দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ মৎস্যজীবীরা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞাকে অমান্য করে কাঁকড়া ধরতে বারবার সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে ঢুকে পড়ছেন। আর এতেই বারংবার বিপদের কবলে পড়ছেন তাঁরা। বাঘের আক্রমণে মৃত্যু হচ্ছে মৎস্যজীবীদের। সুন্দরবনের জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে ফের বাঘের হানায় মৃত্যু হল এক মৎস্যজীবীর। মৃত মৎস্যজীবীর নাম হরিপদ মণ্ডল। তিনি ঝড়খালির বাসিন্দা। কাঁকড়া ধরার সময় আচমকাই তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে বাঘ। এরফলে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৎস্যজীবীর অন্যান্য সঙ্গীরা কোনওভাবে সেখান থেকে পালিয়ে প্রাণ বাঁচিয়েছেন।
জানা গিয়েছে, আজ সোমবার সকালে ৪ সঙ্গীকে নিয়ে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়েছিলেন হরিপদ। এরপর জঙ্গলে ঢুকে খাড়ির জলে নামতেই ঘটে বিপত্তি। সেখানে যে বাঘ ঘাপটি মেরে বসেছিল তা কেউই বুঝে উঠতে পারেননি। এরপর আচমকা হরিপদর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে রয়্যাল বেঙ্গল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,বাঘের থাবা থেকে হরিপদকে বাঁচানোর কোনও উপায় ছিল না। ঘটনায় অন্যান্য মৎস্যজীবীরা কোনওভাবে সেখান থেকে পালিয়ে বাঁচেন। জীবিকার সন্ধানে গিয়ে মৎস্যজীবীকে যে এভাবে প্রাণ হারাতে হবে তা কেউই মেনে নিতে পারছেন না। ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মৎস্যজীবীর পরিবারের সদস্যরা। এই ধরনের ঘটনা যে ঘটবে তা ভাবতেই পারেনি মৎস্যজীবীর পরিবার ও সঙ্গীরা। স্থানীয় প্রশাসন জানাচ্ছে, মৎস্যজীবীদের গভীর জঙ্গলে যাওয়ার অনুমতি ছিল না।
উল্লেখ্য, চলতি মাসে এ নিয়ে সুন্দরবনে বাঘের হানায় মৃত্যু হল ৩ মৎস্যজীবীর। এর আগে গত ৬ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবনের জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হানায় মৃত্যু হয়েছিল এক মৎস্যজীবীর। এরপর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সুন্দরবনের কোর এলাকায় কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হারায় প্রাণ হারান আরও এক মৎজীবী। সেই ঘটনার ১০ দিনের মাথায় আবারও বাঘের হানায় প্রাণ গেল আর এক মৎস্যজীবীর। প্রসঙ্গত, কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বাঘের হানায় মৎস্যজীবীদের মৃত্যুর ঘটনা বারবার ঘটছে। তা নিয়ে উদ্বিগ্ন প্রশাসন। এ নিয়ে প্রশাসনের তরফে সতর্কতামূলক প্রচার চালানো হয়। বিশেষ করে মৎস্যজীবীরা যাতে জঙ্গলের গভীরে প্রবেশ না করেন তা নিয়ে প্রশাসনের তরফে প্রচার করা হয়ে থাকে। তারপরেও অর্থ উপার্জনের আশায় প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই জঙ্গলে কাঁকড়া ধরতে যেতে হয় মৎস্যজীবীদের। আর তাতেই ঘটছে বিপদ।