দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: ধনতেরস মানেই শুধু কেনাকাটা নয়, তার পেছনে লুকিয়ে রয়েছে এক গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় তাৎপর্য। ‘ধন’ অর্থ সম্পদ, আর ‘তেরস’ এসেছে ত্রয়োদশী তিথি থেকে—এই তিথিতেই পালিত হয় ধনতেরস বা ধনত্রয়োদশী। শাস্ত্রমতে, এই দিনেই দেবতা ও অসুরেরা অমৃতের সন্ধানে সমুদ্র মন্থন করেন, আর সেই মন্থন থেকেই উঠে আসেন ধনসম্পদের দেবী লক্ষ্মী এবং চিকিৎসাবিদ্যার দেবতা ধন্বন্তরি, যাঁর হাতে ছিল অমৃতভাণ্ড। এই তিথিকেই ধরা হয় দেবী লক্ষ্মী এবং ধন্বন্তরির আবির্ভাবদিন হিসেবে। তাই ধনতেরসের দিন শুদ্ধ মনে মূল্যবান ধাতু কেনা, অর্থাৎ সোনা-রুপো বা ধাতব সামগ্রী কেনার রীতি প্রচলিত—যাতে সৌভাগ্য ও সমৃদ্ধি ঘরে প্রবেশ করে।
ধনতেরসের তিথিতে কী কী জিনিস কেনা শুভ—তা নিয়ে নানা রকম প্রচলিত বিশ্বাস, কিছু সত্যি, কিছু মিথ্যা, আবার কিছু যৌক্তিক ও কিছুটা অযৌক্তিক কথাও প্রচলিত আছে। শাস্ত্র মতে, সোনা কেনা সবসময়ই শুভ বলে ধরা হয়, কারণ এটি শুধু মূল্যবান ধাতু নয়, বৃহস্পতি গ্রহের সঙ্গেও এর সংযোগ রয়েছে। সোনার পাশাপাশি রুপো ও প্লাটিনামের মতো অন্যান্য মূল্যবান ধাতুও ধনতেরসে কেনা যেতে পারে। তবে সোনার বর্তমান মূল্য অনেকের নাগালের বাইরে, প্লাটিনামও ব্যয়বহুল, এমনকি রুপোর দামও এখন বেশ চড়া।এই কারণে অনেকেই বিকল্প হিসাবে তামা, পিতল বা কাঁসার মতো ধাতু—বা সেগুলি দিয়ে তৈরি বাসনপত্র কেনেন, যেগুলিও এই দিনে শুভ বলে মানা হয়।
শুধু ধাতুই নয়, শাস্ত্র অনুযায়ী ধনতেরসে বৃহস্পতি ও শুক্র গ্রহের সঙ্গে যুক্ত বস্তু কেনাও শুভ। বৃহস্পতির সঙ্গে যুক্ত দ্রব্য যেমন হলুদ বস্ত্র, ধান, কাঁচা হলুদ, চনা, এগুলি কেনা যায়। আবার শুক্র গ্রহের প্রভাবাধীন জিনিস যেমন প্রসাধনী (অ্যালকোহলবিহীন), আতর, সুন্দর পোশাক প্রভৃতি কেনাও এই দিনে সৌভাগ্যদায়ক বলে ধরা হয়। মূল্যবান রত্নও এই তিথিতে কেনা যেতে পারে, যদি তা আপনার জন্মকুণ্ডলীর অনুকূলে হয়।