দূরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্ক: প্যানেল বাতিলের জেরে ফের প্রাইমারি স্কুলেই ফিরে যেতে চান পূর্ব মেদিনীপুরের ৩৮ জন প্রাক্তন শিক্ষক-শিক্ষিকা। ২০১৬ সালের আগে তাঁরা সকলেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন। পরে ওই বছরের নিয়োগ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে হাইস্কুলে চাকরি পান। কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে প্যানেল বাতিল হওয়ায় তাঁদের মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্কুলের চাকরি হারাতে হয়েছে। ফলে এবার তাঁরা নিজের পুরনো কর্মস্থলে, অর্থাৎ প্রাইমারি স্কুলে ফেরার আবেদন করেছেন। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য স্কুল শিক্ষা কমিশনারের নির্দেশে পদক্ষেপ নিচ্ছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুনর্বহালের জন্য ইতিমধ্যেই জেলার শিক্ষা দফতরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সেই নির্দেশ মেনেই প্রক্রিয়া শুরু করেছে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ।
এক সপ্তাহের মধ্যেই শিক্ষক-শিক্ষিকারা পুনর্নিয়োগের চিঠি হাতে পাবেন বলেই জানা গিয়েছে। বহু টানাপোড়নের পরে এসএসসি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা নিয়েছে। সফল হলেও তাঁরা হাই স্কুলে যোগ দেবেন না, সে বিষয়ে তাঁরা নিশ্চিত। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের সভাপতি হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, কোর্টের নির্দেশে যাঁরা যোগ্য শিক্ষক, যাঁরা আগে প্রাইমারি স্কুলেই শিক্ষকতা করতেন, তাঁরা ফের প্রাইমারিতে ফেরার জন্যে আবেদন জানিয়েছিলেন।
এমন ৩৮ জনকে পুনর্নিয়োগের জন্যে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দিয়েছে রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর। ৩৮ জনের তালিকায় থাকা এক শিক্ষক কার্তিক আদক ২০০৪ সালে প্রাথমিক শিক্ষক পদে যোগ দিয়েছিলেন এবং পদোন্নতি হয়ে প্রধান শিক্ষক হয়েছিলেন প্রাথমিক স্কুলের। পরে পরীক্ষা দিয়ে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকতায় যোগ দেন পদার্থবিদ্যার শিক্ষক হিসাবে। তিনি বলেন, “আমি পশ্চিমবঙ্গে একমাত্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যে কিনা বেশিদিন চাকরির সুবাদে প্রাইমারিতে বেশি বেতনের চাকরি ছেড়ে মাধ্যমিকে কম বেতনের চাকুরিতে গিয়েছিলাম কেবল পদার্থবিদ্যা বিষয়টাকে ভালবেসে। আজকে জীবিকা বাঁচাতে আবার ডিমোশন হয়ে পুরানো পোস্টে জয়েন করতে হবে।”
তেমনি তমলুকের আরেক শিক্ষিকা খিলখিল তুঙ্গ বলেন, “সরকারের ব্যর্থতার দায়ে যোগ্যদেরও চাকরি গিয়েছে। ফের এসএসসির পরীক্ষা দিয়েছি। কিন্তু প্রাইমারিতেও আবেদন করেছি। তবে এসএসসি ক্র্যাক করলেও তাঁরা ফের হাইস্কুলে ফিরে যাব, সে নিশ্চয়তা নেই।” এ বিষয়ে কটাক্ষ করেছে বিজেপি। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শিক্ষকদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে সরকার। বাংলার মানুষ সব জানে, এর ফল আগামী ছাব্বিশের নির্বাচনে মানুষ বুঝিয়ে দেবে।”