West Bengal

6 months ago

Lok Sabha Election : ভাঙড়ের আদিবাসীপাড়ায় উত্তেজনাই নেই ভোট নিয়ে!

There is no excitement in the tribal neighborhood of Bhandar about the vote!
There is no excitement in the tribal neighborhood of Bhandar about the vote!

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ ভাঙাচোরা মাটির দাওয়া। মাথায় তালপাতার ছাউনি। তার নীচে বসে হাঁড়িয়া তৈরি করছেন ফুলেশ্বরী সর্দার। বললেন, 'স্বামী মারা যাওয়ার পর ছোট দুই সন্তানকে বড় করতে এই ব্যবসাই ভরসা। সরকারি প্রকল্পে বাড়ি, ভাতা কিছুই পাচ্ছি না। ভোট চাইতে এলে ঝেঁটিয়ে বিদায় করে দেব।'

ইটের দেওয়ালে টালির ছাউনি। ঝড়ে বেশ কয়েকটা টালি খুলে পড়ে গিয়েছে। বাড়ির কর্তা উৎপল সর্দার বললেন, 'কয়েকদিন আগে এলাকায় আলো এসেছে। কিন্তু রাস্তাঘাটা, পানীয় জল, যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় নেই বললেই চলে। কাকে আর ভওট দেব?' দেশজুড়ে লোকসভা ভোটের দামামা বেজেগেলেও ভোটের কোনও উত্তাপ নেই ভাঙড়ের আদিবাসীপাড়ায়।

কোনও রাজনৈতিক দলই এখনও সে ভাবে দেওয়াল লেখেনি বা পতাকা টাঙায়নি। ভাঙড়-২ ব্লকের বেওতা অঞ্চলের ঘাসখালি, কুলবেড়িয়ার বাসিন্দাদের অভিযোগ, নির্বাচন এলেই দেখা মেলে নেতাদের। হাত জোড় করে নেতারা গ্রামে আসেন, ভোট ভিক্ষা করেন, গালভরা প্রতিশ্রুতি দেন, তারপর উধাও হয়ে যান। তাই এ বার আর বুথেই যাবেন না বলে ঠিক করেছেন বেওতা, কুলবেড়িয়া, নতুনপাড়া, ঘাসখালির বাসিন্দাদের একটা বড় অংশ। ভোট দেওয়াতেই প্রবল অনীহা আদিবাসীদের।

কুলবেড়িয়া নতুনপাড়ায় বাস গৌতম সর্দার, লক্ষ্মী সর্দাররা। ভোটের নাম শুনেই তাঁরা বেশ বিরক্ত হলেন। খালের পাড়ে হাইটেনশন লাইনের নীচে গৌতমের ঝুপড়ি ঘর। তার সামনে সব্জিচাষ করতে করতে গৌতম বললেন, 'প্রতিদিন এখান থেকে সাইকেলে নিউটাউন, সল্টলেকে যাই রাজমিস্ত্রির কাজ করতে। এত বছরেও এখানকার একমাত্র রাস্তা পাকা হলো না, কোনও যোগাযোগ ব্যবস্থাই নেই।'

সর্দারপাড়ার খালপাড়ে বাড়ি কাশী সর্দারের। পেট চালাতে কাশী ও তাঁর নাবালক ছেলে জোগাড়ের কাজ করেন। সেই কাশীর ঝুপড়ি কালবৈশাখীর ঝড়ে উড়ে গিয়েছে। কাশীর স্ত্রী সোনামণি সরদার বললেন, 'একটা ঘরের জন্য পঞ্চায়েত, বিডিও অফিস সর্বত্র ছোটাছুটি করলাম। কিন্তু ঘর পেলাম না। তাই এ বার আমরা ভোট দিতে যাব না বলে ঠিক করেছি।'

বেওতা-২ এর আদিবাসী পাড়াটি ৩৬ নং বুথের অন্তর্গত। ওই বুথের নশো ভোটারের মধ্যে সাড়ে চারশো আদিবাসী ভোটার। আদিবাসীদের অভিযোগ, তাঁরা ভোটে নির্নায়ক শক্তি হলেও সরকারি শৌচালয়, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার ঘর, বাংলা আবাস যোজনার ঘর, বিশুদ্ধ পানীয় জল কিছুই জোটে না। বেওতা-২ পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ সাবির বলেন, 'আমরা আদিবাসীদের জন্য যথেষ্ট সহানভূতিশীল। আমার উদ্যোগে ওই এলাকায় কয়েকদিন আগে বিদ্যুৎ এসেছে। আগামী দিনে যা যা অসুবিধা আছে তা দেখে নেওয়া হবে।'

You might also like!