দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ দক্ষিন থেকে উত্তর ,কলকাতার যেদিকেই চোখ যায় কেবল হাই রাইজ , মাল্টিপকেক্স , রেঁস্তোরা আর নয়তো শপিং মল, ক্রমেই ক্ষীন থেকে ক্ষীনতর হচ্ছে সবুজে মোড়া খেলার মাঠ , বাড়ির রোয়াক। পরিস্তিতি আমন যে স্থান অপ্রতুলতার জেরে বেগ পেতে হচ্ছে উত্তর কলকাতার প্রায় ১০০ বছর পুরানো এক পুজো কমিটিকে। কারন হাই রাইজ। যদিও তা নিয়ে বিস্তর আলাপ বিলাপ প্রলাপ চলেছে। শেষটায় পুজো কমিটির পক্ষ থেকে যে পদক্ষেপ নেওয়া হল তা সত্যিই দৃষ্টান্তমূলক।
পুজো কমিটি ঠিক করেছে, ঝগড়াঝাঁটিতে তারা যাবে না, বরং একেবারে বাস্তব ও জ্বলন্ত এই সমস্যাকেই পুজোর থিম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। থিমের বার্তা, প্রোমোটিং দরকার, কিন্তু পুজো, ঐতিহ্য, সংস্কৃতিও প্রয়োজন। উমার ঘরে ফেরার জায়গা এই কংক্রিটের শহরে থাকবে তো?
উত্তর কলকাতার গলিময় পথে ১১৪ তম বর্ষে পা রেখেছে বৃন্দাবন মল্লিক ফার্স্ট লেনের বৃন্দাবন মাতৃ মন্দিরের পুজো। রাস্তার উপরেই প্যান্ডেল হয়, পাশে একটি গ্যারাজের অংশ ব্যবহার করেও বহুদিন এখানে পুজো হতো। গতবারও হয়েছিল। কিন্তু এবার সেই গ্যারাজ ভেঙেই উঠছে আবাসন। ফলে জায়গা গিয়েছে কমে। পুজো কমিটির দাবি, গত বছরও যেখানে ২৭০০ স্কোয়ার ফুট জায়গা নিয়ে পুজো করা গিয়েছিল, প্রোমোটিংয়ের চাপে এ বার তা কমে হয়েছে ১১০০ স্কোয়ার ফুট।
শিল্পী ইন্দ্রজিৎ রায়ের ভাবনায় এই পুজো মন্ডপ সেজে উঠছে বালি-সিমেন্টের বস্তায়। এছাড়া টিএমটি বার ব্যবহার করেও নানা ইনস্টেলশন থাকবে। পুজোর জায়গায় যে বাড়িটি উঠছে, দর্শকরা তাকেও থিমের মধ্যে দেখতে পাবেন। প্রথমে ঠিক হয়েছিল, অন্য কোনও থিম ভাবা হবে। সেই মতো খানিকটা দূর পর্যন্ত কাজও এগিয়ে যায়। কিন্তু তারপর যখন প্রোমোটিংয়ের এই সমস্যা মাথা তুলে দাঁড়ায়, তখন পুজো কমিটির সদস্যরা এই পরিস্থিতিকেই সর্ব সমক্ষে তুলে ধরার সিদ্ধান্ত নেন।
প্রসঙ্গত, এই গ্যারাজ নিয়ে পুজো কমিটির সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরেই প্রোমোটিং সংস্থা কথাবার্তা চালাচ্ছে। কয়েক বছর আগে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও পুজোর শর্ত মানার জন্য একটি চুক্তি করে দু’পক্ষ। কিন্তু দু’পক্ষেরই অভিযোগ, কেউই চুক্তিমতো কাজ করছে না।অন্যদিকে প্রোমোটিং সংস্থার দাবি চুক্তিমাফিক যা যা শর্ত তাঁদের ছিল তা যথাযথ ভাবে পালন করা হচ্ছে। কিন্তু পুজো কমিটির নিত্য-নতুন দাবি মানা সম্ভব নয়।