দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ আমাদের দেশে গঙ্গার মতোই আরও একটি পবিত্র নদী হল নর্মদা। গঙ্গার মতো নর্মদাকেও স্বর্গের দেবী রূপে কল্পনা করা হয়। গঙ্গায় স্নান করলে যে পূণ্য লাভ করা যায়, নর্মদা নদীকে শুধু চোখে দেখেই সেই পূণ্যফল পাওয়া সম্ভব।
সনাতন ধর্ম অনুসারে অত্যন্ত গুরুত্বপূ্র্ণ একটি নদী হল নর্মদা। নর্মদা নদীকে দর্শন করেই গঙ্গাস্নানের সমান পূণ্যফল লাভ করা সম্ভব। শাস্ত্রে বলা আছে: 'গঙ্গা কঙ্খলে পূণ্য, কুরুক্ষেত্রে সরস্বতী, গ্রামেণ ভা আদি ভরণ্যে, পূণ্য সর্বত্র নর্মদা।' অর্থাত্ গঙ্গা কঙ্খলে পবিত্র, সরস্বতী কুরুক্ষেত্রে পবিত্র, কিন্তু গ্রাম হোক বা জঙ্গল, নর্মদা সর্বত্র পবিত্র। আজ ১৬ ফেব্রুয়ারি পালিত হচ্ছে নর্মদা জয়ন্তী। এই শুভ দিনে জেনে নেওয়া যাক, কী ভাবে স্বর্গ থেকে মর্ত্যে এল এই নদী।
নর্মদা নদীর উত্পত্তির কাহিনি
নর্মদা নদীর উত্পত্তির কাহিনি অতৌন্ত কৌতুহলোদ্দীপক। পুরাণ অনুসারে মহাদেবের এই নদীর সৃষ্টি। সেই কারণে নর্মদাকে মহাদেবের কন্যা মনে করা হয়। স্কন্দ পুরাণে বলা আছে যে ১৪ হাজার বছর ধরে নাগাড়ে কঠোর তপস্যা করে মহারাজ হিরণ্যতেজা মহাদেবকে প্রসন্ন করেছিলেন। তাঁর পূর্বপুরুষদের মুক্তির জন্য নর্মদা নদীকে মর্ত্যে নিয়ে আসার জন্য তিনি প্রার্থনা করেন।
অমরকণ্টকে মেকাল পর্বতে ১২ বছরের এক কন্যা রূপে কুমীরের পিঠে বসে বিরাজ করতেন দেবী নর্মদা। মহাদেবের নির্দেশে তিনি মেখাল পর্বত থেকে নেমে এসে গুজরাতে ভাদুচে কুম্ভঘাট উপসাগরে মিলিত হন। সেই কারণে অমরকণ্টকে দেবীর মাথা ও ভাদুচকে দেবী পা হিসেবে কল্পনা করা হয়
নর্মদা নদীতে স্নানের মাহাত্ম্য
নর্মদা মানে নরম, সুখ ও দান। আদিগুরু শংকরাচার্য নর্মদাকে সর্বতীর্থ নয়াকম হিসেবে ব্যাখ্যা করেছেন। অর্থাত্ সব তীর্থের আদি হল নর্মদা দর্শন। স্কন্দ পুরাণে উল্লেখ আছে যে শ্রীবিষ্ণু প্রত্যেকবার অবতার রূপ গ্রহণ করে নর্মদা নদীর তীরে এসে এই নদীর স্তব করেছেন। সরস্বতী নদীতে তিন দিন ও গঙ্গা নদীতে এক দিন স্নান করলে যে পূণ্য লাভ করা যায়, নর্মদা নদী শুধু দর্শন করেই সেই পূণ্য অর্জন করা সম্ভব।
মধ্য প্রদেশে এই নদীর অবদান প্রচুর। সেই কারণে একে মধ্যপ্রদেশের লাইফ লাইন বা জীবন রেখা বলা হয়ে থাকে। ভারতে গোদাবরী ও কৃষ্ণার পর তৃতীয় দীর্ঘতম নদী হল নর্মদা, যা সম্পূর্ণ ভাবে ভারতের মধ্যে দিয়েই প্রবাহিত।।