দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ বাতাসে শিউলির গন্ধ। হাতে মাত্র আর কয়েকদিন। তারপরেই উমা ফিরছেন বাড়িতে। নানা প্রান্তে তাঁকে ঘিরে চলছে প্রস্তুতি পর্ব। পটুয়া পাড়া থেকে জামাকাপড়ের দোকান, সব দিকেই উৎসবমুখর পরিবেশ। এই সময় মনটা কেবলই চায় একটু পুজোর গল্প শুনতে।
আজ এমন এক পুজোর কথা বলা হবে যে পুজোর বয়স প্রায় ৫০০ বছর অতিক্রম করে গেছে। এই পুজো দেখতে হলে আপনাকে পৌঁছতে হবে উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জ ব্লকের উদগ্রামে। সেখানে ৫০০ বছরের বেশি সময় ধরে দুর্গা মন্দিরে পুজিতা দেবী দশভুজা।
কিন্তু কিভাবে সূচনা ঘটল এই পুজোর? তা জানতে হলে আপনাকে চোখ রাখতে হবে সুদুর অতীতে। অবিভক্ত দিনাজপুরের রাধিকাপুর। সেখানকার জমিদার জগদীশচন্দ্র রায় বাহাদুর সূচনা করলেন এই পুজোর। শোনা যায় এক সময় নাকি কামানের তোপের মাধ্যমে শুভ সূচনা হত এই পুজোর। তারপর কালের নিয়মে বাংলা বিভক্ত হলে কেউ কেউ চলে যান ওপার বাংলায়। তারপর এই পুজোর উৎসাহতেও কিছুটা ভাটা পড়ে। বন্ধ হয়ে যায় এই নিয়ম। তবে এখন গ্রামের মানুষজনই এই পুজোর ব্যাবস্থা করে থাকে।
কামান দাগার রীতি বিলুপ্ত হয়ে গেলেও এই পুজোয় রয়েছে বেশ কিছু নিয়ম। জন্মাষ্টমীর দিন গ্রামের এই দুর্গা মন্দিরের প্রতিমাকে বিসর্জন দেওয়ার চল রয়েছে। পরে আবার সেই কাঠামোকেই তুলে মাটির প্রলেপ দিয়ে শুরু হয় প্রতিমা তৈরির কাজ।
৫০০ বছরের এই পুরনো পুজোতে সবচেয়ে আকর্ষণীয় একটি রীতি হল মুখোশ নাচ ও চণ্ডীপাঠ। গ্রামবাসীদেরকে অশুভ শক্তির হাত থেকে বাঁচাতেই শুরু হয়েছিল এই প্রথা। তবে প্রথা মেনে মুখোশ নাচ ও চণ্ডীপাঠের চল এখনও বিলুপ্ত হয়নি। গ্রামের মানুষের কাছে অত্যন্ত জাগ্রত এই দুর্গা মন্দির। গ্রামের কোনো একটি মেয়ের বিয়ে কিংবা বাড়িতে নববধূর আগমন ঘটলে এই মন্দিরে প্রণাম করার চল রয়েছে। এই মন্দিরের কিছু জমি রয়েছে সেখানে চাষবাস করলে যা উপার্জন হয়, তা এই মন্দিরের রক্ষণাবেক্ষণ ও দুর্গা পুজোর খরচ।