সভ্যতার শুরু থেকেই মানুষের সঙ্গে প্রাণীজগতের বাকিদের যেখানে মূল পার্থক্য, তা হল- মানুষের চিন্তা করার ক্ষমতা রয়েছে। মানুষ ভাবতে পারে। আর মানুষের সেই ভাবনার সবথেকে বড় হাতিয়ার হয়েছে বই (International book day)। 'বই' শব্দটি আরবি। মূল শব্দটি- 'ওয়াহি'।যার অর্থ, ঈশ্বরের প্রত্যাদেশ। শব্দার্থের যে বিবর্তন, তার উৎসটি ধর্মীয় হলেও সেটি যে একটি সম্পূর্ণ ধর্মনিরপেক্ষ শব্দে পরিণত হতে পারে, তার সবথেকে বড় প্রমাণ হল- বই।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বই পড়ার অভ্যাসটি সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্রমশ কমেছে। বিশেষ করে ছাপা বই পড়ার (International book day) দীর্ঘ কয়েক শতকের প্রক্রিয়াটি দারুণভাবে ধাক্কা খেয়েছে ডিজিটাল মাধ্যমের জন্য। তবে, এর একটি অন্য দিকও আছে। বই পড়ার অভ্যাসটি কমলেও, তা মুছে যায়নি। বেড়েছে পিডিএফ (PDF) বা কিন্ডলে (Kindle) পড়ার অভ্যাস।
এমনকি অডিয়োবুকের (Audiobook) মতো মাধ্যমও এখন তুমুল জনপ্রিয়। যা তৈরি করেছে বইয়ের গল্প বা প্রবন্ধ বা কবিতা 'শোনা'র অভ্যাসও। ২৩ এপ্রিল আন্তর্জাতিক পুস্তক দিবস (International book day)। বই পড়ার অভ্যাস আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে ১৯৯৫ সাল থেকে এই দিনটিকে স্বীকৃতি দিয়েছিল ইউনেস্কো (UNESCO)।
যদিও, এই দিনটি সারা বিশ্বে উদযাপন করার থাকলেও তা নিয়ে খুব বেশি উৎসাহ চোখে পড়ে না আর। তা কষ্টের ঠিকই। তবু, বিশ্বের সমস্ত মগ্ন পাঠকের কাছেই এই বই দিবস তার মাধুর্য নিয়ে উঠে আসে প্রতিটি নতুন দিন, প্রতিটি নতুন শব্দ পড়ার মধ্য দিয়ে।মেসোপটেমীয় পুরাণের চরিত্র গিলগামেশের জীবনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি বই 'এপিক অব গিলগামেশ'কে (Epic of Gilgamesh) মানবসভ্যতার ইতিহাসের প্রথম লিখিত বই হিসেবে ধরা হয়। দীর্ঘ কয়েক হাজার বছরের বই পড়ার এই যাপন থেকে বিচ্যুত হবে না কোনও পাঠক, জীবনের অন্তত একটি বেলা 'কলেজ স্ট্রিট' হয়ে উঠুক তাদের কাছে, এটুকুই আশা।