দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: ডেটিং অ্যাপে ছবি দেখে সুন্দরী তরুণীদের পছন্দ করে ডেকে এনে তাঁদের সঙ্গে প্রেমালাপ ও ঘনিষ্ঠতা গড়ে তুলতে ভালোবাসেন ওই ব্যবসায়ী।কিন্তু অঙ্কিতা আপ্তে নামে ডেটিং অ্যাপের বান্ধবীটি যে ভালোবাসায় ডুবে যাওয়ার নাম করে তাঁকেই ডুবিয়ে ছাড়বে, তা ভাবতে পারেননি কখনও। তিনি যখন সুন্দরী অঙ্কিতার দেওয়া পানীয়তে মজে গিয়ে চোখে অন্ধকার দেখতে শুরু করেছেন, তখন ভাবতেও পারেননি যে, তাঁর শরীরে থাকা যাবতীয় সোনার অলঙ্কার লুঠ করে উধাও হয়ে যাবে সেই ‘প্রিয়া’। শেষ পর্যন্ত পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন পেশায় ব্যবসায়ী ওই ব্যক্তি। কিন্তু এই অঙ্কিতা আপ্তে আসলে কে, আদৌ তার নাম অঙ্কিতা কি না, সেই ব্যাপারে সন্দিহান পুলিশও। এই ব্যাপারে পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ তদন্ত শুরু করলেও ওই মহিলা আদৌ কলকাতার বাসিন্দা নয় বলেই ধারণা পুলিশ আধিকারিকদের।
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, দক্ষিণ কলকাতার কসবা এলাকার বাসিন্দা ওই প্রতারিত ব্যবসায়ীর অফিস রয়েছে পূর্ব যাদবপুরের নিতাইনগর এলাকায়। ব্যবসায়ী তাঁর কাজের ফাঁকে ডেটিং অ্যাপ ঘেঁটে পছন্দ করেন সুন্দরীদের। যাকে পছন্দ হয় সময় কাটানোর জন্য তাঁকে ডাকেন। অফিসের অ্যান্টি চেম্বারেই চলে সেই ডেটিং অ্যাপের বান্ধবীটির সঙ্গে সময় কাটানো ও ঘনিষ্ঠতা। সম্প্রতি সেই ডেটিং অ্যাপ দেখেই তাঁর পছন্দ হয় অঙ্কিতা আপ্তে নামে ওই সুন্দরী যুবতীকে। ব্যবসায়ী তাঁকে ডেকে পাঠানোর পর দুপুরে আসে সে। ঘনিষ্ঠতার আগে শুরু হয় মদ্যপান। নিজের হাতে ‘ডেটিং বন্ধু’টির দিকে খাবার এগিয়ে দেয় অঙ্কিতা। ব্যবসায়ী ‘বন্ধু’র ঠোঁটের সামনে তুলে ধরে পানীয়র গ্লাস। কিন্তু কয়েক ঢোক খাওয়ার পরই ঘুমে ঢুলে আসে চোখ। তিনি লুটিয়ে পড়েন ঘরের ভিতর। যখন নিজেকে খুঁজে পান, তখন ঘরে নেই অঙ্কিতা বা অন্য কেউ। বুঝতে পারেন, তাঁর গলা থেকে মোটা সোনার চেন, আঙুল থেকে চারটি সোনার আংটি উধাও। তদন্ত শুরু করার পর পূর্ব যাদবপুর থানার পুলিশ ব্যবসায়ীর অফিস ও তার আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ খতিয়ে দেখছে। যে ডেটিং অ্যাপে পরিচয়, সেটির মাধ্যমেও ওই অঙ্কিতাকে চিহ্নিত করার চেষ্টা হচ্ছে। এর আগে বালিগঞ্জ এলাকার হোটেলেও ডেটিং অ্যাপের বন্ধুকে ডেকে টাকা ও গয়না হাতানোর পিছনে মহিলা চক্রের সন্ধান মিলেছিল। অঙ্কিতা আপ্তে নামে ওই মহিলা একই চক্রের কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে কলকাতা-সহ সারা রাজ্যজুড়েই ফাঁদ পেতেছে জালিয়াতরা। বিভিন্নভাবে তারা টাকা হাতানোর উপায় তৈরি করেছে। এমনকী, সম্প্রতি ডেটিং অ্যাপের নাম করে টাকা হাতানোর একটি চক্রকে গ্রেপ্তার করেন লালবাজারের গোয়েন্দারা। তারা ডেটিং পরিষেবার নামে ব্ল্যাকমেল করে টাকা হাতায়। কিন্তু পুলিশের মতে, একই সঙ্গে ডেটিং অ্যাপের মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে অন্য ফাঁদও। তাতে পা দিচ্ছেন অনেকেই, যেমন সম্প্রতি জালে পড়েন অভিযোগকারী ব্যবসায়ী। পুলিশের মতে, প্রচুর ভুয়ো ডেটিং অ্যাপ খোলা হয়েছে। তাই পুলিশের পরামর্শ, বুঝেশুনেই পছন্দ করতে হবে ডেটিং অ্যাপগুলিকে।