দিনাজপুর : উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী পুজোগুলির মধ্যে একটি হল কালিয়াগঞ্জের মা বয়রার পুজো। আড়ম্বরবিহীন এই পুজোয় ভক্তি আর নিষ্ঠাই হল আসল। পুজোর সময় এখানে মেয়েদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকে। জাগ্রত এই মায়ের আশীর্বাদ নিতে দূর দূরান্ত থেকে বহু ভক্তের ঢল নামে কালীপুজোর রাতে।
এই পুজোর বয়স গ্রামের বয়স্করাও ঠিক ঠাহর করতে পারেন না। বয়রা কালিবাড়ির পেছনে অবস্থিত শ্রীমতি নদী ঘাট ৷ লোকমুখে শোনা যায়, সেখানেই একটি বয়রা গাছের নিচেই প্রথম মায়ের আরাধনা শুরু হয়।সেই সময় কিছু ডাকাত দল ঘন জঙ্গলে রাতের অন্ধকারে ডাকাতি করতে এসে এই বয়রা মায়ের পুজোর সূচনা করে।
কালিয়াগঞ্জের শ্রীমতী নদীর ধারে ছিল আমলকি হরিতকি ও বয়রার গাছের জঙ্গল। সেখানে বয়রা গাছের নীচে বেদীতে ফুল, জল দিয়ে পুজো করত ডাকাতদল। মন্দিরের পুরোহিত সমীর ভট্টাচার্য জানান প্রচলিত রীতি অনুযায়ী বয়রা মায়ের পুজোতে পুরুষরা অংশ গ্রহণ করতে পারলেও পুজোর সময় মেয়েদের প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকে।
কারণ হিসেবে জানা যায় দীর্ঘদিন আগে মায়ের মূর্তির সামনে প্রদীপ জ্বলাতে গিয়ে একবার একটি মেয়ের হাত দিয়ে মায়ের সমস্ত চুল পুড়ে যায়। তারপর থেকেই এই মন্দিরে মেয়েদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়। বয়রা মায়ের পুজোর সমস্ত কাজ পুরুষরাই করেন। মহিলাদের গর্ভগৃহে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকে।
এখানকার মানুষের বিশ্বাস, মায়ের কাছে কালীপুজোর রাতে যা মানত করা যায় তাই পূরণ হয় ৷ তাই এই পুজোকে ঘিরে দীপাবলির রাতে হাজার হাজার ভক্তের সমাগম ঘটে বয়রা কালীমাতার মন্দিরে।