দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ শুনলে একটু অবাক তো লাগবেই। কারণ মানুষ ছাড়া বিশ্বের অন্য কোনো জীব তো ঘুষ নেয় না! তাহলে মৌমাছির কি হলো? আসলে কনকনে ঠান্ডার কারণে বাক্স থেকে বের হচ্ছে না মৌমাছির দল। ফলে মৌমাছির খাদ্য হিসাবে বাড়তি দাম দিয়ে চিনি কিনে বাক্সগুলিতে ভরতে গিয়ে মৌ-চাষীদের রীতিমতো দফা রফা হওয়ার জোগাড়! তাঁরা বলছেন, ‘এরকম শৈত্যপ্রবাহ একটানা চলতে থাকলে মধু চাষে ব্যাপক ঘাটতি দেখা দেবে৷' মধু চাষিদের বক্তব্য, কাঠের বাক্স থেকে মৌমাছির দল আশেপাশের সর্ষের ক্ষেত, আমগাছ সহ বিভিন্ন বাগান থেকে ফুলের রস সংগ্রহ করে মূলত বাক্সে ফিরে এসে মধুর চাক তৈরি করে। কিন্তু গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে প্রবল শৈত্যপ্রবাহের জেরে মৌমাছির দল কাঠের বাক্স ছেড়ে বের হচ্ছে না। বিকল্প খাদ্য হিসাবে বাক্সগুলিতে কেজি কেজি চিনি দিয়ে সমস্যা মিটাতে হচ্ছে। এরকম চলতে থাকলে মধু উৎপাদনের ক্ষেত্রে খরচ বেশি হবে, লাভের পরিমাণ কমে যাবে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ ও মালদায় এই সময় প্রচুর মধু সংগ্রহ করা হয়। কারণ এখন আমের বোল ধরেছে আবার সর্ষে খেতে প্রচুর হলুদ ফুল। সবচেয়ে বেশি সঙ্কটে পড়েছে মালদার মধু চাষীরা। পুরাতন মালদহ ব্লকের সাহাপুর, মুচিয়া, যাত্রাডাঙ্গা, মহিষবাথানি, মঙ্গলবাড়ি, ভাবুক সহ একাধিক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় বিপুল পরিমাণে মধু চাষ হয়ে থাকে। বিভিন্ন এলাকার আমবাগানগুলিতে মধুর উৎপাদনের ক্ষেত্রে পৃথক কাঠের বাক্স রেখে মৌমাছি পালন করেন চাষিরা। এরপর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই মৌমাছির দল বাক্সের মধ্যেই থাকা প্রতিটি চাকে মধু রস তৈরি করে। যা এক মাসের মধ্যেই উৎপাদন হয়ে যায়। পরবর্তীতে চাষিরা, সেই বাক্স খুলে সরাসরি মধুর চাকগুলি কেটে নেন। সেগুলি পরিশ্রুত করে বিভিন্ন কোম্পানিগুলিকে সরবরাহ করে থাকে। কিন্তু এবারের শৈত্যপ্রবাহ সঙ্কটে ফেলেছে মধু চাষে। তবে অচিরেই এই শৈত্য প্রবাহ বন্ধ হলে আবার মৌমাছির দল বেরিয়ে পড়বে।