দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: হাস্যরসের পর্দা আরও একবার অন্ধকারে ঢাকা পড়ল। বিদায় নিলেন এমন এক অভিনেতা, যাঁর উপস্থিতি মানেই দর্শকদের মুখে হাসি। প্রয়াত হলেন জনপ্রিয় আমেরিকান চরিত্র অভিনেতা গেইলার্ড সার্টেইন। দীর্ঘ অভিনয় জীবনে হাস্যরসাত্মক চরিত্রে দর্শককে মাতিয়ে রাখা এই প্রতিভাবান অভিনেতার জীবনাবসান ঘটল ৭৮ বছর বয়সে, বৃহস্পতিবার, ওকলাহোমার তুলসা শহরের নিজ বাড়িতে। স্ত্রী ম্যারি জো সার্টেইন তাঁর মৃত্যু সংবাদ নিশ্চিত করেছেন দ্য হলিউড রিপোর্টার-এ। মৃত্যুর সময় পাশে ছিলেন পরিবারের সদস্যরাও।
গেইলার্ড সার্টেইন আমেরিকান টেলিভিশন এবং চলচ্চিত্র জগতে এক চিরস্মরণীয় নাম। জনপ্রিয় টেলিভিশন শো ‘হি হাও’-তে টানা প্রায় দুই দশক ধরে তাঁর হাস্যরসাত্মক চরিত্র এবং অভিনয় দর্শকদের হৃদয়ে স্থায়ী ছাপ ফেলেছে। শুধু ‘হি হাও’ নয়, ১৯৮০-র দশকে জিম ভার্নির সঙ্গে ‘আর্নেস্ট’ সিরিজের তিনটি সিনেমা, ‘দ্য বাডি হলি স্টোরি’, এবং ‘মিসিসিপি বার্নিং’-এ গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করে সমালোচক ও দর্শকমহলে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন তিনি। নাট্যচর্চার পাশাপাশি তাঁর ভঙ্গিমা, এক্সপ্রেশন এবং টাইমিং ছিল অতুলনীয়—যা তাঁকে ভিন্ন উচ্চতায় পৌঁছে দেয়।
অ্যালান রুডলফ পরিচালিত নয়টি ছবিতে সার্টেইন অভিনয় করেন অভিনেতায৷ রোডি (১৯৮০), এন্ডেঞ্জারড স্পিসিস (১৯৮২), চুজ মি (১৯৮৪), সংরাইটার (১৯৮৪), ট্রাবল ইন মাইন্ড (১৯৮৫), মেড ইন হেভেন (১৯৮৭), দ্য মডার্ন্স (১৯৮৮), লাভ অ্যাট লার্জ (১৯৯০) এবং ইকুইনক্স (১৯৯২)। তিনি দ্য জার্ক (১৯৭৯) এবং অল অফ মি (১৯৮৪) ছবিতে কার্ল রেইনারের ভূমিকায় , দ্য আউটসাইডার্স (১৯৮৩) ছবিতে ফ্রান্সিস ফোর্ড কপোলার ভূমিকায় , দ্য গ্রিফটার্স (১৯৯০) ছবিতে স্টিফেন ফ্রিয়ার্সের ভূমিকায়, ফ্রাইড গ্রিন টমেটোস (১৯৯১) ছবিতে জন অ্যাভনেটের ভূমিকায় এবং আলি (২০০১) ছবিতে মাইকেল মানের ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন ।
গেইলার্ডের জন্ম ও বেড়ে ওঠা তুলসা, ওকলাহোমাতেই। নিজের শহর এবং সংস্কৃতির প্রতি তিনি ছিলেন অত্যন্ত অনুরক্ত। সব সময় নিজেকে মাটির কাছাকাছি রেখেই কাজ করেছেন। তাই দর্শকদের সঙ্গে তাঁর সংযোগ ছিল অনেক গভীর। তাঁর সহকর্মী, বন্ধু ও ভক্তরা সামাজিক মাধ্যমে শোকবার্তা দিয়ে জানিয়েছেন, গেইলার্ড সার্টেইনের মত প্রতিভার অভাব কখনো পূরণ হয় না। তিনি শুধু একজন অভিনেতা ছিলেন না, ছিলেন মানুষের মন ছুঁয়ে যাওয়া এক শিল্পী। আনন্দ ছড়ানো ছিল যার স্বভাব, সেই মানুষটাই আজ সবাইকে কাঁদিয়ে চলে গেলেন। তবে রেখে গেলেন এমন কিছু চরিত্র, এমন কিছু মুহূর্ত, যা আগামী প্রজন্মের কাছেও অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।