দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ লুচি এবং পরোটার মধ্যে অনেক দিনের বিবাদ। তাই কারও পছন্দ লুচি তো কারও পছন্দ পরোটা। কিন্তু প্রশ্ন হল, এই দুই খাবারের মধ্যে কোনটা বেশি উপকারী? কোনটা খেলে সুস্থ থাকার পথ প্রশস্থ হবে? সেই বিষয়ে একদম অকপট জবাব দিলেন কলকাতার বিশিষ্ট পুষ্টিবিদ। আসুন তাঁর মতামত জেনে নেওয়া যাক। তারপরই না হয় এই দুইয়ের মধ্যে কোনও একটিকে পাতে জায়গা করে দেবেন।
লুচি-পরোটা দুইই ক্ষতিকর
লুচি এবং পরোটার মতো দুই তেল সমৃদ্ধ খাবার রোজ খেলে যে ওজন বাড়বে, তা তো বলাই বাহুল্য। এমনকী এইসব খাবারের কারসাজিতে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রাও বাড়তে পারে। ফলে বিপদে পড়তে পারে হার্ট। শুধু তাই নয়, এইসব খাবার তৈরির মূল উপকরণ ময়দার সৌজন্যে রক্তে সুগারের মাত্রা হতে পারে ঊর্ধ্বমুখী। এমনকী এইসব খাবারে ন্যূনতম ফাইবার না থাকার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য সহ একাধিক পেটের সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা থাকে। তাই চেষ্টা করুন এইসব মুখোরোচক খাবার এড়িয়ে চলার।
বাইরের লুচি, পরোটা একদম নয়
আমাদের মধ্যে অনেকেই রাস্তার ধারের দোকান থেকে লুচি, পরোটা কিনে খান। আর এই ভুলটা করেন বলেই তাঁদের পিছু নেয় একাধিক বিপদ। কারণ এইসব খাবার তৈরির সময় দোকানে পোড়া তেল ব্যবহার করা হয়। আর এইসব তেল হল ট্রান্সফ্যাটের ভাণ্ডার। আর এই উপাদান হার্ট, ব্রেন, পেট সহ দেহের একাধিক অঙ্গের ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখে। শুধু তাই নয়, এই তেলের কারসাজিতে শরীরে সিঁধ কাটতে পারে ক্যানসার। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে বাইরের লুচি-পরোটা এড়িয়ে যান।
লুচি না পরোটা, কোনটা বেশি উপকারী?
এই প্রশ্নের উত্তরে শ্রাবণী মুখোপাধ্যায় জানালেন, লুচির তুলনায় পরোটা খাওয়া কিছুটা হলেও উপকারী। কারণ লুচি যেখানে ছাকা তেলে ভাজতে হয়, সেখানে পরোটা সামান্য তেলেও ভেজে ফেলা সম্ভব। তাই সুস্থ থাকতে চাইলে লুচির পরিবর্তে মাঝেমধ্যে পরোটা খেতেই পারেন। এই নিয়মটা মেনে চললে খুব একটা বড়সড় বিপদের ফাঁদে পড়তে হবে না।
স্টাফড পরোটা খান
পরোটা খেয়ে দেহে পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে চাইলে তাতে ছাতু, ডাল, সবজি, চিকেনের কিমা পুরে দিতে পারেন। আর তারপর অল্প তেলে সেকা সেকা করে ভেজে নিয়ে মুখে পুরে দিন। এই নিয়মটা মেনে চললে যেমন শরীরে পুষ্টির ঘাটতি মিটে যাবে, ঠিক তেমনই আর রোগবিরেতের ফাঁদে পড়ে কষ্ট পেতে হবে না।
রোজ খাওয়া যায়?
বাড়িতে বানানো স্টাফড পরোটা একদিন অন্তর খেতেই পারেন। তাতে খুব একটা সমস্যার কিছু নেই। তবে বয়স ৩৫ পেরিয়ে গেলে সপ্তাহে এক-আধদিনের বেশি স্টাফড পরোটা খাবেন না। নইলে বিপদে বাড়তে পারে।
এদিকে ডায়াবিটিস, কোলেস্টেরল বা হাই প্রেশার থাকলে মাসে দুই-তিনবার পরোটা খাওয়া যায়। এর বেশি খেলেই কিন্তু রোগের প্রকোপ বাড়বে। তাই সুস্থ থাকতে এই নিয়ম মেনে চলুন।
পরিশেষে বলি, স্টাফড পরোটা নিয়ে যতই মাতামাতি করা হোক না কেন, রুটির কিন্তু কোনও বিকল্প নেই। তাই হেসেখেলে জীবন কাটাতে চাইলে প্রতিদিনের পাতে রুটি রাখা চাই-ই চাই। এই কাজটা করলেই নিয়ন্ত্রণে থাকবে সুগার, প্রেশার, কোলেস্টেরল। এমনকী বশে থাকবে ওজনও।