দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: করালবদনী কালীর ভয়ংকর রূপই আমাদের চেনা। কিন্তু শান্তিপুরে মা পূজিত হন বামাকালী রূপে, যিনি শুধু পূজিতা নন— তিনি ভক্তদের সঙ্গে রীতিমতো নাচেনও! মায়ের এই নাচের কথা অবিশ্বাস্য মনে হলেও, এটি মোটেই গল্পকথা নয়। প্রতি বছর শান্তিপুরে লক্ষ লক্ষ মানুষ ভিড় জমান মায়ের এই অপার্থিব নৃত্য দেখতে।
পুজোর পর অঞ্জলি হয়ে গেলে মায়ের মূর্তিকে মণ্ডপের বাইরে নিয়ে আসা হয়। বিসর্জনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। এরপর ঘাট পর্যন্ত নিয়ে যেতে যেতে নাচের আয়োজন। মায়ের মূর্তি একটি বাঁশের মাচায় করে ঘাড়ে বয়ে নিয়ে চলেন ভক্তরা। তাদের পিছন পিছন আরো অগণিত ভক্তের ঢল নামে। কাঁধে বাঁশ থাকা অবস্থাতেই লাফিয়ে লাফিয়ে নাচের ভঙ্গি করেন ভক্তরা। ফলে নেচে ওঠেন মা কালীও। দূর থেকে ক্যামেরাবন্দি এই দৃশ্য দেখতে অভূতপূর্ব। প্রতি বছর শুধু এই দৃশ্য দেখতে শান্তিপুরে প্রচুর মানুষ ভিড় জমান।
শান্তিপুরের বামাকালীর পুজোর পরদিনই এই নাচ হয়। অর্থাৎ বিসর্জনের আয়োজন পুজো শেষ হলেই শুরু হয়ে যায়। অন্য সব স্থানেই পুজো ৪-৫ দিন ধরে চলে। কিন্তু শান্তিপুরের ঐতিহ্য পুজোর পরদিনই বিসর্জন দেওয়া। তাই আজও সেই রীতি মেনে বিসর্জন হয় মায়ের। আর তার আগেই এই নাচের মনোহর দৃশ্য দেখা যায়। মা কালীর নাচ মানেই যেন তাণ্ডব। এমন এক ধারণা কমবেশি অনেকেই জানেন। কিন্তু বামাকালীর নাচ দেখলে মনে হবে, তিনি আমাদের ঘরের কন্যা। নাচের বিভঙ্গিতে হর্ষের ছোঁয়া দেখা যাচ্ছে। ভক্তদের হাতে থাকে মশাল। সেই মশালের আলোই আলো জোগায় মায়ের বিসর্জনের পথে।
প্রসঙ্গত, বামাকালীর নাচ ঘিরে উন্মাদনা এতটাই তুঙ্গে থাকে যে রীতিমতো হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। এই হুড়োহুড়িতে পদপিষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যায়। তবে তেমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য ব্যবস্থাও করা হয় প্রশাসনের তরফ থেকে।