Travel

1 year ago

Travel:মধ্যপ্রদেশ - 'বুরহানপুর-হনুবন্তিয়া'- মুঘল যুগের ঐতিহ্য

Burhan pur
Burhan pur

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ  ছত্তিশগঢ় অতিক্রম করেই মনের মতো মধ্যপ্রদেশ। অসাধারণ প্রাকৃতিক ও ঐতিহ্যের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা নিরুপম ভ্রমণের জায়গা। অবস্থানগত দিক থেকে মধ্যপ্রদেশকে বলা হয় ভারতের হৃদপিন্ড। 

বুরহানপুর -

 মোঘল সম্রাট শাজাহানের সঙ্গে এই বুরহানপুরের ছিল নিবিড় সম্পর্ক। তাপ্তী নদীর পাড়ে বুরহানপুরে ভারত সম্রাজ্ঞী মমতাজ মহলের শেষ জীবন কেটেছে। সম্রাট শাহজাহানের খুব প্রিয় জায়গা ছিল এই বুরহানপুর। মমতাজ মহল এখানেই মারা যান। এখানেই তাঁকে সমাহিত করা হয়। তাঁর মৃত্যুর পর শাহজাহান এখানেই তাজমহল গড়তে চেয়েছিলেন। কিন্তু তা আগরায় গড়া হয় এবং মমতাজের মরদেহও সেখানে নিয়ে যাওয়া হয়। বুরহানপুরের প্রধান দ্রষ্টব্য তাপ্তী নদীর পাড়ে মিরন আদিল শাহ ফারুকির তৈরি সাততলা শাহি কেল্লা। এই কেল্লার অনেকটাই আজ ধ্বংস হয়ে গেলেও যতটুকু অটুট আছে তাই-বা কম কী! এর অন্যতম আকর্ষণ হামাম বা রয়্যাল বাথ, মমতাজের জন্য তৈরি। ইরানি স্থাপত্যে কাচ ও কারুকার্যময় রংবেরঙের টালি দিয়ে তৈরি হামাম। শাহি কেল্লায় এ ছাড়াও রয়েছে দেওয়ান-ই-খাস, দেওয়ান-ই-আম, আহুখানা (মমতাজের সমাধি প্রথমে যেখানে দেওয়া হয়েছিল) ইত্যাদি। আর আছে অনন্ত প্রসারিত প্রকৃতির জগৎ। 

কি কি দেখবেন ?

আসিরগড় দুর্গ: পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত, আসিরগড় দুর্গটি আশেপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্যের অত্যাশ্চর্য দৃশ্য দেখায়। এটি ১৫ শতকে নির্মিত হয়েছিল এবং মুঘল মারাঠাদের মধ্যে যুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল।

জামা মসজিদ: ১৭ শতকে সম্রাট শাহজাহান দ্বারা নির্মিত, জামে মসজিদ একটি দুর্দান্ত কাঠামো যা তার সর্বোত্তমভাবে মুঘল স্থাপত্যকে প্রদর্শন করে।

শাহী কিলা: শাহী কিলা হল ১৬ শতকের একটি দুর্গ যা ফারুকী রাজবংশের বাসস্থান হিসেবে কাজ করত। চিত্তাকর্ষক স্থাপত্য এবং ঐতিহাসিক গুরুত্বের কারণে এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটক আকর্ষণ।

অহল্যাবাই হোলকার ফোর্ট: এই দুর্গটি ১৮ শতকে রানী অহল্যাবাই হোলকর দ্বারা নির্মিত হয়েছিল এবং তার বাসস্থান হিসাবে পরিবেশিত হয়েছিল। এটি একটি সুন্দর কাঠামো যা শিল্প সংস্কৃতির প্রতি রানীর ভালোবাসাকে প্রতিফলিত করে।

দরগাহ--হাকিমি: দরগা--হাকিমি হল একটি মাজার যা দাউদি বোহরা সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক নেতা সৈয়দনা দাউদ বুরহানউদ্দিনকে উৎসর্গ করা হয়েছে। এটি একটি শান্তিপূর্ণ এবং নির্মল স্থান যা সারা বিশ্ব থেকে ভক্তদের আকর্ষণ করে।

এছাড়াও অবশ্যই আপনি দেখবেন মিরন আদিল শাহ-এর সমাধি, দরগা-ই–হাকিমি, শাহ নবাব খাঁয়ের মকবরা, তাপ্তীর কয়েকটি ঘাট, ৭ কিমি দূরে খুনি – কূপের পর কূপ ও ১০ শতকের শিবমন্দির। সবটা মিলিয়ে দিন দুয়েকের জন্য বেশ জমে উঠবে আপনার বেড়ানো। তৃতীয় দিন আপনি যাবেন হ হনুবন্তিয়া।

হনুবন্তিয়া : বুরহানপুর থেকে ১১০ কিমি দূরত্বে হনুবন্তিয়া সড়কপথে বা ট্রেনেও যেতে পারেন। ট্রেনে আসুন খান্ডোয়া। সেখান থেকে বাসে বা গাড়ি ভাড়া করে চলে আসুন হনুবন্তিয়া, ৫০ কিমি। ভোর ৫.২৫ থেকে ৮.২০ পর্যন্ত গোটা ছয়েক ট্রেন আছে বুরহানপুর থেকে খান্ডোয়া যাওয়ার, সময় লাগে দেড় থেকে দু’ ঘণ্টা। রাত্রিবাস হনুবন্তিয়াতেই করবেন। সাগরসদৃশ ইন্দিরা সাগর ড্যামের ধারে মধ্যপ্রদেশের সাম্প্রতিকতম ট্যুরিস্ট-গন্তব্য প্রকৃতিপ্রেমিকদের স্বর্গ হনুবন্তিয়া দ্বীপ। অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের নানা ব্যবস্থা। না চাইলে জলবিহার করুন লঞ্চে বা নৌকায়। দ্বীপের গাছগাছালির মাঝে ঘুরে বেড়ান। অলস দিন কাটান। 

যাওয়া - দেশের প্রায় সব প্রধান শহরের সঙ্গে বুরহানপুর ট্রেনপথে যুক্ত। হাওড়া, মুম্বই, দিল্লি এবং বেঙ্গালুরু থেকে সরাসরি ট্রেন আসে বুরহানপুর। মুম্বই মেল (ভায়া ইলাহাবাদ) হাওড়া রাত ৯.৫৫-য় ছেড়ে বুরহানপুর পৌঁছোয় পরের দিন রাত ২.০৪-এ। স্টেশনে ভোর পর্যন্ত অপেক্ষা করে বেরিয়ে পড়ুন। অন্য ভাবে হাওড়া-নাগপুর রেলপথের ভুসওয়াল দিয়েও যাওয়া যায়।  গীতাঞ্জলি এক্সপ্রেস হাওড়া ছাড়ে দুপুর ১.৪০-এ, ভুসওয়াল পৌঁছোয় পরের দিন ১.১৫ মিনিটে। ভুসওয়াল থেকে বুরহানপুর ট্রেনে ৪০ মিনিট থেকে সোয়া ঘণ্টা সময় লাগে। 

তাই চালুন পরিবার নিয়ে বেরিয়ে পড়ি মধ্যপ্রদেশের উদ্দেশ্যে।


You might also like!