দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলা আর বাঙালির পরিচয় তার মিষ্টিতে, তবে সেই মিষ্টি নিয়ে একসময় বঙ্গে আর কলিঙ্গে একেবারে বনিবনা ছিল না। দুই রাজ্যই দাবি করে যে রসগোল্লা আদতে তাদের তৈরী, তানিয়ে কোর্ট কাছারির পর অবশেষে জি আই আদালতের রায়ে শেষটায় রসগোল্লা বাংলার উৎপাদন হিসাবে স্বীকৃতি পায়।
উল্লেখ্য রাইসিনা হিলসের বাসিন্দা ২ দিনের সফরে রয়েছেন কলকাতায়। প্রথা মেনে কলকাতায় রাজ্য সরকারের তরফে দ্রৌপদীকে যখন নানা কিছু উপহার দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়, তখন ওড়িশাকে হারিয়ে নিজস্বতার তকমা পাওয়া বাংলার রসগোল্লাও ছিল সেই তালিকায়। কলকাতার বিখ্যাত দোকান থেকে নীল-সাদা মোড়কে নীল পাগড়ি পড়ে সুসজ্জিত ভাবে কাচের হাঁড়ি ভর্তি রসগোল্লা উপহার দেওয়া হয় রাষ্ট্রপতিকে।
উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর প্রথম থেকেই নীল-সাদাকে বাংলার সরকারি রং হিসেবে তুলে ধরেছেন। সেই নীল-সাদা রঙের ব্যবহার ছিল রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকে স্বাগত জানানোর অনুষ্ঠানে। ‘নীল-সাদা’ হাঁড়িতে করে রসগোল্লা দিয়েছিল নবান্ন। এ বার রাষ্ট্রপতির ক্ষেত্রেও তার বদল হয়নি। তবে পরিবর্তন বলতে মাটির হাঁড়ির বদলে এসেছে কাঁচের স্বচ্ছ হাঁড়ি।তবে তার সাজসজ্জায় ছিল নীল রঙের ছোঁয়া। উল্লেখ্য, রাজ্যপালকে দেওয়া হয়েছিল ২৬ টাকা দামের একশোটি রসগোল্লা সাজিয়ে । তবে রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হচ্ছে পরিমাণে কম। এক একটি ২৫০ গ্রাম ওজনের ২৪টি রসগোল্লা ছিল হাঁড়িতে।
উল্লেখ্য, বাংলার রসগোল্লার জন্য জি আই ট্যাগ দাবি করলে প্রতিবেশী রাজ্য থেকে বিরোধিতা এসেছিল। দাবি ছিল, উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে বহু বাঙালি পরিবারে ওড়িয়ারা পাচকের কাজ করতেন। তাঁরাই রসগোল্লার রেসিপি ওড়িশা থেকে বাংলায় নিয়ে আসেন। পাল্টা বাংলার বক্তব্য ছিল, ওড়িষার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের রসগোল্লার অনেক ফারাক রয়েছে। শুধু ছানা দিয়ে তৈরি যে গোল মিষ্টি রসে জারিয়ে তৈরি হয়, সেটির উদ্ভাবক বাংলাই। অবশেষে বাংলার দাবি স্বীকৃতি পায় ২০১৭ সালের ১৪ নভেম্বর। সেই থেকে ১৪ নভেম্বর দিনটি বাংলায় ‘রসগোল্লা দিবস’ হিসাবে পালিত হয়।
তবে ওড়িষার বাসিন্দা দ্রৌপদী মুর্মু বাংলার রসগোল্লা চেঁখে নিশ্চয় বুঝবেন যে বাংলার এই মিষ্টি স্বাদে গন্ধে বর্ণে সবতেই বাংলার রসগোল্লা আলাদা।