ক্যানিং,২৮ জানুয়ারি : কিডনি পাচার চক্রের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে এক মহিলাকে আটক করল ক্যানিং থানার পুলিশ। রবিবার দুপুরে ক্যানিংয়ের মিঠাখালি উত্তর পূর্ব পাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয় নাজিরা শেখ নামে অভিযুক্ত মহিলাকে। নাজিরার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রিয়াঙ্কা হালাদার নামে এক গৃহবধূর কিডনি পাচারের। বিষয়টা জানতে পারলে তাঁকে পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও সেই টাকা দেয়নি। রবিবার অভিযুক্ত নাজিরাকে আটক করেন প্রিয়াঙ্কার বাপের বাড়ির সদস্যরা। এরপর পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, বারুইপুর থানার অন্তর্গত বেতবেরিয়া এলাকায় স্বামী গোপাল হালদারের সাথেই ভাড়া থাকতেন প্রিয়াঙ্কা। তাঁর পাশের ঘরেই ভাড়া থাকতেন নাজিরা শেখ ও তার স্বামী নুরুদ্দিন শেখ। প্রিয়াঙ্কা পেটের যন্ত্রণায় বেশ কিছুদিন ধরেই ভুগছিলেন। বিষয়টি নাজিরাকে জানালে তিনি চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাবেন বলে পার্ক সার্কাস এলাকার একটি নার্সিং হোমে নিয়ে যান প্রিয়াঙ্কাকে। প্রিয়াঙ্কার অভিযোগ, সেখানে নিয়ে গিয়েই তাঁকে অজ্ঞান করে তাঁর শরীর থেকে একটি কিডনি বের করে নেওয়া হয়। জ্ঞান ফিরলে বিষয়টি বুঝতে পেরে চিৎকার করতে শুরু করলে তাঁকে পাঁচ লক্ষ টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। একমাস আগে এই ঘটনা ঘটলেও এখনও পর্যন্ত কোন টাকা দেওয়া হয়নি প্রিয়াঙ্কাকে। টাকা চাইতেই বেতবেরিয়া থেকে অভিযুক্ত ওই মহিলা ও তার স্বামী এলাকা ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছিলেন রবিবার। তখনই স্থানীয়দের সহযোগিতায় নাজিরাকে ধরে ফেলা হয়। পালিয়ে যায় নুরুদ্দিন।
প্রিয়াঙ্কা বলেন, “ পেটের যন্ত্রণায় কষ্ট পাচ্ছিলাম। ওনাকে বলতে আমায় ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়। ইঞ্জেকশান দিতেই আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। আর কিছুই জানিনা। জ্ঞান ফিরতে বুঝি আমার একটা কিডনি বের করে নেওয়া হয়েছে। আমাকে পাঁচ লাখ টাকা দেবে বলেছিল। কিন্তু সেই টাকাও দেয়নি। আমি এদের শাস্তি চাই।” যদিও অভিযুক্ত নাজিরার দাবি স্বইচ্ছায় কিডনি দিয়েছেন প্রিয়াঙ্কা। তিনি বলেন, “ জমি কিনবেন বলে টাকার জন্য কিডনি বিক্রি করতে রাজি হয়েছিলেন প্রিয়াঙ্কা। আমার স্বামী ছয় লক্ষ টাকায় নিজের কিডনি বিক্রি করেছেন। সেটা জেনেই প্রিয়াঙ্কা নিজের কিডনি বিক্রি করতে চায়। টাকা পরে নেবে বলেছিল, তাই ওঁকে টাকা দেওয়া হয়নি।” পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, কিডনি পাচার চক্রের সাথে জড়িত অভিযুক্ত মহিলা। তার পলাতক স্বামীর খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। এই চক্রের সাথে আরও লোকজন জড়িত রয়েছে বলেই দাবি তাঁদের। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই সম্পর্কে আরও তদন্ত করতে চাইছে পুলিশ।