সীতামঢ়ী, ৬ মে : যখন দেশ দ্রুত বৈশ্বিক চিন্তাভাবনা ও আধুনিক জীবনযাত্রার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, তখন এমন কোন শক্তি রয়েছে যা আমাদের শিকড়ের সঙ্গে সংযুক্ত রাখে? সেই শক্তি হলো – লোক সংস্কৃতি, যা প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে সমাজকে দিশা দিয়ে আসছে। এই লোক পরম্পরার সবচেয়ে উজ্জ্বল প্রতীক হলেন মা সীতা... যার ত্যাগ, ধৈর্য এবং মর্যাদা কেবল ধর্মীয় কাহিনীকেই জীবন্ত করে তুলেছিল না বরং ভারতীয় সমাজের আত্মাকেও রূপ দিয়েছে। তাঁর আদর্শ ত্রেতা যুগের মতো এখনও প্রাসঙ্গিক। ১০ মে সীতামঢ়ীতে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া সীতা মহোৎসব-২০২৫ লোকসংস্কৃতির নবজাগরণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ।
ভারতের একমাত্র বহুভাষিক সংবাদ সংস্থা, ভারতীয় ভাষার কণ্ঠস্বর, হিন্দুস্থান সমাচার, ১০ মে সীতা মহোৎসব-২০২৫-এর মাধ্যমে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত ভারতের বৈচিত্র্যকে একত্রিত করবে। শ্রী জানকী জন্মভূমি পুনৌরধাম সীতামঢ়ীর মিলনায়তনে 'লোক সংস্কৃতি ও লোকজীবনে মা সীতা' শীর্ষক সীতা মহোৎসব-২০২৫ অনুষ্ঠিত হবে। এই উৎসবের মূল উদ্দেশ্য হল মাতা সীতার জীবন এবং জনজীবনে তাঁর অবদানকে উৎসর্গ করা।
সীতা মহোৎসব এই বার্তা দেবে যে, আমরা যদি একটি শক্তিশালী, নীতিবান এবং ঐক্যবদ্ধ ভারত চাই, তাহলে আমাদের লোক সংস্কৃতিতে ফিরে যেতে হবে - যে সংস্কৃতির শিকড় মাতা সীতার জীবন দ্বারা সিক্ত। তিনি বলেন, লোকসংস্কৃতিতে মাতা সীতার স্থান অটুট এবং সীতা মহোৎসব লোকজীবনে তাঁর অবদান পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার একটি প্রয়াস। এই অনুষ্ঠানটি ভারতীয় সংস্কৃতির গভীর শিকড়কে সম্মান করার একটি নিখুঁত উদাহরণ হয়ে উঠবে এবং মাতা সীতার আদর্শের সঙ্গে সংযুক্ত হয়ে সমাজকে একটি নতুন দিশা দেবে।রাজ্যপাল-সহ ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক ব্যাক্তিবর্গ উৎসবে অংশগ্রহণ করবেন।বিহারের রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ খান প্রধান অতিথি হিসেবে সীতা মহোৎসবে অংশগ্রহণ করবেন। এই অনুষ্ঠানে তিনি মাতা সীতার জীবন এবং তাঁর অবদান সম্পর্কে নিজের মতামত ভাগ করে নেবেন। এছাড়াও পীঠধীশ্বর শ্রী জানকী জন্মভূমি মন্দির পুনৌরাধামের শ্রীমহন্ত কৌশল কিশোর দাস জি মহারাজ আশীর্বাদ করবেন। প্রধান বক্তা হিসেবে থাকবেন সিদ্ধপীঠ হনুমান নিবাস অযোধ্যা ধামের শ্রীমহন্ত আচার্য মিথিলেশানন্দিনীশরণ জি মহারাজ, বগহী ধাম সীতামঢ়ীর শ্রীমহন্ত ডক্টর শুকদেব দাস জি মহারাজ। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন শ্রী পঞ্চ দশনম জুনা আখড়ার অনন্ত শ্রী বিভূষিত মহামন্ডলেশ্বর শ্রী মা যোগেশ্বরী যতীজির মতো ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্বরা। উৎসবে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন উত্তর প্রদেশ সরকারের রাজ্য তথ্য কমিশনার পদুম নারায়ণ দ্বিবেদী এবং ভাগ্য বিধতা চ্যারিটেবল অ্যান্ড ট্রাস্ট (রেজি.)-এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাম সুরেশ চৌধুরী, নির্বাহী সভাপতি সন্তোষ সুরেশ চৌধুরী, পরিচালক ভাস্কর ঝা।
সাংস্কৃতিক সুরের একটি সন্ধ্যার আয়োজন করা হবে, উদয় এবং সুরেন্দ্র গাইবেন গান এই মহোৎসবে সাংস্কৃতিক সঙ্গীতের একটি সন্ধ্যারও আয়োজন করা হবে। বিহারের বিখ্যাত ধ্রুপদী সঙ্গীতশিল্পী পণ্ডিত উদয় কুমার মালিক এবং ভজনশিল্পী ডঃ সুরেন্দ্র কানৌজিয়া নিজেদের সঙ্গীতের মাধ্যমে এই অনুষ্ঠানটিকে আরও রঙিন করে তুলবেন। তাঁদের সুরেলা এবং ধ্রুপদী গান কেবল অনুষ্ঠানটিতে আধ্যাত্মিক অনুভূতি যোগ করবে না বরং এটি ভারতীয় ধ্রুপদী সঙ্গীতের প্রতি শ্রদ্ধাকে এক নতুন স্তরে নিয়ে যাবে। সাংস্কৃতিক মঞ্চে ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সুরে আশ্চর্যজনক উৎসাহ এবং শক্তি থাকবে। শাস্ত্রীয় সঙ্গীত এবং মাতা সীতার জীবনের সম্মিলিত প্রভাব অনুষ্ঠানের জাঁকজমককে আরও বাড়িয়ে তুলবে।