Festival and celebrations

14 hours ago

Durga Puja 2025:ফটো তোলার ছাড়, সঙ্গে এসি ব্যবস্থা! শহরের এই পুজোয় মিলছে ৩০০ টাকার ভিআইপি পাস

city durga puja ticket price
city durga puja ticket price

 

দুরন্তবার্তা ডিজিটাল ডেস্ক : বাঙালির প্রাণের উৎসব'—দুর্গাপুজো, আজ ইউনেস্কোর হেরিটেজ তালিকাভুক্ত। সাবেকি ধাঁচের প্রতিমাতেও মিশে গিয়েছে থিমের ছোঁয়া, আর বিসর্জন এখন ‘কার্নিভাল’-এ রূপান্তরিত। কালের নিয়মে বদলেছে অনেক কিছু—আলোর রোশনাই, উচ্চ প্রযুক্তির প্যান্ডেল, কর্পোরেটের ছোঁয়া, আর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি তোলার প্রতিযোগিতা।

তবু কিছু জিনিস এখনও ঠিক আগের মতো। রাতভর লাইন, ঠাকুর দেখার উত্তেজনা, ঢাকের তালে গা ভাসানো—সবই আগের মতোই রয়ে গিয়েছে। কিন্তু এবার যেন একটু ভিন্ন সুর।

প্রতি বছর যেমন VIP পাস জোগাড় করতে হুড়োহুড়ি পড়ে, ঠিক তেমনই এবার নতুন চমক – কিছু জনপ্রিয় পুজোয় দর্শনের জন্য কাটতে হচ্ছে টিকিট! একটি প্যান্ডেল দেখতে গুনতে হচ্ছে ১০০ থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত।

কলকাতার পুজো মানেই জনস্রোত, কিন্তু সেই ভিড় সামলাতে কিংবা বাড়তি পরিষেবা দিতে এমন ‘পেইড ভিজিট’-এর পথ নিচ্ছে কিছু পুজো উদ্যোক্তা। তবে এই নতুন নিয়মে খুশি নন অনেকেই। প্রশ্ন উঠছে—এই পুজো কি তাহলে শুধু পয়সাওয়ালাদের?

বর্তমানে মহালয়ার আগেই উদ্বোধন হয়ে যায় একাধিক মণ্ডপ। সাধারণ মানুষের জন্য খুলে দেওয়া হয় প্যান্ডেল। ফাঁকায় ফাঁকায় ঠাকুর দেখার জন্য কেউ কেউ ওই দিনগুলোয় বেরিয়েও পড়েন। এবার ওই সময় ঠাকুর দেখতে গেলে লাগবে টিকিট। কলকাতার তিনটি মণ্ডপে এই ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বালিগঞ্জ কালচারাল, দমদম পার্ক ভারত চক্র ও কেন্দুয়া শান্তি সঙ্ঘ- এই তিনটি পুজো মণ্ডপে মহালয়ার আগে ঠাকুর দেখতে গেলে কাটতে হবে টিকিট। কখন ঠাকুর দেখা যাবে, সেই সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। তিনটি পুজোরই শিল্পী সুশান্ত শিবানী পাল। কেউ কেউ বলছেন, শিল্প প্রদর্শনে টিকিট কাটাই যেতে পারে। আবার কেউ কেউ বলেন, এতে বাঙালির সাবেকিয়ানার আবেগ ধাক্কা খাবে। লাইনে দাঁড়িয়ে, ভিড় টপকে ঠাকুর দেখাতেই আনন্দ বলে জানাচ্ছেন অনেকে।

বছর কয়েক আগে বাংলার দুর্গা পুজো পায় ইউনেসকোর হেরিটেজ স্বীকৃতি। তারপর থেকে দেশ-বিদেশের মানুষের আকর্ষণ বেড়েছে। কার্নিভালেও বিশেষ প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। বালিগঞ্জ কালচারালের উদ্যোক্তা অঞ্জন উকিল বলেন, “বিদেশ থেকে অনেকে এখন বাংলার দুর্গা পূজা দেখতে আসছেন। অনেক বয়স্ক মানুষও আসেন। তাঁদের পক্ষে ভিড় ঠেলে প্রবেশ করা সম্ভব নয়। ভিড়ের মধ্যে শিল্পটা উপভোগ করার সুযোগ হয় না। ছবি তোলার সুযোগও পান না মানুষ। এই ব্যবস্থায় সেই সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে।”



অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, বিদেশেও কোনও ফেস্টিভ্যালে প্রবেশ করতে গেলে টিকিট কাটার ব্যবস্থা থাকে, তাহলে বাংলার দুর্গা পুজোয় নয় কেন! শিল্পী সুশান্ত শিবানী পাল আশ্বস্ত করে বলছেন, বাংলার পুজো সর্বজনীনই থাকছে। মহালয়ার পর সবাই এমনিই ঠাকুর দেখতে পারবেন। কিন্তু দেবীপক্ষের আগে শিল্পটা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেই এই ব্যবস্থা। শিল্পী বলেন, “হেরিটেজ স্বীকৃতি পাওয়ার পর অনেক মানুষ বাংলার এই পুজো দেখতে চাইছে। দেশের অনেক শিল্পমনস্ক মানুষও দেখতে চাইছেন। তাই এমন ব্যবস্থা।”


আগামী ২১ সেপ্টেম্বর মহালয়া। তার আগে অর্থাৎ ১৯, ২০ ও ২১ সেপ্টেম্বর টিকিট কেটে এই তিনটি পুজো মণ্ডপে প্রবেশ করতে হবে। টিকিট কাটা যাবে অনলাইনে। টিকিট কেটে সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৩টে পর্যন্ত ঠাকুর দেখা যাবে। ১ জনের টিকিট ১০০ টাকা, ২ জনের টিকিট ১৫০ টাকা, ৩ জনের টিকিট ২০০ টাকা ও ৪ জনের টিকিট ৩০০ টাকা।


এই ব্যবস্থার বিরোধী মতও রয়েছে। শহরের আর এক পুজোর উদ্যোক্তা সজল ঘোষ বলেন, “পুজোর বারোয়ারি এতে এসেন্স নষ্ট হয়ে যাবে।” একটা বিভেদ চলে আসবে বলেও মনে করছেন তিনি।



You might also like!