Festival and celebrations

2 weeks ago

Ashok Shasti 2024: কি ভাবে শুরু হল অশোক ষষ্ঠী? জানুন পৌরাণিক কাহিনী

Ashok Shasti  (File Picture)
Ashok Shasti (File Picture)

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ বহু বাঙালির বাড়িতে আগামীকাল পালিত হবে অশোক ষষ্ঠী। কাঁঠালি কলার সঙ্গে অশোক ফুলের বীজ এবং মাসকলাই, দই দিয়ে খাওয়ার রীতি রয়েছে এই অশোকষষ্ঠীতে। আগামীকাল বাসন্তী পূজোর শুক্লপক্ষের ষষ্ঠীর দিন, চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠীর দিনই অশোক ষষ্ঠীর এই ব্রত পালন করা হয়। যা বহু বছর ধরে চলে আসছে ।

প্রাচীনকালে অশোক বনে বাস করতেন এক ঋষি। তিনি একদিন অশোক গাছের তলায় একটি শিশু কন্যাকে কাঁদতে দেখেন, সেই শিশু কন্যাটিকে তিনি পরে কুটিরে নিয়ে আসেন এবং তাকে লালন-পালনের দায়িত্ব নেন।

শিশু কন্যাটি বড় হতে থাকে। অশোক গাছের নিচে তিনি তাকে কুড়িয়ে পেয়েছিলেন বলে তার নাম রাখেন তিনি অশোকা। মুনির মেয়েটি ছিলেন অপরূপ সুন্দরী। মুনি একসময় চিন্তা করেন যে, ভালো পাত্র দেখে মেয়েটিকে পাত্রস্থ করে, বিবাহ দিতে হবে। কিন্তু বহু চেষ্টা করেও তিনি উপযুক্ত পাত্র না পেয়ে খুব বিরক্ত হয়ে গেছিলেন। একদিন তিনি ঠিক করেন যে, আগামীকাল সকাল বেলায় দরজা খুলে প্রথম যার মুখ দেখবেন, তার সঙ্গেই তিনি তার মেয়ের বিবাহ দেবেন।

পরদিন দরজা খুলে তিনি দেখতে পেয়েছিলেন এক সুদর্শন যুবককে। জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন যে, সে এক রাজপুত্র এবং তাকে খুব পছন্দ হয় মুনির। রাজপুত্রও অশোকার রূপে মুগ্ধ হয় এবং তাহাকে বিবাহ করতে সম্মত হয়।

মুনি অশোকাকে শ্বশুরবাড়ি পাঠানোর সময় তাহার আঁচলে কিছু অশোক ফুল এবং অশোক গাছের বীজ বেঁধে দেন। সেই সঙ্গে বলে দেন যে চৈত্র মাসের শুক্ল ষষ্ঠীর দিন ওই শুকনো অশোক ফুলগুলি জল দিয়ে খেতে, ঐদিন তিনি অন্ন না খাওয়ার আদেশ দেন এবং শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার সময় রাস্তার দুধারে আশোক বীজগুলি ছড়িয়ে দিতে দিতে সে যেন যায়। পরে যদি কোনদিন সে কোনও বিপদে পড়ে তাহলে ওই অশোক গাছের সারি বরাবর সে কুটিরে ফিরে আসতে পারবে তার জন্য তিনি এই ব্যবস্থার কথা বলেছিলেন৷

অশোকা কুটির থেকে রাজবাড়ী পর্যন্ত রাস্তার দুই ধারে আশোক ফুলের বীজ গুলি ছড়িয়ে দিতে দিতে পৌঁছান শ্বশুরবাড়ি। এরপর তাকে সবাই বরণ করে ঘরে তোলে, দেখতে দেখতে বহু বছর কেটে যায় । অশোকার সাত পুত্র এবং এক কন্যা সন্তান হয়, সে বিবাহ দেয় তাদের। এদিকে তাহার শ্বশুর-শাশুড়ি ও মারা যান।

এক চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে সন্ধ্যেবেলায় অশোকা পুত্রবধূদের ডেকে বলেন, আজ অশোক ষষ্ঠী আজ আমি অন্ন মুখে দেব না। শাশুড়ির আদেশ মত বউমারা অশোকার জন্য মুগকলাই রাঁধতে থাকে, কিন্তু তার মধ্যে কোনওভাবে একটা ধান ছিল, যেটা খাবারের মধ্যেই থেকে যায়। সেই খাবার খেয়েই অশোকার জীবনে নেমে আসে ঘোর সর্বনাশ।

তার স্বামী পুত্র এবং পুত্র বধূরা মেয়ে জামাই পরিবারের সমস্ত লোকেরা মারা যায়। অশোকা কাঁদতে কাঁদতে মুনির আশ্রমে ফিরে আসে। অশোক গাছের সারিগুলি দেখে, সে রাস্তা চিনতে পারে, ততদিনে গাছগুলি ও বিশাল বড় বড় হয়ে গেছে। মেয়ের কষ্টের কথা শুনে মুনি ধ্যানযোগে জানতে পারেন যে, মুগকলাইয়ের ভিতর কোনও ভাবে ধান থাকার জন্য এই বিপত্তি হয়েছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে ঘটি থেকে মন্ত্রপূত জল দিয়ে দেন অশোকাকে, বলেন যে এই মন্ত্রপপূত জল মৃতদের গায়ে ছিটিয়ে দিলে সকলে বেঁচে উঠবে। অশোকা বাবার কথামতো তাই করে। সকলে প্রাণ ফিরে পায়। চৈত্র মাসে ষষ্ঠীর দিন মা ষষ্ঠীর পুজো দিয়ে মুগকলাই আর দই সহযোগে অশোক ফুল খেতে বলেন মুনি। ওই দিন অন্ন না খাওয়ার নির্দেশ দেন তিনি। বলেন যে তাহলেই সংসারের সুখ শান্তি বজায় থাকবে। সেই সময় থেকে এভাবেই শুরু হয়েছিল অশোক ষষ্ঠীর ব্রত।

You might also like!