দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ বাংলা নদীমাতৃক দেশ। তাই বাংলার অন্যতম বেড়ানোর জায়গা নদীকে কেন্দ্র করে। তাই আজকের ভ্রমনসঙ্গীর নিবেদন গাদিয়াড়া ও গেঁওখালি। গাদিয়াড়া হাওড়া জেলায় আর গেঁওখালি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অন্তর্গত। এখানে তিনটি নদীর সঙ্গমস্থল। হুগলি (গঙ্গা), রূপনারায়ণ ও দামোদর। তিনটি নদী একত্রিত হয়ে হুগলি নাম নিয়ে সাগরের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। কলকাতার কাছেই হাওড়া জেলায় হুগলি নদীর তীরে বেড়ানোর মনোরম জায়গা গাদিয়াড়া।সড়কপথে কলকাতা থেকে দূরত্ব প্রায় ৮৭ কিলোমিটার। এখানে জলরাশি অফুরন্ত ও চওড়া। বর্ষায় নদীর সজীবতা অনেক বেড়ে যায়। এখানেই দামোদর মিশেছে হুগলিতে। সেই হুগলিতে নৌকা নিয়ে নদীভ্রমণে যেতে পারেন। সেখান থেকে পৌঁছে যাবেন আরেক সঙ্গমে – হুগলি ও রূপনারায়ণ নদীর মিলন স্থল। তিনটি নদী আলাদা আলাদা রংয়ের জলধারা নিয়ে পাশাপাশি বয়ে চলেছে। এই বিচিত্র রঙের খেলা আপনাকে মুগ্ধ করবে।
গাদিয়াড়াতে দেখা মেলে ক্লাইভের প্রাচীন দুর্গ ও লাইটহাউসের। বাঁধের ধারে পায়ে পায়ে ঘুরে বেড়াতে বেশ ভালোই লাগে। নদীর কিনারা দিয়ে হেঁটে গেলেও দারুণ প্রাপ্তি হবে। এক দিকে উদার প্রকৃতি। অন্য দিকে গ্রাম্য মানুষদের সহজ-সরল জীবনযাত্রা, তাঁদের মাটির বাড়ি, আড়ম্বরহীন যাপন – সবই মুগ্ধ করবে আপনাকে। আর ছবি তোলার জন্য পেয়ে যাবেন প্রচুর প্রচুর নয়নাভিরাম দৃশ্য। ইচ্ছে করলে নদীর ধারে পিকনিকও করতে পারেন। শীতকালে নদীর ওপর কুয়াশা জমে সৃষ্টি করে এক মায়াবী অনুভূতি। তারপর রোদ উঠলে জলে তা প্রতিফলিত হয়ে চিকচিক করে। এখানকার খেজুরের গুড় বিখ্যাত। হুগলি নদীর তীরে আরেকটি মনোরম পর্যটন কেন্দ্র গেঁওখালি। এছাড়া ঘুরে আসতে পারেন মহিষাদল রাজবাড়ি, পুরনো শহর তমলুক। আজ অবশ্য রাজবাড়ি ধ্বংসাবশেষ। তমলুকে অবস্থিত মা বর্গভীমার প্রাচীন মন্দির, যেতে পারেন সেখানেও।
যাওয়া - গাদিয়াড়া ও গেঁওখালি যাওয়ার অনেক ব্যবস্থা আছে। ট্রেনে গেলে হাওড়া স্টেশন থেকে লোকাল ট্রেন ধরে বাগনান যাবেন। সেখান থেকে বাসে শ্যামপুর হয়ে গাদিয়াড়া। এসপ্ল্যানেড বাস টার্মিনাস থেকে গাদিয়ারার বাস পাওয়া যায়। নিজের গাড়িতে যেতে চাইলে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে ধরে বাগনান চলে যান। তারপর বাঁ দিকে লেভেল ক্রসিং পেরিয়ে যাবেন শ্যামপুরের দিকে। শ্যামপুর পার করেই গাদিয়াড়া। ঘণ্টাখানেক সময় লাগবে পৌঁছতে।
থাকা - বন্ধু কিংবা পরিবার নিয়ে গাদিয়াড়ায় একদিন দু’দিন কাটিয়ে দিতেই পারেন। গাদিয়াড়ায় নদীর পাড়েই পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগমের নিজস্ব প্রপার্টি রয়েছে। নাম রূপমঞ্জরী ট্যুরিজম প্রপার্টি। যোগাযোগ করতে পারেন ৯৭৩২৫১০০৭৬ ফোন নম্বরে। এছাড়াও অনেক বেসরকারি হোটেল ও লজের ব্যবস্থা আছে। গেঁওখালিতে হলদিয়া ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ত্রিবেণী সঙ্গম ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্স ও সেচ দফতরের বাংলো আছে।