West Bengal

2 hours ago

Lakshmir Bhandar: "লক্ষ্মীর ভাণ্ডার বদলে দিয়েছে বাংলার অর্থনীতির চেহারা" — প্রশংসায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রিজিওনাল ডিরেক্টর!

RBI officer praises Lakshmi Bhandar scheme
RBI officer praises Lakshmi Bhandar scheme

 

দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প বাংলার অর্থনীতিকে এক নতুন দিশা দেখিয়েছে। এমনই মন্তব্য করলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার রিজিওনাল ডিরেক্টর সুধাংশু প্রসাদ। মঙ্গলবার বীরভূমের সিউড়িতে আয়োজিত এক ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এই রাজ্য সরকারের অন্যতম জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের ভূয়সী প্রশংসা করেন  তিনি। একটি বিশেষ ব্যাঙ্কিং কর্মসূচিতে যোগ দিতে সিউড়িতে আসেন সুধাংশু প্রসাদ। মূলত দশ বছরের পুরনো ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের জন্য ‘রি-কেওয়াইসি’ বা পুনরায় গ্রাহক পরিচয় যাচাইয়ের আবেদন নিয়ে আয়োজিত হয়েছিল এই অনুষ্ঠান। সেখানে বিভিন্ন ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরা যেমন উপস্থিত ছিলেন, তেমনই উপস্থিত ছিলেন বহু গ্রাহকও। তাদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে উঠে আসে বাংলার অন্যতম সফল প্রকল্প লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের প্রসঙ্গ।

রিজিওনাল ডিরেক্টর বলেন, “লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প শুধু নারীদের ক্ষমতায়ন করেনি, সারা বাংলার ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার গতিকেই পালটে দিয়েছে। লক্ষ্মীদিদিরা ইতিমধ্যেই সারা রাজ্যে পাঁচ কোটির বেশি নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলেছেন। প্রতি বছর এই প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যাঙ্কে জমা পড়ছে প্রায় ২৫ হাজার কোটি টাকা।’’তিনি আরও  জানান, এই প্রকল্পের মাধ্যমে যে বিপুল সংখ্যক মহিলা গ্রাহক ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় যুক্ত হয়েছেন, তা এক বিশাল আর্থিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়। তাঁর কথায়, “এই মহিলাদের জন্য সমস্ত ব্যাঙ্ক ৩০ হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ দিতে রাজি। কারণ, মেয়েরা কোনওদিন ঋণখেলাপি হয় না। তাঁরা ধার নিলে তা সময়মতো ফেরত দেন।  এটা ব্যাঙ্কিং জগতে অত্যন্ত ইতিবাচক দৃষ্টান্ত।” 

এদিনের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলেন একাধিক ব্যাঙ্কের প্রতিনিধিরাও—যেমন বলবীর সিং, অনির্বাণ দত্ত, অঞ্জলি কুমার, প্রণব বিশ্বাস, সঞ্জীব কুমার প্রমুখ। তাঁরা বলেন, ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের তিন ধরনের ঝুঁকি বিভাগে ভাগ করা হয়—উচ্চ ঝুঁকি, মাঝারি ঝুঁকি এবং কম ঝুঁকি। এর মধ্যে কম ঝুঁকির গ্রাহকদের সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি।  এই ধরনের গ্রাহকদের জন্য নিয়ম রয়েছে, দশ বছর অন্তর নিজের অ্যাকাউন্ট ‘রি-কেওয়াইসি’ করে নিতে হয়, অর্থাৎ নিজেদের পরিচয় ও নথিপত্র আবার ব্যাঙ্কে জমা দিতে হয়, যাতে অ্যাকাউন্ট সক্রিয় থাকে। এদিন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সূত্রে জানানো হয়েছে, সারা বাংলায় এখনও প্রায় ৮০ হাজার অ্যাকাউন্টধারী রয়েছেন, যাঁদের কেওয়াইসি আপডেট হয়নি। তাঁদের দ্রুত কেওয়াইসি জমা দিতে বলা হয়েছে, নচেৎ অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে স্থগিত থাকতে পারে। 

রিজিওনাল ডিরেক্টর আরও বলেন, এখন গ্রাহকরা ব্যাঙ্কে টাকা না রাখলেও অ্যাকাউন্ট খুলতে পারেন। এমনকি সেই অ্যাকাউন্ট থেকেই তাঁরা ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত ক্ষুদ্র ঋণ নিতে পারবেন। পাশাপাশি থাকবে বিভিন্ন বিমা ও সুরক্ষা প্রকল্পের সুযোগ—যেমন দু’লাখ টাকার জীবনবিমা, অটল পেনশন যোজনা, প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা, জীবনজ্যোতি বিমা প্রভৃতি। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, “ব্যাঙ্কে নিরাপত্তা অত্যন্ত জরুরি। কোনওভাবেই নিজের ব্যক্তিগত তথ্য, যেমন ওটিপি বা পাসওয়ার্ড, অন্য কারও সঙ্গে শেয়ার করবেন না। ব্যাঙ্ক কখনও এসব চায় না। কেউ প্রতারণা করলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যাঙ্কে জানান।” সব মিলিয়ে, এদিনের কর্মসূচিতে যেমন ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের সচেতন করা হল, তেমনই রাজ্যের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পের ইতিবাচক প্রভাব নিয়েও উঠে এল রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গুরুত্বপূর্ণ স্বীকৃতি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্প কেবলমাত্র আর্থিক সহায়তা নয়, এটি হয়ে উঠছে বাংলার নারীদের আত্মনির্ভরতার এক মজবুত ভিত, যা রাজ্যের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকেও শক্তিশালী করে তুলেছে বলে মত ব্যাঙ্ক কর্তাদের।

You might also like!