দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক:এই উইকেন্ডে বলিউডপ্রেমীদের মনে পড়ছে এক বিশেষ নাম—আমির খান। কারণ, বহু প্রশংসিত ছবি ‘সিতারে জমিন পার’ ফের আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে। থিয়েটারে সীমিত রিরিলিজ হোক বা ওটিটিতে নতুনভাবে দেখা, ছবিটির আবেগময় গল্প আবারও দর্শকদের মন ছুঁয়ে যাচ্ছে। আর সেই সঙ্গে উঠে এসেছে আরেকটি আলোচ্য বিষয়—আমির খানের সেই ছবিগুলির কথা, যেগুলির পিছনে ছিল হলিউডি অনুপ্রেরণা।
আমির খান বরাবরই এক্সপেরিমেন্টাল চরিত্রে পরিচিত। তিনি শুধু অভিনেতা নন, প্রযোজক ও পরিচালক হিসেবেও নিজের মুন্সিয়ানা প্রমাণ করেছেন বহুবার। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না, তাঁর জনপ্রিয় কিছু ছবির পেছনে রয়েছে হলিউডি ভাবনা বা রিমেকের ছায়া।
যেমন ধরা যাক ‘গজিনি’—যেটি ভারতের প্রথম ১০০ কোটির ক্লাব ছুঁয়েছিল। এই থ্রিলার ছবিটি আসলে প্রভাবিত ছিল ক্রিস্টোফার নোলানের ‘মেমেন্টো’ থেকে, যদিও ভারতীয় আবেগ ও রোমান্সে ছবিটিকে আলাদা চেহারা দিয়েছিলেন পরিচালক এ আর মুরুগাদোস। আমির খানের অসাধারণ শারীরিক রূপান্তর এবং মানসিক দ্বন্দ্বের অভিনয় এই ছবিকে একটি কাল্ট স্ট্যাটাস দিয়েছে।
আবার ‘থ্রি ইডিয়টস’, যদিও এটি চেতন ভগতের উপন্যাসের ছায়া অবলম্বনে তৈরি, তবে এর মধ্যেও অনেক আন্তর্জাতিক শিক্ষাব্যবস্থা বিষয়ক চলচ্চিত্রের প্রভাব দেখা যায়। শিক্ষা নিয়ে এতো সরস অথচ গভীর ব্যঙ্গচিত্র খুব কমই দেখা যায়, এবং এই ছবিটিও বিশ্বের নানা দেশে আলোচনার বিষয় হয়েছিল।
আরও একটি চর্চিত ছবি ‘পিকে’, যেটি এক নির্দোষ এলিয়েনের চোখ দিয়ে সমাজ, ধর্ম ও বিশ্বাসের জটিল কাঠামোকে প্রশ্ন তোলে। যদিও কনসেপ্টটি মৌলিক, অনেকেই এর তুলনা করেছেন হলিউডের ‘K-PAX’ বা ‘The Man Who Fell to Earth’-এর মতো ছবির সঙ্গে, কারণ সেখানে এলিয়েন চরিত্রগুলিও মানুষের সমাজ নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলে।
এই প্রসঙ্গে আসতেই হয় ‘লাল সিং চাড্ডা’-র কথাও, যা একেবারে অফিশিয়াল রিমেক ‘Forrest Gump’-এর। টম হ্যাঙ্কস অভিনীত অস্কারজয়ী ছবির এই ভারতীয় সংস্করণ নিয়ে নানা মত থাকলেও, আমির খানের সৎ প্রচেষ্টা, বেছে নেওয়া সময়কাল, এবং গল্পের ‘ভারতীয়ীকরণ’ নজর কেড়েছিল সকলের।
এই ছবিগুলোর মধ্যে প্রতিটিই আলাদা স্বাদের, আলাদা গল্পের, কিন্তু এক জায়গায় মিল রয়েছে—আমির খান চরিত্রে প্রবেশ করেন হৃদয় ও মন দিয়ে। তাঁর রূপান্তর, সংলাপের প্রতি নিষ্ঠা, চরিত্র বোঝার গভীরতা দর্শকদের কাছে তাঁর অভিনয়কে বিশ্বাসযোগ্য করে তোলে।
এই উইকেন্ডে তাই আবারও দেখা যেতে পারে আমিরের এই ছবিগুলি—না শুধু তারকার প্রতি ভালবাসা থেকে, বরং বোঝার জন্য যে, কীভাবে এক আন্তর্জাতিক আইডিয়া ভারতীয় আবেগে মোড়ানো যেতে পারে সফলভাবে।
শেষমেশ, ‘সিতারে জমিন পার’ যেমন আমাদের মনে করিয়ে দেয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্কের আবেগঘন মুহূর্ত, তেমনি আমির খানের অন্যান্য ছবিগুলিও আমাদের ভাবায়—ভিন্ন ভাবনাকে কিভাবে সাহসের সঙ্গে বড় পর্দায় তোলা যায়। শীমীলাউইকেন্ডে তাই আমির স্পেশাল বিঞ্জে ডুব দেওয়াটা একদমই মন্দ হবে না।