দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ বন্যপ্রাণী সংরক্ষনের অংশ হিসেবেই এবার রাজস্থানের জয়পুরে প্রথম লেপার্ডদের জন্য একটি সংরক্ষিত অরণ্যকেন্দ্র গড়া হয়েছে। এই অনুপম জঙ্গলটি আসলে আরাবল্লী পর্বত বেষ্টিত বলেই খুবই সংরক্ষিত। মাত্র ৬ বছর আগে ২০১৭ সালে এই অরন্যকে সরকার লেপার্ড সংরক্ষিত পার্ক হিসাবে ঘোষণা করে।২০ বর্গকিমি বিস্তৃত এই বনভূমিতে প্রচুর প্রজাতির গাছ,প্রাণী ও পাখি আছে। এই জঙ্গলটি এখন লেপার্ডদের জন্যই বিখ্যাত।
সম্প্রতি বাঘ সুমারির মাধ্যমে জানা যায়,ওই জঙ্গলে বর্তমানে ৪০ টি চিতা ও অন্তত ৫টি চিতা-শাবক আছে। চিতা ছাড়াও হায়েনা,একাধিক প্রজাতির শিয়াল,বন-বিড়াল, সজারু,বুনো ইঁদুর,নীলগাই, চিতল হরিণ,সম্বর হরিণ ও বিভিন্ন প্রজাতির সাপ আছে।
এই বনভূমির ঠিক মাঝখানে পর্যটকদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে জয়পুর রাজপরিবারের তিনতলা শিকারি লজ। এখান থেকেই অপূর্ব সূর্যদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়। ২০১৭ সালে সংরক্ষিত বনভূমি হিসাবে ঘোষিত হলেও ২০১৬ সাল থেকেই এই জায়গা পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। এখানে পর্যাপ্ত চিতার বাস। তাই পর্যটকেরা সহজেই দেখতে পাবেন আপন মনে ঘুরে বেড়ানো চিতাকে। এই চিতা মানুষ ও জিপ গাড়িকে সহজ করে নিয়েছে। কখনো দেখা যায় গাড়ির বনেটে দিব্যি উঠে এসেছে এক বা একাধিক চিতা। রোমাঞ্চকর এডভেঞ্চারের জন্য এই বনভূমি এখন পর্যটকদের মন কেড়েছে।
ঝালানা প্রধানত একটি পর্নমোচি গাছের অরণ্য। এই পর্নমোচি বনে হেমন্ত ও শীতে বেশিরভাগ গাছের পাতা ঝরে যায়। তখন বহুদূর পর্যন্ত উন্মুক্ত থাকে চোখের সামনে। আবার বর্ষায় সবুজে ভরে ওঠে এই বনভূমি। এখানে বাবলা,খেজুর জাতীয় প্রচুর মরুভূমির গাছ দেখা যায়। এছাড়াও অন্যান্য বহু প্রজাতির গাছ এখানে আছে।
যেহেতু ঝালানা লেপার্ড রিজার্ভ ফরেস্ট মূলত লেপার্ড বা চিতা বাঘের আস্তানা,তাই চিতার খাদ্যের সরবরাহ অটুট থাকার জন্য এই বনভূমিতে প্রচুর পরিমানে অন্যান্য তৃণভোজী প্রাণী আছে। এই চিতা দিনের বেলায় অলস সময় যাপন করলেও রাতে শিকারের সন্ধানে বের হয়। ক্ষিপ্র গতিতে শিকার ধরে। এছাড়াও এই বনভূমিতে প্রচুর বিরল প্রজাতির পাখি আছে। বড়ো,ছোটো ও মাঝারি নানা আকারের পাখি এক গাছ থেকে আরেক গাছে ঘুরে বেড়ায়।
যেকোনো সময় এই রিজার্ভ ফরেস্টে ঘোরা যায়। অন্যান্য অনেক রিজার্ভ ফরেস্ট বর্ষায় বন্ধ থাকলেও ঝালানা রিজার্ভ ফরেস্ট খোলা থাকে। তবে নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত বন সাফারির আদর্শ সময়।
যাওয়া - ঝালানা রিজার্ভ ফরেস্ট পৌঁছানো এখন খুবই সহজ। বিমান,রেল ও সড়ক সমস্ত মাধ্যমেই সহজেই পৌঁছানো যায় এই রিজার্ভ ফরেস্টে। এখান থেকে জয়পুর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর মাত্র ৬ কিমি দূরে। জয়পুর রেল জংশন থেকে এই বনের দূরত্ব মাত্র ১২ কিমি, আর এই সংরক্ষিত বনের পাশ দিয়েই গেছে প্রধান সড়ক।
কয়েক দিনের জন্য সপরিবারে বা বন্ধুদের নিয়ে সহজেই ঘুরে আসা যায় জয়পুরের 'ঝালানা লেপার্ড সাফারি পার্ক'।