
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির বিরুদ্ধে দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের কাছে চিঠি দায়ের করলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তিনি নির্দিষ্ট তিন পুলিশ আধিকারিকের নাম উল্লেখ করে এবং তাঁদের বক্তৃতার ভিডিও সংযুক্ত করে এই অভিযোগটি জানিয়েছেন। চিঠিতে বিরোধী দলনেতার দাবি হলো, পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির সঙ্গে যুক্ত কোনো সদস্যকে যেন আগামী বিধানসভা নির্বাচনের সময় ভোট সংক্রান্ত কোনো দায়িত্বে নিয়োজিত না করা হয়।
সম্প্রতি পুলিশকর্মীদের ওই সংগঠনের আয়োজনে পূর্ব মেদিনীপুরের দিঘায় মহিলা পুলিশকর্মীদের একটি রাজ্য স্তরের সম্মেলন হয়েছে। সেই সম্মেলনে কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার পদমর্যাদার আধিকারিক তথা মুখ্যমন্ত্রীর ‘আস্থাভাজন’ হিসাবে পরিচিত শান্তনু সিংহ বিশ্বাস যে ভাষণ দিয়েছেন, শুভেন্দু মঙ্গলবার তার ভিডিয়ো সাংবাদিক বৈঠক ডেকে দেখিয়েছেন। বিজিতাশ্ব রাউত নামে এক ইন্সপেক্টর এবং রুহুল আমিন আলি শাহ নামে এক সাব-ইন্সপেক্টরের ভাষণের অংশবিশেষও তিনি দেখান। শুভেন্দু জানান, ওই ভিডিয়ো দেশের মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারকে পাঠানো হয়েছে। মঙ্গলবার সকালেই ইমেল করে চিঠি ও ভিডিয়ো পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। সাংবাদিক বৈঠকে উল্লেখ না করলেও চিঠিতে রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার সৌম্যদীপ ভট্টাচার্যের নামও।
শুভেন্দু দাবি করেছেন, পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটি কোনও ‘রাজনৈতিক সংগঠন’ নয়। সেই কারণেই তারা ‘রাজনৈতিক’ কথা বলতে পারে না। তাঁর কথায়, ‘‘সরকার লিখিত ভাবে এই সংগঠন তৈরি করে দিয়েছিল।’’ বিরোধী দলনেতার ব্যাখ্যা, যে হেতু পুলিশ কর্মীরা সরাসরি রাজনৈতিক সংগঠন করতে পারেন না, সে হেতু সরকারি উদ্যোগেই এই সংগঠন গড়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সংগঠনের মঞ্চ থেকে ভাষণ দিয়ে এখন পুলিশকর্তারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে টিকিয়ে রাখার লক্ষ্যে কাজ করার জন্য পুলিশকর্মীদের নির্দেশ দিচ্ছেন। বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচনী আচরণবিধি কার্যকর হয়ে যাবে বলে ধরে নিতে পারি। তখন থেকে শুরু করে ভোট সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ ওয়েলফেয়ার কমিটির সঙ্গে যুক্ত কেউ যাতে ভোটের কাজের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে না থাকে, আমরা তা কমিশনকে নিশ্চিত করতে বলেছি।’’ তাঁর বক্তব্য, কমিশন যাতে এখন থেকেই বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভেবে নিতে পারে এবং তার প্রস্তুতি নিতে পারে, সে কথা মাথায় রেখে আদর্শ আচরণবিধি কার্যকর হওয়ার তিন মাস আগেই তিনি কমিশনকে ওই বিষয়ে অবহিত করে রাখলেন। শুভেন্দুর কথায়, ‘’কেন্দ্রীয় বাহিনী সব কাজ পারবে না। কিছু কাজ পুলিশকেই করতে হয়। সেই কাজ অন্য রাজ্য থেকে পুলিশ এনে করাবে নাকি অন্য কোনও ব্যবস্থা করবে, তা নির্বাচন কমিশন এখন থেকে ভেবে নিক।’’
