দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজ্য সরকারের উদ্যোগে দিঘায় গড়ে উঠছে সুবিশাল জগন্নাথ মন্দির। সেই মন্দিরের উদ্বোধন কবে হবে তা নিয়ে সংশয় থাকলেও ওল্ড দিঘায় রেল স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় জগন্নাথ মন্দির প্রাঙ্গণে তৈরি রথের চাকা গড়বে আগামী ৭ জুলাই নির্ধারিত দিনেই। রথ তৈরির কাজ যেমন চলছে তেমনই রথ টানার রাস্তা প্রস্তুত করতে ব্যস্ত দিঘা শংকরপুর উন্নয়ন পর্ষদ কর্তৃপক্ষ। পর্ষদের পক্ষ থেকে মাইকিং করে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে, নির্মীয়মাণ জগন্নাথ মন্দির থেকে পুরাতন জগন্নাথ মন্দির অর্থাৎ ওল্ড দিঘার সমুদ্রতটে যে জগন্নাথ মন্দির রয়েছে সেখান পর্যন্ত রথ যাবে। পুরাতন জগন্নাথ মন্দিরকে মাসির বাড়ি হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। পুরীর মন্দিরের আদলে তৈরি হচ্ছে দিঘার জগন্নাথ মন্দির। শুধু মন্দিরের আদলেই মিল নয়, পুরীতে যে রীতি আচার মেনে জগন্নাথ-বলভদ্র-সুভদ্রার পুজো হয়, দিঘার মন্দিরেও সেই রীতিই মানা হবে।
বৃহস্পতিবার পুরোহিতকে নিয়েই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হয়েছে দিঘার জাহাজ বাড়িতে। দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের অফিসে জেলা প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক বৈঠক হয় এদিন। জেলাশাসক, অতিরিক্ত জেলাশাসক, পুলিশ কর্তা, মহকুমাশাসক, বিদ্যুৎ, পূর্ত-সহ বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকরা ছিলেন। সেখানেই ছিলেন মহিষাদল থেকে আসা দু'জন পুরোহিতও।
দীর্ঘক্ষণ এদিন বৈঠক হয়। তবে জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক নিয়ে কেউ কোনওরকম মন্তব্য করতে চাননি। যদিও এ বৈঠক যে দিঘায় নির্মীয়মাণ জগন্নাথ মন্দির ও রথের বিষয়ে, তা কার্যত স্পষ্ট। বৈঠক শেষে প্রশাসনের কর্তারা দিঘার জাহাজ বাড়ি থেকে সোজা চলে যান জগন্নাথ মন্দিরের স্থানে। খতিয়ে দেখেন মন্দিরের কাজকর্ম। সেখান থেকে বেরিয়ে তাঁরা চলে যান ওল্ড দিঘায় জগন্নাথ ঘাটের মন্দিরে।
৭ তারিখ দিঘার জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের সম্ভাবনা নেই। আর রথযাত্রাও হবে কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। দিঘায় জগন্নাথ মন্দির তৈরি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। উল্লেখযোগ্যভাবে বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি ছিল। এই মন্দির তৈরির দায়িত্বে ওয়েস্ট বেঙ্গল ইনফ্রাস্ট্রাকচর ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন বা হিডকো।
মামলাকারীর বক্তব্য ছিল, হিডকো শুধু রাজারহাটের উন্নয়নের কাজ করতে পারে। এর বাইরে কোনও কাজের ক্ষমতা তাদের নেই। এই আবেদনে মামলা হয়। প্রধান বিচারপতি এদিন সেই মামলা খারিজ করে দেন। ফলে মন্দির তৈরি নিয়ে জটিলতার কোনও অবকাশই নেই। আদালত জানিয়েছে, রিকাঠামো উন্নয়নের দায়িত্ব রাজ্যের। তারা ঠিক করবে কোন বিভাগকে দিয়ে দায়িত্ব পালন করবে।
দিঘায় জগন্নাথ ধামকে সামনে রেখে বিশ্ব সংস্কৃতি চর্চার কেন্দ্রও তৈরি হচ্ছে। শোনা যাচ্ছে সেখানে থাকবে গবেষণার ব্যবস্থা। থাকবে পাঠাগারও। যেখানে তথ্য বইয়ের আকারেও থাকবে, থাকবে ডিজিটাল তথ্যও। গড়ে ওঠার কথা সংগ্রহশালারও।
সমুদ্রতীরের শহর পুরীর সঙ্গে আরেক সমুদ্রতীরের শহর দিঘা যেন এবার এক আত্মায় লীন হতে চলেছে। আর কিছু সময়ের অপেক্ষা। এবারের রথযাত্রার আগে যদি বা দিঘার মন্দিরের উদ্বোধন না হয়, তাহলে আগামী বছরের আগে তা হবেই।