কলকাতা: পুজোকে কেন্দ্র করে শুধু প্রতিমা শিল্প নয়, আরও একটি অনুসারী শিল্পেরও বড় অঙ্কের ব্যবসা হয় ৷ আর তা হল প্রতিমার সাজ। জরির বা সোলার মুকুট, গায়ের কলকার সাজ, কানের, নাকের, চালচিত্রের কলকা, অস্ত্র, চাঁদমালা ও কদমফুল-সহ সবটাই। কুমোরটুলি এই ব্যবসার সঙ্গে ছোট বড় অন্তত ২৫-৩০টি দোকান জড়িয়ে ।
করোনা অতিমারির ধাক্কায় ৩০৩০ ও ’২১-এ একদমই তলানিতে ঠেকেছিল ব্যবসা। তবে সেই খারাপ সময় পার করে গত বছর বেশ খানিকটা ঊর্ধ্বমুখী হয় কুমোরটুলি প্রতিমার সাজসরঞ্জামের রফতানি বাজার। বেশ ভালো ব্যবসা হয়। তবে চলতি বছরে ঘটেছে ছন্দপতন। এবার জনজীবন ও ব্যবসার পরিস্থিতি সব স্বাভাবিক থাকলেও ভিনরাজ্যে রফতানি ঠেকেছে তলানিতে। তার জেরে এই ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা রীতিমত হতাশ। এবার তাঁদের ভরসা কলকাতার ও রাজ্যের সীমিত বাজার ।
কুমোরটুলি থেকেই প্রতিবার সাজসরঞ্জাম যায় পাশের রাজ্য বিহার, ছত্তিশগড়, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা থেকে অন্ধ্রপ্রদেশ, ও উত্তরপ্রদেশ-সহ আরও বেশ কয়েকটি রাজ্যে। ভিনরাজ্যে বাজার খারাপ হওয়ার কারণ হিসেবে অনেক শিল্পী মনে করেন, দুর্গাপুজো আন্তর্জাতিক তকমা পেয়ে কলকাতা বা বাংলার বাজার যেমন চাঙ্গা হয়েছে অন্য রাজ্যে তেমনটা হয়নি। ফলে অনেকাংশে বাজেট কাটছাঁট হয়েছে। যার জেরে গতবার যে আশা করেছিল বিক্রির তেমনটা ভিনরাজ্যের ব্যবসায়ীরা করে উঠতে পারেনি।
এই প্রসঙ্গে সাজ ব্যবসায়ী রণজিৎ সরকার বলেন, "আমি বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা এসব রাজ্যে মাল পাঠাই। স্বাভাবিকভাবে ৫-৮ লাখ টাকার ব্যবসা হয় প্রতি বছরই। কিন্তু করোনায় একদম ব্যবসা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। তারপর গতবছর বাজার দারুণ হয়। যারা ১৫-২০ হাজার টাকার মাল অর্ডার দিতে তারা গতবছর দ্বিগুণ ৩৫-৫০ হাজার টাকার বরাত দিয়েছে। মাল দিয়ে উঠতে পারছিলাম না। তারা আশা করেছিল তাদের রাজ্যে ভালো বাজার হবে। কিন্তু তারা ধাক্কা খেয়েছে। ফলে তাদের মজুত মাল পড়ে আছে। সেই ধাক্কা এসে লেগেছে এবারের ব্যবসায়। যে বরাত দিত২০ হাজার টাকার সে এবার ১০-১২ হাজার বা তারও কম টাকার বরাত দিয়েছে। ফলে এখন কলকাতার যে ব্যবসা হয় সেটাই সম্বল।"