ব্রিটিশদের কাছ থেকে নাকি সেঙ্গলটি পেয়েছিলেন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরু। দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরু। রবিবার পুজোর পর সেঙ্গলটি লোকসভার অধ্যক্ষের আসনের পাশে স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই নিয়ে রীতিমতো সরব কংগ্রেস। নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধন কে করবেন, তা নিয়েও বিস্তর বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। বিরোধীরা নয়া সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান বয়কটের ডাক দিয়েছেন।

বিতর্কের নানান দুর্যোগকে দুরে ঠেলে অবশেষে উদ্বোধন ঃ 

আজ নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পুজো ও হোমের মধ্য দিয়ে উদ্বোধন হল নতুন ভবনের। পাশাপাশি, ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রতীক সোনার রাজদণ্ড বা সেঙ্গল লোকসভার অধ্যক্ষের আসনের পাশে স্থাপন করেন তিনি। কথায় বলে যার সব ভালো তার শেষটাও ভালো হয়। আবার বলা চলে যে কাজে যত বিতর্ক ও প্রতিকূলতা আসে তার শেষে সফলতা অনিবার্য। এমনই এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করল আজকের এই দিনটি। যা ভারতীয় ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় মিশে থাকবে। অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে সরকারের এক সাফল্যের এক নব্যরূপ। আজ ২৮ মে দিনটিকে দেশবাসী মনে রাখবে। জাতীয় স্তরের নানান ঘটনার দীর্ঘ ক্যালেন্ডারে লিপিবদ্ধ হবে এটি। 

You might also like!