দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ ২০২৪ সালে চাকুরিজীবী এবং ব্যবসায়ীদের অনেকেই নির্দ্বিধায় এর শরণাপন্ন হন। তার একটা বড় কারণ হল, পার্সোনাল লোন পাওয়ার ক্ষেত্রে তুলনায় সুবিধা অনেক বেশি। যদিও, এই ধরনের লোনের ক্ষেত্রে সুদের হার অনেকটাই বেশি থাকে। কারণ, এই ধরনের লোন হল 'আনসিকিওর্ড'। কিন্তু, এখন আর আগের মতো লোন অ্যাপ্লাই করার জন্য ব্যাঙ্কে যেতে হয় না। নিজের মোবাইল থেকেই অনলাইনে সহজেই অ্যাপ্লাই করে দেওয়া যায়।
আজকাল বেশির ভাগ মানুষ নানান ক্ষেত্রে লোনের দ্বারস্থ হন। ব্যবসা সংক্রান্ত বিষয়, বিয়ে বা পড়াশোনা লোনের মাধ্যমে অনেকাংশেই অর্থনৈতিক দিক থেকে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যায়।
কোনও ব্যক্তি ৯০ দিনের বেশি মানে তিন মাসের বেশি সময় ধরে ঋণের কিস্তি না শোধ করেন, সে ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান সেই ব্যাক্তিকে সর্বপ্রথম ইএমআই না দেওয়ার কারণ জিজ্ঞাসা করে। এর পর ব্যাঙ্ক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান ওই ব্যাক্তির দেওয়া কারণ যাচাই করে দেখে। পরে ওই ব্যক্তি ঋণশোধে একান্ত অক্ষম হলে তাকে লোন সেটলমেন্ট বা নিষ্পত্তির প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে এতেও ক্ষতি হতে পারে আপনার।
বহু মানুষই নানা ক্ষেত্রে বিভিন্ন সময় এই ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন। ব্যবসা শুরুর ক্ষেত্রে বা ব্যবসার উন্নতির ক্ষেত্রে অনেকেই ঋণ নিয়ে থাকেন। তবে চাকরি হারানো, ব্যবসায় ক্ষতি বা অসুস্থতার মতো পরিস্থিতির কারণে ঋণের কিস্তি পরিশোধে সমস্যা দেখা দেয়।
তবে এই পার্সোনাল লোন নিয়ে নানা মিথ রয়েছে। যার আসলে কোনও বাস্তব ভিত্তি নেই। সেইগুলোই আমরা আলোচনা করব।
মিথ ১ : মানুষের ধারণা খুব বিপদে না পড়লে পার্সোনাল লোনের ধারপাশ দিয়েও যাওয়া উচিত না। কিন্তু, মূল কথাটা অন্য। স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনও ইমার্জেন্সি হলে বা বাড়ি-ঘর সংক্রান্ত কোনও সমস্যা হলে বা অন্যান্য ধার মেটাতে মানুষ পার্সোনাল লোন নেয়। কিন্তু, বর্তমান বাজারে এমন উদাহরণ ভুরি-ভুরি, যেখানে বিয়ে করা থেকে শুরু করে ঘুরতে যাওয়া পর্যন্ত সব চাহিদা মেটাতেই পার্সোনাল লোন নিয়ে ফেলে ক্রেতারা।
মিথ ২ : পার্সোনাল লোন পেতে অনেক সময় লাগে। বাস্তবটা হল, পার্সোনাল লোন পেতে এখন আর বেশি সময় লাগে না। KYC (প্যান, আধার), ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ডিটেলস, পার্মানেন্ট চাকরি করলে যে সংস্থায় কর্মরত তার তিন মাস থেকে ছ'মাসের পে-স্লিপ দিলেই প্রায় সব কাজ সম্পন্ন। তারপর শুধু ভেরিফিকেশনের প্রক্রিয়াটুকু বাকি থাকবে।
মিথ ৩ : পার্সোনাল লোনের ক্ষেত্রে সুদের হার অনেক বেশি। বাস্তবটা হল, সমস্ত ধরনের সুদের হারই অনেকটা বেশি বেড়ে গেছে। ২০২১-২২ সালে সম পরিমাণ লোনে যা সুদ দিতে হত, তার থেকে বর্তমানে অনেক বেশি সুদ দিতে হয়।
মিথ ৪ : প্রচুর সিবিল স্কোর না থাকলে পার্সোনাল লোন পাওয়া যাবে না। বাস্তবটা হল, ৭৫০ বা তার উপরে সিবিল স্কোর থাকলে এবং বাকি ক্রাইটেরিয়াগুলো ঠিকঠাক থাকলে পার্সোনাল লোন পাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বৃদ্ধি পায়। তবে, ৭৫০-এর কম সিবিল স্কোরেও পার্সোনাল লোন পাওয়া খুব ভালভাবেই সম্ভব। তবে, আপনার সিবিল স্কোর যদি ৮০০ পয়েন্টের বেশি থাকে, তাহলে অনেক ব্যাঙ্ক বা এনবিএফসি আপনাকে কম সুদে পার্সোনাল লোন দিতে পারে।
মিথ ৫ : একটা পার্সোনাল লোন থাকলে আরও একটা নেওয়া যায় না। এখানেও এই তথ্য সম্পূর্ণ ভুল। একইসঙ্গে একাধিক পার্সোনাল লোন চলতে পারে কারও। যদি, সব ধরনের যোগ্যতা প্রমাণ করা যায়, তাহলে লোন পাওয়াতে কোনও সমস্যাই নেই আসলে।
মিথ ৬ : শুধুমাত্র চাকুরিজীবীরাই পার্সোনাল লোন পাবেন। বাস্তবটা হল, পার্সোনাল লোন যে কেউ পেতে পারেন। চাকুরিজীবী বা ব্যবসায়ী বা ফ্রিল্যান্সার যে কেউ। শুধু ব্যাঙ্ক স্টেটমেন্টটা যেন যে ব্যাঙ্ক বা এনবিএফসি থেকে লোনটা নেওয়া হচ্ছে, তাদের ক্রাইটেরিয়ার সঙ্গে ম্যাচ করে। তাহলেই আর কোনও সমস্যা নেই।