পটনা, ১১ ফেব্রুয়ারি : মঙ্গলবার ভোরে একদল উন্মত্ত যাত্রী পটনা স্টেশনে পূর্ণকুম্ভগামী একটি ট্রেনের দরজার কাচ ভেঙে ভিতরে ঢোকে। ওই কামরার দরজা বন্ধ করে প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষমান যাত্রীদের উঠতে না দিয়ে ভিতর থেকে ভিডিও তোলার অভিযোগে এক যুবককে বেধড়ক গণপ্রহার করে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কামরায় প্রবল উত্তেজনা দেখা দেয়। দক্ষযজ্ঞের সময়ে কোনও পুলিশ ও চেকারের হদিশ মেলেনি।
সোমবার রাতে হাওড়া স্টেশন থেকে প্রয়াগরাজগামী ১২৩৩৩ বিভূতি এক্সপ্রেস ছাড়ে নির্ধারিত সময়ে, ৭টা ৫৫ মিনিটে। ট্রেনের বিভিন্ন কামরায় নির্ধারিত আসনের চেয়ে অনেক বেশি যাত্রী ছিল। এসি কামরাগুলোতেও গোড়াতেই ঢুকে পড়েন অবাঞ্ছিত বেশ কিছু যাত্রী। টিটিই তাঁদের কয়েকজনকে নামিয়ে দেন। পরে টিটিই ও রেলপুলিশ নেমে যান। দরজা ভিতর থেকে বন্ধ করে রাখা সত্ত্বেও বিভিন্ন স্টেশনে কামরায় যাত্রী ওঠা-নামার সময়ে প্রচুর অবাঞ্ছিত যাত্রী বিভিন্ন কামরায় উঠে পড়েন। প্রতিটি কামরার ভিতরের যাতায়তের পথ প্রায় রুদ্ধ হয়ে যায়।
ট্রেন ভোরে পটনা স্টেশনে আসে নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুঘন্টা বাদে। ওই সময় এসি থ্রি টায়ার বি১ কামরার দরজা মুহূর্তের জন্য খোলা হয়েছিল। প্রচুর স্থানীয় যাত্রী হইহই করে ওই কামরায় ওঠার চেষ্টা করলে ভিতর থেকে এক যুবক দরজা আটকে দেন। তাতে ওঠার চেষ্টা করা এক বালিকার হাত দরজায় আটকে যায়। বাচ্চাটি চিৎকার করে ওঠে। অভিযোগ, ওই যুবক দরজা না খুলে ভিতর থেকে বাইরের যাত্রীদের ভিডিও করতে থাকেন। কামরায় উঠতে বাধা পেয়ে প্লাটফর্ম থেকে ওঠার চেষ্টা করা যাত্রীরা উন্মত্ত হয়ে ওঠে। কাচ ভেঙে বাইরে থেকেই হ্যান্ডেল ঘুরিয়ে দরজা খুলে স্রোতের মত ভিতরে ঢোকে।
ওই পরিস্থিতি দেখে যুবকটি প্রাণভয়ে কামরার মাঝামাঝি ছয় আসনের ব্লকে ঢুকে লুকিয়ে পড়ার চেষ্টা করেন। ইতিমধ্যে আহত বাচ্চাটির বাবা-মা ও তাদের সঙ্গী যাত্রীরা অশ্রাব্য গালি দিতে দিতে ভিডিও করা যুবকটিকে খুঁজে বার করে বেধরক মারে। যুবকটিও আর্তচিৎকার করতে থাকে। কামরার কিছু যাত্রী মারমুখীদের আটকানোর চেষ্টা করেও সহজে সফল হয়নি। ইতিমধ্যে কামরার এক যাত্রী আহত মেয়েটিকে ওষুধ দেয়। অন্য যাত্রীরা সহানুভূতি জানায়। বাচ্চাটির মা তারস্বরে গালাগালি করতে থাকে। আধ ঘন্টার ওপর চলে এই পরিস্থিতি।