দুর্গাপুর : 'পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ওবিসি আইন ত্রুটিপূর্ন। তাই আদালত বাতিল করেছে। এরা তৃণমূলের রাজনৈতিক পদক্ষেপ ছিল। সংবিধানে ধর্মের আধারে সংরক্ষণেরর ধারা নেই। সিপিএম শুরু করেছে মুসলিম ভোট নেওয়ার জন্য। তৃণমূল সেই গাছে বিষজল ঢেলে মহিরুহে পরিনত করেছে। নিজেদের ভোট ব্যাঙ্ক করেছে। রাজনৈতিক লাভ নিয়েছে। ভুয়ো সার্টিফিকেট নিয়ে চাকরি করলে, যেমন চাকরি বাতিল হয়। তেমনই ভুয়ো আইন করে ভোট নিয়েছে, তাদের সরকার ভেঙে দেওয়া উচিত।" বর্ধমানে সাংবাদিক সম্মেলনে এমনই বিস্ফোরক দাবী করলেন বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ।
প্রসঙ্গত, আদালতের রায়ে ২০১০ সাল থেকে রাজ্যে ওবিসি আইনকে ত্রুটিপূর্ন ঘোষনা করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। তাতে প্রায় ৫ লক্ষ ওবিসি সার্টিফিকেট বাতিল হয়েছে। ফলে আরও ভয়বহ সঙ্কটের মুখে গোটা রাজ্য। ওই সার্টিফিকেটে যাদের চাকরি হয়েছে, তাদের চাকরি যাবে। ফলে রাজ্যে বিভিন্ন সরকারি দফতরে কর্মী সঙ্কট দেখা দেবে। ইতিমধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষক সঙ্কটে ভুগছে। যার মাশুল বহু স্কুল বন্ধ হয়েছে। একাদশ শ্রেনীতে ভর্তি বন্ধ হয়েছে বহু স্কুলে। ফলে গোটা রাজ্য জুড়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। শুক্রবার বর্ধমানে দলীয় কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মলন করেন বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ। এদিন রাজ্য সরকারের একের পর এক কর্মকান্ডকে তুলোধনা করেন তিনি। সম্প্রতি ওবিসি আইন বাতিল প্রসঙ্গে তিনি বলেন," মুসলিম ভোট নেওয়ার জন্য ২০১০ সালে সিপিএম শুরু করেছিল। সেটাকে তৃণমূল নিজেদের ভোট ব্যাঙ্কের স্বার্থে মহিরুহে পরিনত করেছে। প্রতি ব্লকে একজন করে স্পেশাল অফিসার রেখেছিল। সেখানে মুসলিমদের জাতিগত শংসাপত্র ইস্যু হত। ওই সার্টিফিকেট নিয়ে ওবিসি সার্টিফিকেট পেয়েছে। মুসলিমদের ১০৮ টা জাতি বের করেছে তৃণমূল সরকার। যদি মুসলিম সমাজে এরকম কোন জাতি নেই। ৭১ জাতিকে ওবিসি আওতায় আনা হয়েছে। যার মধ্যে মুসলিম সমাজে ৬৪ জাতি জায়গা পেয়েছে। আর হিন্দু সমাজের মাত্র ৪ টি জাতি ওবিসি আওতায়। এসসি, এসটি জাল শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। সন্দেশখালির সুকুমার মাহাতো জাল এসটি সার্টিফিকেট দিয়ে তৃণমূলের বিধায়ক হয়ে গেছে।" তিনি আরও বলেন," কুর্মী সমাজের অধিকার ছিনিয়ে মুসলমানদের দেওয়া হয়েছে। তার ফলে হিন্দুদের মধ্যে লড়াই বাঁধিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লুটছে তৃণমূল। হিন্দু সমাজের ওবিসিদের বি ক্লাস আর মুসলিম সমাজের ওবিসি দের এ- ক্লাস করা হয়েছে। তাতে হিন্দুদের মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করেছে তৃণমূল সরকার।"
তিনি আরও বলেন," সিঙ্গুর মামলায় রাজ্যের পক্ষে রায় হওয়ায় আদালত ভাল ছিল। এখন সব মামলায় আদালতে ধাক্কা খাচ্ছে, তাই তিনি সুপ্রিম কোর্টের রায় মানবেন না। ওনার সব অপকর্মের বিরোধিতা হচ্ছে, লোকসভা মানবেন না। সিএএ মানবেন না। এটা বিচ্ছন্নতাবাদি মানসিকতা। তিনি দেশ বিরোধীেদের উস্কানি দিচ্ছেন। তাদের সুরে সুর মেলাচ্ছেন। এরকমটা স্বাধিনতার আগে হয়েছে, তাই দেশ ভাগ হয়েছিল। তাই এখনও মমতা ব্যানার্জী সেটা করছেন। এটা দেশের পক্ষে ভয়ঙ্কর। দেশ ভাগের চক্রান্ত করছেন তিনি।" দিলীপ ঘোষ আরও বলেন,"পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ওবিসি আইন ত্রুটিপূর্ন। তাই আদালত বাতিল করেছে। এরা তৃণমূলের রাজনৈতিক পদক্ষেপ ছিল। সংবিধানে ধর্মের আধারে সংরক্ষনের ধারা নেই। সিপিএম শুরু করেছে মুসলিম ভোট নেওয়ার জন্য। তৃণমূল সেই গাছে বিষজল ঢেলে মহিরুহে পরিনত করেছে। নিজেদের ভোট ব্যাঙ্ক করেছে। রাজনৈতিক লাভ নিয়েছে। রাজ্য কে ১০ বছর পিছিয়ে দিয়েছেন। ভুয়ো সার্টিফিকেট নিয়ে চাকরি করলে, যেমন চাকরি বাতিল হয়। তেমনই ভুয়ো আইন করে ভোট নিয়েছে, তাদের সরকার ভেঙে দেওয়া উচিত।"