দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ ৬ ফেব্রুয়ারি ষটতিলা একাদশী। এই তিথিতে বিষ্ণুর পুজো ও ব্রতকথা পাঠ করলে পুণ্য ফল অর্জন করা যায়। ষটতিলা একাদশীর ব্রতকথা পড়ুন এখানে।
শাস্ত্র অনুযায়ী কৃষ্ণ যুধিষ্ঠিরকে এই একাদশীর মাহাত্ম্য় বর্ণনা করেছিলেন। কৃষ্ণ জানান যে, মাঘ মাসের কৃষ্ণ পক্ষের একাদশী ষটতিলা বা পাপহারিণী একাদশী নামে প্রসিদ্ধ। এই একাদশী সমস্ত পাপ নাশ করে। এই তিথিতে তিলের তৈরি খাবার খেলে বা তিল ভরতি পাত্র দান করলে অনন্ত পুণ্য ফল লাভ করা যায়। পদ্মপুরাণে বর্ণিত রয়েছে যে, কোনও ব্যক্তি তিল বপন করার পর তার থেকে যত শাখা উৎপন্ন হয়, তত হাজার বর্ষ পর্যন্ত সেই ব্যক্তি স্বর্গ লোকে স্থান লাভ করতে পারে।
শাস্ত্র মতে ষটতিলা একাদশী ব্রত করলে ব্যক্তির আধ্যাত্মিক উন্নতি হয়। পাশাপাশি ব্যক্তি সমস্ত ধরনের পাপ থেকে মুক্তি পায়। কন্যা দান, সহস্র বর্ষের তপস্যা ও স্বর্ণদানের ফলে যে ফল পাওয়া যায়, তার চেয়েও বেশি ফলদায়ী ষটতিলা একাদশী ব্রত পালন করা। পরিবারের উন্নতিতে এই ব্রত সহায়ক। এই একাদশী ব্রত পালন করলে ব্যক্তি বিষ্ণুলোকে গমন করে।
ষটতিলা একাদশী ব্রত কথা
প্রাচীনকালে এক বিধবা ব্রাহ্মণী বাস করতেন। বিষ্ণুর প্রতি তাঁর অটুট শ্রদ্ধা-ভক্তি ছিল। শ্রদ্ধাভক্তি ভরে বিষ্ণুর আরাধনা করতেন তিনি। কিন্তু সেই ব্রাহ্মণী কখনও কাউকে অন্ন দান করতেন না। তাই সেই ব্রাহ্মণীর কল্যাণের জন্য বিষ্ণু স্বয়ং তাঁর কাছে ভিক্ষা চাইতে যান। তখন সেই ব্রাহ্মণী এক মাটির পিণ্ড তুলে বিষ্ণুর হাতে রেখে দেন। সেই পিণ্ড নিয়ে বিষ্ণু বৈকুণ্ঠ ধাম প্রস্থান করে।
বয়সকালে সেই ব্রাহ্মণীর মৃত্যু হয়। বিষ্ণুর আরাধনার পুণ্য প্রভাবে সেই ব্রাহ্মণী বৈকুণ্ঠ ধাম পৌঁছন। সেখানে ব্রাহ্মণীকে বসবাসের জন্য এক কূটির দেওয়া হয়, সেখানে এক আম গাছও ছিল। তবে কূটিরে কোনও খাদ্য বস্তু ছিল না। খালি কূটির দেখে সেই ব্রাহ্মণী হতাশ হন। বিষ্ণুর কাছে গিয়ে ব্রাহ্মণী জিগ্যেস বলেন যে, সারা জীবন তিনি শ্রদ্ধাভক্তি ভরে নারায়ণের পুজো করেছেন। মর্ত্যে এক ধর্মপরায়ণ স্ত্রীর মতো বাস করেছেন। তা সত্ত্বেও কেন তাঁকে খালি কূটির দেওয়া হয়?
তখন বিষ্ণু সেই ব্রাহ্মণীকে উত্তর দেন যে তিনি কখনও নিজের জীবদ্দশায় অন্ন দান করেননি। তখন সেই ব্রাহ্মণী নিজের ভুল বুঝতে পারেন। বিষ্ণুকে এই সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় জানতে চান। বিষ্ণু বলেন, যখন দেবকন্যা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে আসবেন, সে সময় তিনি যেন তখনই দ্বার খোলেন, যখন তাঁরা ষটতিলা একাদশীর ব্রতর নিয়ম জানায়।
বিষ্ণুর কথা মতোই কাজ করেন ব্রাহ্মণী। দেবকন্যাদের কাছ থেকে ষটতিলা একাদশীর নিয়ম জেনে এই ব্রত পালন করেন তিনি। এর পরই সেই ব্রাহ্মণীর কূটির অন্ন ও অর্থে ভরে যায়। তাই এই একাদশী তিথিতে অন্নদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।