দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ বিভিন্ন কাজ সম্পর্কে মানুষের মনে ভ্রান্ত ধারণা রয়েছে। অনেকে মনে করেন জমিতে চাষ করে কোনো লাভ নেই। তাই ঘুরিয়ে আবার বেছে নেন চাকরি কিংবা উপার্জনের জন্য পথ। অথচ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে প্রচলিত ফসলের পরিবর্তে ঔষধি উদ্ভিদ চাষ করা গেলে কোটি কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। দেশে এমন অনেক কৃষক আছেন যারা ঔষধি গাছ চাষ করে মোটা অঙ্কের অর্থ উপার্জন করছেন।
আজ আমরা এমন এক কৃষকের কথা বলবো যিনি অ্যালোভেরা চাষের জন্য সরকারী চাকরি ছেড়ে গ্রামে এসে চাষের কাজ শুরু করেছিলেন। কৃষক হরিশ ধনদেবের কথা হয়তো ইতিমধ্যে অনেকে শুনে থাকবেন। হরিশ ধনদেব রাজস্থানের বাসিন্দা। তিনি আগে কাজ করতেন সরকারি ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে। জয়সলমীর পৌর পরিষদে জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন হরিশ। কিন্তু চাকরি করতে ইচ্ছে করছিল না। তাই তিনি জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ারের চাকরি ছেড়ে গ্রামে এসে অ্যালোভেরা চাষ শুরু করেন। এটি তার জীবনকে একেবারে বদলে দিয়েছে।
অ্যালোভেরা বিক্রি করে আজ তিনি শুধু বড়লোক নম, একজন কোটিপতি। হরিশ ধনদেব বলেন, একদিন তিনি দিল্লিতে একটি কৃষি প্রদর্শনীতে গিয়েছিলেন। প্রদর্শনীতে যাওয়ার পর হরিশ ধনদেব কাজ নিয়ে প্রচন্ড ভাবে হতাশ হয়েছিলেন। এরপরেই কৃষিকাজের স্বপ্ন পূরণের জন্য তিনি চাকরি থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর জয়সলমীরে নিজের গ্রামে এসে ১২০ একর জমিতে অ্যালোভেরা চাষ শুরু করেন।
তবে রাজস্থানের বেশিরভাগ কৃষক বাজরা, ভুট্টা এবং গমের মতো ঐতিহ্যবাহী ফসল চাষ করে থাকেন। কিন্তু হরিশ ধনদেব ঔষধি ফসল চাষের সিদ্ধান্ত নেন। আজ তিনি অ্যালোভেরা চাষ করে শুধু কৃষকই নন, একজন উদ্যোক্তাও । বার্বি ডেনিস অ্যালোভেরা চাষ করে লাভে মুখ দেখছেন তিনি। হংকং, ব্রাজিল এবং আমেরিকায় এই জাতের চাহিদা খুব বেশি। বার্বি ডেনিস অ্যালোভেরা বিলাসবহুল প্রসাধনী পণ্যগুলিতে কাঁচামাল হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এই কারণেই ব্যবসায়ীরা তাদের জমিতে উৎপাদিত অ্যালোভেরা ফসল ম্যানুয়ালি কিনে থাকেন।
হরিশ জয়সলমীর জেলায় ন্যাচারাললো অ্যাগ্রো নামে নিজের সংস্থা খুলেছেন। এখন তার খামারে লক্ষ লক্ষ অ্যালোভেরা গাছ লাগানো হয়। ধনদেব সরাসরি পতঞ্জলিকে অ্যালোভেরা সরবরাহ করেন। এতে তার কোম্পানি অনেক লাভবান হচ্ছে। তার বার্ষিক টার্নওভার ২-৩ কোটি টাকা।