Festival and celebrations

11 months ago

Durga Puja 2023 : নদিয়ার শতাব্দীপ্রাচীন ‘বুড়িমা’র পুজোর সূনা হয় আকবরের আমলে

Bori maar Durga Puja (Symbolic Picture)
Bori maar Durga Puja (Symbolic Picture)

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ দিল্লির মসনদে তখন মুঘল সম্রাট আকবরের রাজত্বকাল চলছে, ঠিক সেই সময়ই বাংলায় চলছে বারোভুঁইয়ার রাজ। বাংলার ইতিহাসে বারোভুঁইয়ার যে একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। বাংলার বারোভুঁইয়ার অন্যতম ছিলেন প্রতাপাদিত্য দেওয়ান। তাঁর বাড়িতে মানত করে পুজোর সূচনা করেছিলেন প্রতাপাদিত্য দেওয়ান।এই পুজোর সূচনা হয় মুঘল সম্রাট আকবরের আমলে।বর্তমানে এলাকায় ‘বুড়িমা’ নামে খ্যাত নদিয়ার এই শতাব্দী প্রাচীন  দুর্গাপুজো।

কথিত আছে, কয়েক শতকের পুরনো পুজো। সেই সময় দিল্লির মসনদে সম্রাট আকবর। সাম্রাজ্য বিস্তারের জন্য তাঁর সেনারা দিকে-দিকে ছুটে বেড়াচ্ছে। তাঁদের হুঙ্কারে বশ্যতা স্বীকার করে নিচ্ছেন ছোট ছোট রাজ্যের অনেক রাজারাই। কিন্তু সেই দাপটের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ালেন বারোভুঁইয়াদের অন্যতম যশোরের (‌অধুনা বাংলাদেশের )‌ রাজা প্রতাপাদিত্য। এই খবর শুনে চটে লাল দিল্লির বাদশাহ। সঙ্গে সঙ্গে তলব করেন সেনাপতি মান সিংকে। আদেশ দেন, যে ভাবেই হোক প্রতাপাদিত্যকে ধরতে হবে, জীবিত হোক বা মৃত। গুপ্তচর মারফত খবর পেয়ে চিন্তায় পড়লেন প্রতাপাদিত্য, যুদ্ধ শুরু হলে তাঁর নাবালক পুত্রের দায়িত্ব কে নেবে!

রাজার দুশ্চিন্তা কথা জানতে পেরে দেওয়ান দুর্গারাম চৌধুরী রাজার ছেলের দায়িত্ব নেওয়ার কথা জানান। এর মধ্যেই মান সিং বিশাল বাহিনী নিয়ে যশোর আক্রমণ করেন। সেই সময় দুর্গারাম রাজার ছেলেকে নিয়ে লুকিয়ে পালিয়ে আসেন অধুনা পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার থানারপাড়া থানার ধোড়াদহ গ্রামে। চারিদিকে জল আর ঘন জঙ্গলের মধ্যে নাবালক রাজপুত্রকে নিয়ে লুকিয়ে থাকতেন। যুদ্ধ শেষ হয়েছে শুনে, দেওয়ান রাজাকে খবর দেন তাঁর ছেলে ভালো আছে। ছেলেকে রক্ষা করার জন্য প্রতাপাদিত্য খুশি হয়ে দুর্গারামকে পাঁচটি মহল দান করেন।

পাঁচ মহলের একটির বর্তমান নাম ধোড়াদহ। জঙ্গলে আত্মগোপন করার সময় দেবী দুর্গার কাছে মানত করেছিলেন, রাজার সন্তানকে রক্ষা করে নিরাপদে যেন রাজার কাছে পৌঁছে দিতে পারেন। তাঁর করা মানত অনুযায়ী, ঘন জঙ্গল পরিষ্কার করে খড়ের চালা ঘরে দুর্গাপুজো শুরু করেন। পরে ১৭৫৩ সালে পাকা দালান করে সেখানে জাঁকজমক করে দুর্গাপুজো শুরু হয়। রীতি মেনে সেই পুজো আজও চলে আসছে।

দুর্গারাম চৌধুরীর ১৪তম বংশধর রবীন্দ্রনাথ চৌধুরী বলেন, “আমরা বাপ ঠাকুরদাদার কাছে থেকে শুনেছি, তৎকালীন পর্দাশীন যুগে চিকের আড়ালে বসে বাড়ির মেয়েরা দুর্গামন্দিরের পুজো দেখত। মহিষ ও শতাধিক ছাগ বলি হত, এখনো নিয়মরক্ষায় ছাগ‌ বলি হলেও মহিষ বলি বন্ধ হয়েছে অনেক আগেই। এক সময় সাবেকি বাংলাদেশি ঘরানার একচালায় প্রতিমার পুজো হত।মায়ের গায়ে থাকত অসংখ্য সোনার গয়না।১০০ ঢাক সহযোগে কামান দেগে শুরু হত সন্ধিপুজো।

You might also like!