দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক :কার দায়, জেলা গোয়েন্দা বিভাগের নাকি সভাস্থলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশের? মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় ২০২২ সালের প্রাথমিকে টেট উত্তীর্ণ চাকরিপ্রার্থীরা প্ল্যাকার্ড হাতে ক্ষোভ প্রকাশ করায় সেই প্রশ্নই ফের সামনে এসেছে।
মঙ্গলবার দুপুরে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুলের মাঠে মুখ্যমন্ত্রী যখন বক্তৃতা দিচ্ছিলেন, হঠাৎই দর্শকাসনে গুঞ্জন শুরু হয় এবং সাময়িক বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। আয়েশা খাতুন, অনামিকা গড়াই, রেহেনা খাতুন–সহ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী প্ল্যাকার্ড তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। সেই দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করতে এগোন সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা। তখন বিরক্ত মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘আপনারা মিটিং নষ্ট করছেন কেন? এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আর আপনাদের ফিড দেব না, ভিতরে ঢুকতেও দেব না।’’
এর পরেও পরিস্থিতির বদল না–হওয়ায় মাইক হাতে পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে থাকেন মুখ্যমন্ত্রী। বন্ধ থাকে বক্তৃতা। মঞ্চ থেকে নেমে পরিস্থিতি সামাল দেন পুলিশ আধিকারিকরা। প্রশাসনিক স্তরে ওই চাকরিপ্রার্থীদের দাবি নিয়ে আলোচনার আশ্বাস দেওয়া হয়।
এর পরে মুখ্যমন্ত্রী মঞ্চে থাকা রাজ্য প্রশাসনের আধিকারিকদের বলেন, ‘পরের বার থেকে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের বসার জায়গার পিছনটা ঢেকে দেবে। যাতে ওদেরও কাজ করতে সুবিধা হয়। আর যাঁরা আসবেন তাঁদেরও কোনও অসুবিধা না হয়।’ এর পরে ফের নিজের বক্তব্যে ফেরেন মমতা।
চাকরিপ্রার্থীদের প্ল্যাকার্ডের কোনওটিতে লেখা ছিল ‘প্রাথমিকে নতুন নিয়োগে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাই’। কোনওটিতে লেখা, ‘দিদি প্রাথমিকে নিয়োগ সম্পর্কে বার্তা দিন’। চাকরিপ্রার্থীদের মধ্যে খণ্ডঘোষ থানার খেজুরহাটি গ্রামের বাসিন্দা আয়েশা খাতুন জানান, তিনিই প্রায় জনা ১৫ তরুণ-তরুণীকে নিয়ে এসেছিলেন। ভিতরে ঢুকেছিলেন ছ’জন। বাকিরা বাইরে ছিলেন প্ল্যাকার্ড হাতে।
আয়েশা বলেন, ‘দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে আমাদের। বাধ্য হয়েই মুখ্যমন্ত্রীর নজরে আনার জন্য এটা করেছি। সভায় ঢোকার সময়ে পুলিশ আমাদের ব্যাগ চেক করেছিল। আমরা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর দলের লোক বলে ঢুকে পড়েছি। জানি এটা ঠিক করিনি। কিন্তু উপায় ছিল না।’এ দিন প্ল্যাকার্ড হাতে এসেছিলেন বর্ধমানের বাজেপ্রতাপপুর এলাকার রেহানা খাতুন। তাঁর বক্তব্য, ‘২০২২ সালে টেট দিয়েছিলাম। তিন বছর কেটে গেলেও নিয়োগ হচ্ছে না। আমরা আন্দোলন করেছি। কিন্তু তাতেও কোনও কাজ হয়নি।’ এ দিন সভা শেষে বিক্ষুব্ধ আয়েশা, রেহেনা, অনামিকাদের সঙ্গে কথা বলেন জেলা পুলিশের পদস্থ আধিকারিকরা। সবার নাম–ঠিকানা নোট করেন তাঁরা।