
দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: সপ্তাহের প্রথম দিন হলেও নন্দন-রবীন্দ্রসদন চত্বরে উৎসবের উচ্ছ্বাসে কোনও ভাটা পড়েনি। ৩১তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে সোমবারেও ভিড় জমিয়েছিলেন সিনেপ্রেমীরা। তবে উৎসবের এই জাঁকজমকের মাঝেই ঘটল এক অনভিপ্রেত ঘটনা—ধরা পড়ল ৩৫৭টি ভুয়ো কার্ড। এই ঘটনার পর নন্দনের অধিকর্তা শর্মিষ্ঠা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং ফেস্টিভ্যালের কো-অর্ডিনেটর প্রদীপকুমার সরকার সাংবাদিক বৈঠক করেন।
শর্মিষ্ঠা জানান, রোজ প্রচুর মানুষ আসছেন সিনেমা দেখতে, তাঁদের ইচ্ছাপূরণ করতে। তাঁদের উৎসাহ চোখে পড়ার মতো। এর মধ্যেই অনেক মানুষ জাল কার্ড নিয়ে ঢুকে পড়ছেন। যেখানে ‘ফ্রি পাস’ দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে সেখানে কেন আবার কার্ড জাল হচ্ছে? এই বিষয়ে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন। পুলিশকেও এই বিষয়ে জানানো হয়েছে। তাঁরা খতিয়ে দেখবেন এই বিষয়টা। ফেস্টিভ্যাল কর্তৃপক্ষের আবেদন, অবৈধ কার্ডের সঙ্গে যুক্ত হবেন না। মানুষের নিরাপত্তার কথা ভেবেই তাঁদের এই অনুরোধ। বাজেয়াপ্ত করা কার্ডের মধ্যে ভুয়ো প্রেস কার্ড, গেস্ট কার্ডও রয়েছে।
সোমবার দুপুরে কয়েকটি ছবির সাংবাদিক সম্মেলন হয়। তার মধ্যে রয়েছে সঞ্জয় ঘোষদস্তিদারের ‘যোজনগন্ধা : আ টারবিউলেন্ট ভয়েস’। বিকেলে রাজা চন্দ তাঁর ‘হালুম’ ছবির অভিনেতা সত্যম ভট্টাচার্য, সুদীপ্তা চক্রবর্তী, সায়ন ঘোষ ও পারিজাত চৌধুরিকে নিয়ে বক্তব্য রাখেন। ছবিটি রয়েছে বেঙ্গলি প্যানোরামা বিভাগে। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়ের ‘বাঘু মান্নার বরাত’ গল্প নিয়ে এই ছবি। তাঁর সঙ্গে সংলাপ লিখেছেন ভাস্কর চৌধুরি। রাজার কথায়, প্রান্তিক মানুষের ভালোবাসার গল্প নিয়ে এই ছবি। পারিজাতকে এর আগে ‘ইন্দুবালা ভাতের হোটেল’- সিরিজে দেখা গিয়েছে। তাঁর শিকড় শ্রীরামপুরে। এই শহরকেই তিনি ধন্যবাদ দিলেন এই ছবিতে টিপিক্যাল গ্রামের মেয়ে ‘ময়না’র চরিত্রে অভিনয়ের জন্য। সুদীপ্তা রয়েছেন ছবির ‘লীলাময়ী’র চরিত্রে। তিনি জানালেন, কাজটি নিয়ে খুবই উত্তেজিত। এই গল্প নিয়ে এর আগে জনপ্রিয় নাটকও হয়েছে। সায়ন রয়েছে রিকশা চালকের ভূমিকায়। পিয়ানও রয়েছেন, তবে এদিন তিনি উপস্থিত ছিলেন না। এ ছাড়াও ছিল নানা অনুষ্ঠান। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) এবং সিনেমার ভবিষ্যৎ নিয়ে একটি আলোচনা চক্র। শিশিরমঞ্চে এই আলোচনায় অংশ নিলেন বেদব্রত পাইন, রবিরঞ্জন মৈত্র, পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়, সানি জোসেফ ও অশোক বিশ্বনাথন। সঞ্চালনায় ছিলেন বিক্রমজিৎ রায়।
প্রসঙ্গত, সন্ধ্যায় একতারা মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘সিনে আড্ডা: গানে গানে সিনেমা’ শীর্ষক পর্ব, যার এদিনের বিষয় ছিল ‘বাংলা ও হিন্দি সিনেমায় ব্যবহৃত একই সুরের গান’। এই আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন বাবুল সুপ্রিয়, চন্দ্রিকা ভট্টাচার্য, বিবেক কুমার এবং রূপঙ্কর বাগচী। সঞ্চালনায় ছিলেন অম্বরীশ ভট্টাচার্য। দর্শকাসনে বসে ছিলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, অভিনেত্রী-বিধায়ক জুন মালিয়া এবং অভিনেত্রী গার্গী রায়চৌধুরী। গানের আসর শুরু হতেই দর্শকদের উৎসাহ চরমে পৌঁছায়। এদিন একতারা মঞ্চে উঠে নিজেই গান পরিবেশন করেন ইন্দ্রনীল সেন পাশাপাশি রূপঙ্কর বাগচীর সঙ্গেও গলা মেলান। তাঁদের সুরেলা পরিবেশনায় মুহূর্তে উচ্ছ্বাসে ভরে ওঠে গোটা প্রাঙ্গণ।
