দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ-আসছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো (Durga Puja 2024)। ঢাকে কাঠি পড়তে আর মাত্র বাকি কয়েকদিন। একটা সময় ছিল, যখন শুধু ধনীদের বাড়িতেই হত দুর্গোৎসব। এলাকার সকলে মিলে সেখানেই যোগ দিয়ে পুজোর আনন্দ ভাগ করে নিত। কিন্তু পরবর্তীকালে শুরু হয় বারোয়ারি দুর্গাপুজো। তারও কিন্তু মস্ত বড় এক ইতিহাস রয়েছে।দক্ষিণেশ্বরে ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ রানি রাসমণির প্রতিষ্ঠিত গঙ্গাতীরের মন্দিরে দেবী ভবতারিণী নামেই পুজো করেছিলেন দেবীকে। কিন্তু এবার সেই ‘ভবতারিণী’ থিমেই (Kolkata Durga Puja 2024 Theme) শ্রীরামচন্দ্রর অকাল বোধনের দেবী দুর্গাকে মণ্ডপে হাজির করছে যোধপুর পার্কের ৯৫ পল্লি।
যোধপুর পার্ক বাজার ছেড়ে পশ্চিমে রহিম ওস্তাগরের দিকে দুশো মিটার এগোলে ডানদিকে ৯৫ পল্লির মণ্ডপে চোখে পড়বে বিশাল কাঠের নৌকা। সেখানেই তৈরি হচ্ছে মায়ের ত্রিনয়ন। এটাই ভবসমুদ্র পার হওয়ার আঙ্গিক। মণ্ডপের ভিতরে ঢুকলে চোখে পড়বে একটি বিশাল চক্রের এক বিন্দুতে দাঁড়িয়ে জীবনের চড়াই-উতরাই পেরিয়ে মহামুক্তির দিশা অনুভব করবেন। অন্য প্রান্তে দর্শক আমিত্ব থেকে সরে এসে চারটি প্যানেলে মাধ্যমে নতুন পথের সন্ধান পাবেন। শিল্পীর কথায়, “আমি সব পারি, আমি গান করি, আমি নাচ জানি, আমি রান্নায় সিদ্ধহস্ত, আমি গাড়ি চালাতে পারি, আমিই সব কিছুতে সেরা। এই আমিত্ব, অহংবোধই সামাজিক অবক্ষয়ের মূল ভরকেন্দ্র। আমরা চাই মানুষ এই অহংবোধ বিসর্জন দিয়ে মহামুক্তির পথে এগিয়ে চলুক।” বিশাল পুজো মণ্ডপের আঙ্গিক দেখে স্পষ্ট, সমস্যাদীর্ণ মানুষকে সংকটের ঘূর্ণিজাল ও ক্ষমতার বৃত্তের বাইরে এনে অমানিশার ঘোর কাটিয়ে ‘ভবতারিণী’র আলোকবর্তিকায় পৌঁছে দিতে চাইছেন শিল্পী শক্তি শর্মা।
দর্শকরা মণ্ডপে ঢুকলে দেখবেন, অসংখ্য বাক্স-প্যাঁটারা, আলমারি থেকে শুরু করে দরজার উপস্থিতি। আসলে এই দরজাই হল ভবিষ্যতের পথ। পাশে বৃষ্টির জলের ধারাপ্রবাহ অনাদি-অনন্তকালের জীবনস্রোতের কথা বলে যাবে প্রতিমা দর্শনার্থীদের কানে কানে। জীবন যে পদ্মপাতায় জলের মতো ক্ষণস্থায়ী, তাও আলো ও আঁধারির সংমিশ্রণে দেখবেন মণ্ডপে, বলছেন ৯৫ পল্লি পুজো কমিটির সদস্যরা। এবছর পুজোর ৭৫ বর্ষপূর্তি, কমিটির চেয়ারম্যান বিধায়ক দেবাশিস কুমার। বিগত দুদশকে অসংখ্য শারদ সম্মান পেয়েছে ৯৫ পল্লি, স্বভাবতই প্রতিমা দর্শনার্থীদের হিটলিস্টে জায়গা করে নেওয়া এই পুজো যে এবারও বিচারকদের নজরে থাকবে তা বলাই বাহুল্য।