রংপুর (বাংলাদেশ), ২৬ সেপ্টেম্বর : বাংলাদেশের রংপুর দাসপাড়ায় অবস্থিত মোসলেম উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান, সহকারী প্রধানশিক্ষক মতিউর রহমান এবং ধর্ম-শিক্ষক মৌলভি স্যারের পদত্যাগের দাবিতে ছাত্ৰীরা আন্দোলন সংগঠিত করে একটি লিখিত নোটিশ জারি করেছেন। বুধবার হিন্দু ছাত্রীদের প্রতিবাদী আন্দোলনের জেরে রংপুরের মোসলেম উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক সহ অন্য অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করে দশ দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে।
জারিকৃত নোটিশে সনাতনী শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো যথাক্রমে প্রধানশিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান, সহকারী প্রধানশিক্ষক মতিউর রহমান, ধর্ম-শিক্ষক মৌলভি স্যারের পদত্যাগ, অ্যাসেম্বলিতে কুরআন তেলাওয়াতের পাশাপাশি হিন্দুদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ গীতা পাঠ করাতে হবে, শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধর্ম নিয়ে বৈষম্য সৃষ্টিকারী সকল শিক্ষক-শিক্ষিকাকে অনতিবিলম্বে শাস্তির আওতায় আনতে হবে ও তাঁদেরকে পদত্যাগ করতে হবে, হিন্দু মেয়েদের স্কার্ফকে হিজাব হিসেবে ব্যবহার করতে বাধ্য না করা, ধর্মান্তরের কুপ্রচেষ্টাকারীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে, মোসলিম উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে দাসপাড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় নাম করতে হবে।
নোটিশে আন্দোলনের কারণ বলা হয়েছে। বলা হয়েছে, বিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে হিন্দুদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ গীতা পাঠ নিষিদ্ধ করা হয়েছে, হিন্দু মেয়েদের হিজাব পরতে বাধ্য করা হয়েছে। তারা যদি হিজাব না পরে তা-হলে তাদের ওপর অত্যাচার করা হয়। হিন্দু শিক্ষার্থীদের অন্য ধর্মের আয়াত মুখস্থ করার জন্য বাধ্য করে ধর্মান্তরের কুপ্রচেষ্টা করা হয়, প্রধানশিক্ষক অর্থের বিনিময়ে কর্মচারী নিয়োগ করেছেন। শিক্ষকরা হিন্দু শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধর্ম নিয়ে বৈষম্য সৃষ্টি করেন।
দাসপাড়ায় মোসলেম উদ্দিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, অ্যাসেম্বলিতে টানা ২০ মিনিট কুরআন তেলাওয়াত করা হয়। কিন্তু গীতা পাঠের জন্য সময় তাদের থাকে না। আমরা চাই না, এমন ধর্মান্ধ কোনও ব্যক্তি আমাদের বিদ্যালয়ের প্রধানের দায়িত্বে থাকুন। আমরা চাই তাঁর এই আচরণের জন্য তাঁকে অবিলম্বে শাস্তির আওতায় আনা হোক।
এদিকে আন্দোলনের পর স্কুল কর্তৃপক্ষ, সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের যৌথ সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, স্কুলের অ্যাসেম্বলিতে জাতীয় সংগীত, কোরআন তেলাওয়াত ও গীতাপাঠ বাধ্যতামূলক করা হবে। কোনও ধরনের বিভ্রান্তিমূলক কথা কোনও শিক্ষক বলবেন না এবং সকল ছাত্রী স্কুল ড্রেস পরে স্কুলে আসতে পারবেন।