দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ বসন্তকালে হঠাৎ করেই সক্রিয় হয়ে ওঠে কিছু ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া। আর এইসব জীবাণুর কারসাজিতেই চোখের নীচে উপস্থিত একাধিক সাইনাসে প্রদাহ হয়। তারপর ফুটে ওঠে তীব্র মাথা ব্যথা, জ্বর-সর্দির মতো উপসর্গ। আর এই সমস্যারই পোশাকি নাম সাইনুটাইটিস।
তবে শুধু ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া নয়, এর পাশাপাশি অ্যালার্জিজনিত কারণেও এই সময়ে সাইনুসাইটিসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ে। বিশেষত, ছোটদের মধ্যেই এই রোগের প্রকোপ বেশি। তাই সব অভিভাবকদেরই এই রোগ নিয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
এবার প্রশ্ন হল, সব সাবধানতা গ্রহণ করার পরও যদি ছোট্ট সোনা এই রোগের ফাঁদে পড়ে, সেক্ষেত্রে কী ভাবে এই সমস্যার মোকাবিলা করতে হবে? এই প্রশ্নের উত্তরে বলি, কয়েকটি ঘরোয়া টোটকার গুণেই কিন্তু এই সমস্যাকে অনায়াসে বাগে আনতে পারবেন। তাই ঝটপট এমনই কিছু হোম রেমেডিজ সম্পর্কে জেনে নিন।
১. গরম জলে স্নান
এই সময় সন্তানকে ঠান্ডা জলে স্নান করানোর ভুল করবেন না। এই ভুলের ফাঁদে পা দিলে যে সমস্যা আরও বাড়বে। তার পরিবর্তে সন্তানকে নিয়মিত ঈষদুষ্ণ জলে স্নান করান। এই কাজটা করলেই তার সাইনাসের প্রদাহ প্রশমিত হবে। এমনকী কমবে মাথা ব্যথা। সেই সঙ্গে বুকে কফ বসে থাকলেও তা বেরিয়ে আসার সুযোগ পাবে। তাই সন্তানকে দ্রুত সুস্থ করে তুলতে চাইলে এই নিয়মটা মেনে চলতে ভুলবেন না যেন!
২. ভেপার নিলেই হবে কেল্লাফতে
একটি পাত্রে জল ফুটিয়ে নিন। তারপর সন্তানের মাথার উপর দিয়ে কাপড় জড়িয়ে দিয়ে তাকে নাক-মুখ দিয়ে গরম জলের ভাপ গ্রহণ করতে বলুন। এই কাজটা করলেই তার সাইনাসের প্রদাহ কমবে। এমনকী তার বন্ধ নাকও খুলে যাবে। সেই সঙ্গে কমে যাবে দমকা কাশি। তাই এবার থেকে ছোট্ট সোনা এই বিপদের ফাঁদে পড়লেই তাকে দিনে অন্তত ২ থেকে ৩ বার ভেপ নেওয়ার পরামর্শ দিন। তাতেই উপকার পাবেন হাতেনাতে।
৩. আদার জুড়ি মেলা ভার
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, মহৌষধি আদার অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি গুণ রয়েছে। আর এই কারণে আদা খেলেই কমে সাইনাসের প্রকোপ। তাই সন্তান এই সমস্যার খপ্পরে পড়লেই তাকে কয়েক টুকরো আদা কুঁচি চিবিয়ে খেয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিন। আর সন্তান এই ভেষজ চিবিয়ে না খেতে চাইলে, তাকে সমপরিমাণ আদা একগ্লাস জল দিয়ে টুক করে গিলে নিতে বলুন। ব্যস, এই কাজটা করলেই দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে সন্তান।
৪. সেরার সেরা দাওয়াই হলুদ
সেই প্রাচীন যুগ থেকেই একাধিক রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে হলুদ। কারণ এতে রয়েছে কারকিউমিন নামক একটি উপাদান যা কিনা প্রদাহ প্রশমিত করার কাজে সিদ্ধহস্ত। এমনকী এই উপাদানের ব্য়াকটেরিয়ানাশক ক্ষমতাও রয়েছে। আর সেই কারণেই ছোটরা সাইনাসের সমস্যায় পড়লে তাকে কিছুটা পরিমাণে কাঁচা হলুদ খাওয়ানোর পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
৫. পর্যাপ্ত জলপান করাতে হবে
ছোট্ট সোনা পর্যাপ্ত পরিমাণে জলপান না করলে সাইনাসে কফ জমে যেতে পারে। তাই বাচ্চাদের প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে জল খাওয়াতে হবে। এই নিয়মটা মেনে চললেই তার সাইনাসে জমে থাকা মিউকাস নরম হয়ে শরীরের বাইরে বেরিয়ে আসবে। সেই সুবাদে কমে যাবে তার ব্যথা-বেদনা।
তবে সন্তানের মাথা ব্যথা খুব বাড়লে আর এইসব ঘরোয়া টোটকার উপর ভরসা রাখা যাবে না। বরং তার বদলে ঝটপট চিকিসকের পরামর্শ নিন।