দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক:কূটনৈতিক বিতর্কের মাঝেই রাশিয়ার একটি তেলবাহী জাহাজকে ভিড়তে দিল না আদানি বন্দর। মঙ্গলবার ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য বৈঠকের সময় এই ঘটনাটি আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসে। জানা গেছে, প্রায় ১০ লক্ষ ব্যারেল অপরিশোধিত তেল নিয়ে আসা জাহাজটি আদানি বন্দরে প্রবেশ করতে না পেরে তার গন্তব্য পরিবর্তন করেছে।
জানা যাচ্ছে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আমেরিকা ও ব্রিটেনের কালো তালিকাভুক্ত জাহাজগুলিকে নিজেদের বন্দরে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে আদানিরা। ভারতে আদানিদের ১৪টি বন্দরে লাগু রয়েছে এই নিষেধাজ্ঞা। এই অবস্থায় গুজরাটে আদানিদের মুন্দ্রা বন্দরে প্রবেশের চেষ্টা করেছিল রুশ তৈলবাহী মালয়েশিয়ার নোবেল ওয়াকর নামের ওই জাহাজটি। তবে সেখানে প্রবেশের অনুমতি না মেলায় গতিপথ বদল করে সেটি। জাহাজ ট্র্যাকিং প্ল্যাটফর্ম LSEG এবং Kpler থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, নোবেল ওয়াকর বর্তমানে মুন্দ্রা বন্দরকে পাশ কাটিয়ে গুজরাটের ভাদিনা বন্দরের দিকে রওনা হয়েছে।
ভারতের মুন্দ্রা বন্দর দেশের অন্যতম প্রধান তৈল আমদানি কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। ইন্ডিয়ান ওয়েল কর্পোরেশন, HPCL মিত্তাল এনার্জি লিমিটেড (HMEL) নিয়মিতভাবে এই বন্দর থেকে তেল আমদানি করে। তবে গত সপ্তাহে আদানি গ্রুপের তরফে ঘোষণা করা হয়, দেশে তাদের দ্বারা পরিচালিত ১৪টি বন্দরে ভিড়তে পারবে না ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আমেরিকা ও ব্রিটেনের কালো তালিকাভুক্ত জাহাজগুলি। যার জেরেই নোবেল ওয়াকরকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি আদানিদের বন্দরে। তবে শুধু ওয়াকর নয়, আদানিদের কোপে পড়েছে স্পার্টান নামে আরেকটি নিষিদ্ধ সুয়েজম্যাক্স ট্যাঙ্কার। সোমবার মুন্দ্রা বন্দরের কাছেই নোঙর করা ছিল জাহাজটি। এতেও রয়েছে ১০ লক্ষ ব্যারেল রুশ তেল। নিষেধাজ্ঞার জেরে সেই তেল বন্দরে খালাস করা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে।
২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ভারত রাশিয়া থেকে তেল আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অসন্তোষের কারণ হয়েছে। যদিও ভারত ৫০ শতাংশ শুল্কের চাপ সত্ত্বেও রুশ তেল আমদানি বন্ধ করবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তবুও এই ঘটনায় কিছু ভিন্নতা দেখা যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই জাহাজটি মালয়েশিয়ার এবং এর ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, যার কারণেই আদানি বন্দর এটিকে ভিড়তে দেয়নি। তাই এই ঘটনাটিকে রাশিয়ার থেকে তেল আমদানি বন্ধ করার সঙ্গে সম্পর্কিত করা উচিত নয়। ভারত আগের মতোই রাশিয়া থেকে তেল কিনছে এবং জাহাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তেল আমদানিতে কোনো প্রভাব পড়েনি।