Country

1 month ago

Raipur Police: রায়পুর পুলিশ পুরস্কৃত করতে চলেছে গুড সামারিটানকে!

Raipur Police is going to reward Good Samaritan!
Raipur Police is going to reward Good Samaritan!

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ তাঁরা এ কথাও জানেন না যে, কেউ যদি নিজে থেকে এগিয়ে এসে অ্যাক্সিডেন্টের শিকার মানুষজনকে হাসপাতালে নিয়ে যান, তা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কোনও ক্রিমিনাল বা সিভিল মামলার মুখে পড়বেন না। এমনকী হাসপাতালে যিনি বা যাঁরা ভর্তি করেছেন, তিনিও অ্যাডমিশন ফর্মে তাঁর নাম-পরিচয় উল্লেখ করতে না-ই পারেন।

আবার যিনি পুলিশ বা অন্য কোনও ইমার্জেন্সি সার্ভিসকে খবর দিয়েছেন — তাঁরা তাঁদের নাম-পরিচয় গোপন রাখতে পারেন। যদি কোনও সরকারি কর্মচারী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে তাঁর পরিচয় দিতে বাধ্য করেন, তা হলে সেই কর্মীর বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেবে। এই আইনি সুরক্ষা গুড সামারিটানদের রয়েছে।

একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এক কর্মী বললেন, ‘গুড সামারিটানদের কেউ যদি নিজে থেকে প্রত্যক্ষদর্শী হয়ে আদালতে সাক্ষ্য দিতে চান, তা হলে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা অনুযায়ী তাঁকে একবারই জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারবে পুলিশ এবং কোনও ভয় দেখানো বা হেনস্থা করা চলবে না। কোর্টে সাক্ষ্যের সময়ে করতে হবে ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের ব্যবস্থা।’

বাস্তবটা হচ্ছে ১০ জনের মধ্যে ৯ জনই গুড সামারিটানদের জন্য যে এত রকম সুরক্ষা কবচ রয়েছে, তা জানেন না। আর সে জন্যই সন্তোষের মতো তরুণ অফিসার এগিয়ে এসেছেন। প্রশ্ন ছিল, ‘যাঁরা আপনার হাতে পুরস্কৃত হলেন, তাঁদের প্রতিক্রিয়া কেমন ছিল?’ হাসতে হাসতে বললেন, ‘আসলে অন্যদের মতো ওঁরাও ভাবতে পারেননি যে পুলিশ হ্যারাস না করে তাঁদের মেমেন্টো আর সার্টিফিকেট দেবে! ছোট-বড় রাস্তার মোড়ের বিলবোর্ডগুলোয় তাঁদের সাহায্যের কথা নাম-ছবি সহ টাঙাবে। মানুষ তাঁদের চিনবেন।’

কথায় কথায় জানালেন, যে ৬ জন পুরস্কৃত হয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকেই ‘গোল্ডেন আওয়ার’-এর মধ্যে দুর্ঘটনাগ্রস্তদের হাসপাতালে নিয়ে গেছেন, ইমার্জেন্সি পরিষেবায় জানিয়েছেন এমনকী ক্রেন ডেকেছেন জলে পড়ে যাওয়া গাড়িকে টেনে তোলার জন্য! সেই মানুষগুলোর জন্যই ওই মানুষগুলো দ্বিতীয় জীবন পেয়েছেন। একজন পুরস্কার-প্রাপক একটি হিন্দি কাগজকে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘এই কাজ করে সার্টিফিকেট-মেমেন্টো পাওয়া যায় কখনও জানতামই না। আমি তো আমার কাজটুকুই করেছিলাম।’

তিনি আরও বেশি উচ্ছ্বসিত যে তাঁদের জেলার পুলিশের এত বড় অফিসার তাঁর হাতে নিজে এই স্বীকৃতি তুলে দিয়েছেন। সন্তোষের কথায়, ‘খাকি উর্দি পরা লোকজন যে অন্যদেরও স্যালুট করতে পারেন, তাঁরা শুধু হ্যারাসই করেন না — এটাই ওঁদের বিশ্বাস হচ্ছিল না।’

এই প্রসঙ্গে যোগাযোগ করা হয়ছিল কলকাতা পুলিশ ও রাজ্য পুলিশের দুই পদস্থ আধিকারিকের সঙ্গে।

‘এই সময়’কে তাঁরা জানান, এখনই এই ধরনের পরিকল্পনা নেই ঠিকই, তবে অনেক সময়ই উল্লেখযোগ্য কাজ করার জন্য সাধারণ মানুষকে পুলিশ স্বীকৃতি দিয়ে থাকে। রাজ্য পুলিশের ওই অফিসারের কথায়, ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা মেনে চলার চেষ্টা করা হয়। তবে এই নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে আমরা এখনও কোনও প্রচার করিনি।

‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ নিয়ে অনবরত ক্যাম্পেন হয়, সেখানে মাঝেমধ্যে এই বিষয়ে বলা হয়। রায়পুর পুলিশের উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। কলকাতা পুলিশের ওই অফিসার বললেন, ‘আমাদের বহু কমিউনিটি পুলিসিং চলে। এটা নিয়েও এ বার ভাবব। মানুষের মধ্যে সচেতনতাটা থাকা উচিত। তা হলে প্রতি বছর গড়ে যে দেড় লক্ষ মানুষ পথদুর্ঘটনায় মারা যান, গোল্ডেন আওয়ার নষ্ট না হলে হয়তো তার মধ্যে হাজার তিরিশেক মানুষ বেঁচে যাবেন। সে জন্যই দরকার গুড সামারিটানদের।’

সন্তোষ তাঁর জেলার সব থানাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন, প্রতি মাসে গুড সামারিটানদের খুঁজে বের করে পুরস্কৃত করতে। এই নিয়ে প্রচারের ঝড় তুলতে, যাতে মানুষ এগিয়ে আসেন। স্কুলের একটু উঁচু ক্লাসে যদি এই বিষয়ে পড়ুয়াদের বলা হয়, সেটা নিয়েও ভাবছেন সন্তোষ।

গুড সামারিটানদের ছবিওয়ালা সেই বিলবোর্ডে লেখা আছে — ‘ভিড় কা হিসসা না বনেঁ, ঘায়েলো কী মদদ কর 'নেক ইনসান' বনেঁ’ অর্থাৎ ভিড় করে দাঁড়িয়ে না থেকে এগিয়ে এসে সাহায্য করুন।

বহু অ্যাওয়ার্ড-জয়ী এই অফিসার জানেন না, একদিন তাঁর এই ভাবনা দেশের প্রতিটি থানায় দেখা যাবে কি না, তবে এটুকু জানেন — মানুষকে ভালো কাজের স্বীকৃতি দিলে অন্যরাও অনুপ্রাণিত হন। আর তা যদি পুলিশের কাছ থেকে মেলে, সেই সম্মানটা তাঁদের কাছে বিরাট প্রাপ্তি। অন্তত প্রথমবার স্বীকৃতি জানিয়ে সন্তোষ কুমার সিং-এর উপলব্ধি এটাই।

You might also like!