দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: উড়িষ্যার অন্যতম ভ্রমণ নগরী সম্বলপুর। একাধারে জঙ্গল,বাঁধ অপরদিকে,জলাধার, মন্দির সব মিলিয়ে জম-জমাট বেড়ানোর জায়গা। শহর থেকে রিকশায় মিনিট কুড়ি সমলেশ্বরী মন্দির। নবম শতাব্দীতে উৎকলীয় শিল্পকলায় নির্মিত সুউচ্চ চারকোণা মন্দিরটি কারুমণ্ডিত। গর্ভমন্দিরে একটি বড় শিলাখণ্ডের উপরে রুপোর চোখমুখ বসানো বিগ্রহের অবস্থান। এই মন্দির থেকে একটু হাঁটলেই জগন্নাথ মন্দির। গর্ভগৃহে অবস্থান করছেন বলরাম আর সুভদ্রার বিগ্রহে। একই পথে পড়বে দেবী পাটনেশ্বরী মন্দির। গম্বুজাকৃতির বিশাল এই মন্দিরে দেবী কালিকার বিগ্রহ পাটনেশ্বরী নামে প্রসিদ্ধ। সবকিছুকে কেন্দ্র করে এক বেলাতেই ভ্রমণ ও তীর্থ - দুটোই সম্পূর্ণ হবে।
পাটনেশ্বরী থেকে রিকশায় তিন কিলোমিটার দূরত্বে বুধরাজার মন্দির। শতাধিক সিঁড়ি ভেঙে উঠলেই শিবলিঙ্গ বুধরাজা নামে খ্যাত। পাহাড়ি টিলা থেকে শহরটা দেখায় ছবির মতো। তবে এখানে সিটি বাস নেই। রিকশাই একমাত্র সম্বল সম্বলপুরে পৌঁছানোর। টুক করে দেখে নেওয়া যায় পাহাড়-জঙ্গলে তারের বেড়া দেওয়া ডিয়ার পার্কে হরিণ নীলগাই পাইথন, ভামবিড়াল আর নানা ধরনের সাপ আর খরগোশ। এই পর্যন্ত এক বেলায় ঘুরে বিকেলে বেরিয়ে দেখতে পারেন হুমা হেলানো শিব মন্দির। হুমা মোটরে শহর থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে। হুমা সুখ্যাত হেলানো শিব মন্দিরের জন্যে। উৎকলীয় শিল্পকলাধাঁচে নির্মিত মন্দিরটি এক চূড়াবিশিষ্ট। বিশাল মন্দিরটি ডান দিকে হেলে রয়েছে ৪৭ডিগ্রি। সারা ভারতে আর দ্বিতীয়টি নেই। ভারতীয় মন্দির স্থাপত্যে এমন মন্দির নজিরবিহীন। প্রাকৃতিক কোনও কারণে বা ভূমিকম্পে এ রকম হয়নি। এর নির্মাণশৈলীই এমনধারা। নির্মাণকাল ১২৫০ মতান্তরে ১৬৭০। মন্দিরের পিছনে সিঁড়ি নেমে গিয়েছে মহানদীতে। ভারী মজার নৌকাবিহারের ব্যবস্থা আছে ডিঙিনৌকায়।
পরের দিনের জন্য রইল সম্বলপুরের সেরা আকর্ষণ হীরাকুদ বাঁধ। মোটর ঘুরে ঘুরে উঠে আসে পাহাড়ের উপরে প্রায় সমতল। এখানে গান্ধিমিনার থেকে চারদিকে দেখা যায় বিস্ময়কর লেকের শোভা আর সুদীর্ঘ বাঁধ। অন্যপ্রান্তে নেহেরুমিনার। দূরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার। এতটাই লম্বা বিশ্বের দীর্ঘতম বাঁধ। এশিয়ার বৃহত্তম লেকটি ৭৪৬ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে। বাঁধ নির্মাণে যে পরিমাণ উপকরণ লেগেছিল তাতে নাকি কন্যাকুমারী থেকে কাশ্মীর, অমৃতসর থেকে ডিব্রুগড় পর্যন্ত রাস্তা হয়ে যেত অনায়াসে। সেটি চওড়ায় ৮মিটার। সবমিলিয়ে বলাই যায়, সম্বলপুর ভ্রমণ প্রেমীদের আদর্শ ঠিকানা।