দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ রবিবার রাত ১০টা নাগাদ নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের লেডি ডক্টর্স হস্টেলের সামনে দেখা গেল কিছুজন বাজি ফাটাচ্ছেন, দেখে মনে হতে পারে এরা বহিরাগত কোনও ভাবে হাসপাতাল চত্বরে ঢুকে পড়ে বাজি ফাটাচ্ছেন। কিন্তু সামনে গিয়ে প্রশ্ন করতেই বোঝা গেল, তাঁরা কেউই বহিরাগত নন। বরং তাঁরা সকলেই জুনিয়র ডাক্তার! সেখানে চতুর্দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে বাজির টুকরো, এমনকি শেলও। ধোঁয়ায় চারদিক ভরে রয়েছে। আর ওই হস্টেলের দরজার সামনেই স্তূপাকৃত করে রাখা রয়েছে বাজির প্যাকেট।
হাসপাতালে বাজি ফাটানো বারণ, এ ব্যাপারে জানত চাওয়া হলে এক পড়ুয়া জানায় ‘‘আমরা তো আর শব্দবাজি ফাটাচ্ছি না।’’ কিন্তু কোনও ধরনের বাজিই যে হাসপাতাল চত্বরে ফাটানো যায় না, তা কি তাঁরা জানেন না? দলবদ্ধ ডাক্তারি পড়ুয়াদের সকলেই প্রায় ঘাড় নেড়ে ‘হ্যাঁ’ বললেন। তার মধ্যে এক জন শুধু বললেন, ‘‘দুঃখিত, আর কখনও হবে না।’’
তবে শুধু এন আর এস নয়। আর জি কর, এসএসকেএম, কলকাতা পুলিশ হাসপাতাল, বিধানচন্দ্র রায় শিশু হাসপাতাল-সহ একাধিক হাসপাতালের রবিবার রাতের চিত্রটা প্রায় একই রকম। সেখানে হাসপাতাল চত্বরে বাজি ফাটানোর মতো কোনও ঘটনা দেখা যায়নি বটে, তবে হাসপাতালের গা ঘেঁষে যে পরিমাণ শব্দবাজি ফাটতে শোনা গিয়েছে, সঙ্গে থাকা সাউন্ড ডেসিবেল মিটারে তার শব্দমাত্রা ৯৫ থেকে ১১৫ ডেসিবেলের মধ্যে ঘোরাফেরা করেছে। নিয়ম মতো, হাসপাতাল ও সংলগ্ন চত্বর ‘সাইলেন্স জ়োন’ হওয়ায় কোনও বাজি ফাটারই কথা নয়। তবে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের এক নিরাপত্তারক্ষী বললেন, ‘‘এটা প্রতি বছরের ঘটনা।’’ বি সি রায় শিশু হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে মনে হচ্ছিল, যেন কোথাও বাজির লড়াই চলছে। মুহুর্মুহু বাজির শব্দে চারদিক ফেটে যাচ্ছে। জরুরি বিভাগের সামনেই তখন শিশুদের কোলে নিয়ে বসে রয়েছেন মায়েরা। ওই হাসপাতালের এক পুলিশকর্মী জানালেন, হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় যে সব বহুতল থেকে বেশি বাজি ফাটে, সেগুলি চিহ্নিত করে সেখানে এ বছর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তার পরেও এই অবস্থা? ওই পুলিশকর্মীর উত্তর, ‘‘হাসপাতাল চত্বরে তো ফাটছে না। আর কী করতে পারি বলুন?’’