দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক:৬০ বছরের দীর্ঘ সেবা শেষে অবসরে যাচ্ছে দেশের অন্যতম শক্তিশালী যুদ্ধবিমান মিগ-২১। মুক্তিযুদ্ধ থেকে বালাকোট পর্যন্ত অসংখ্য অপারেশনের সাক্ষী এই বিমান শুক্রবার থেকে সরকারিভাবে কার্যকাল শেষ করেছে। মিগের বিদায়ের মুহূর্তে প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং আবেগঘন ও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিলেন। তিনি জানালেন, মিগ কেবল দেশের সামরিক শক্তির প্রতীক নয়, বরং এটি ভারত-রাশিয়ার সম্পর্কের গভীরতারও প্রমাণ।
ভারতীয় বায়ুসেনার কাছে ৯০০টি মিগ-২১ ছিল। যার মধ্যে ৬৬০টি ভারতে নির্মিত। দশকের পর দশক ধরে এই যুদ্ধবিমানগুলিই দেশরক্ষার কাজ করেছে। বিভিন্ন সময়ে সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে মোট ৮৭৪টি মিগ-২১ কিনেছে ভারত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে গুরুত্ব ভূমিকা ছিল এই মিগ ২১ যুদ্ধবিমানের। বালাকোটে আকাশপথে হামলা চালানোর ক্ষেত্রেও শামিল হয় মিগ ২১।
শেষের দিকে ‘উড়ন্ত কফিন’ নামে পরিচিত হয়ে ওঠা মিগ-২১ বিমানটি ৬০ বছরের দীর্ঘ সেবার পর অবসরে চলে গেল শুক্রবার। পরিসংখ্যান বলছে, এই দীর্ঘ সময়ের মধ্যে ভারতীয় বায়ুসেনার প্রায় ৪০০টি মিগ-২১ দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে, যেখানে প্রায় ২০০ পাইলটের প্রাণহানি ঘটেছে। এর বাইরে ৬০ জনেরও বেশি সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু ঘটেছে। অবসরের দিনে যুদ্ধবিমানটিকে সম্মান জানাতে জমজমাট এয়ার শো অনুষ্ঠিত হয়। বায়ুসেনার শীর্ষ কর্মকর্তা ছাড়াও মহাকাশচারী শুভাংশু শুক্লা উপস্থিত ছিলেন বিদায় সংবর্ধনায়, যা ছিল আবেগঘন ও স্মরণীয় মুহূর্ত।
মিগকে বিদায় জানানোর দিনে পুরনো স্মৃতি ফিরে দেখেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তাঁর কথায়, “যখনই আমরা কোনও ঐতিহাসিক মিশনে গিয়েছি, তখনই তেরঙ্গার গৌরব আরও বাড়িয়ে তুলেছে মিগ। দীর্ঘ ৬ দশকেরও বেশি সময় ধরে মিগের সঙ্গে জড়িয়ে ছিল সাহস, ত্যাগ এবং দেশের গর্ব। একটা যুদ্ধ বা একটা অপারেশন নয়, দীর্ঘদিন ধরে মিগ ইতিহাসের সাক্ষী থেকেছে। কেবল একটা মেশিন বা একটা যুদ্ধবিমান নয়, আসলে ভারত এবং রাশিয়ার গভীর বন্ধুত্বের প্রমাণ ছিল এই মিগ।” সাম্প্রতিক অতীতে আমেরিকার চোখরাঙানি উপেক্ষা করে রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা অনেকটাই বাড়িয়েছে ভারত। সেই প্রেক্ষিতে রাজনাথের এই মন্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।