দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপপ্রবাহের তীব্রতায় আবহাওয়া দফতর আরও তিনদিনের জন্য ‘হিট অ্যালার্ট’ বা তাপপ্রবাহের সতর্কবার্তা জারি করেছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকার মতই একই অবস্থা মাগুরাতেও। সেখানের একটি হোটেলে খেতে মানুষদের কিছুটা স্বস্তি দিয়ে অভিনব একটি পদ্ধতি নিয়েছেন রবিউল ইসলাম। দুপুরে সেই হোটেলে বৃষ্টির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কী ব্যবস্থা?
এখন সবাই চাইছেন কোনও নামীদামী রেস্টুরেন্টে, এসির মধ্যে মধ্যে খেতে। কিন্তু মাগুরার ইসলামপুর পাড়ায় অবস্থিত ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসের পিছনে অবস্থিত হোটেলটি খুবই সাধারণ। সেখানে ‘কুলিং’ ব্যবস্থা নেই। তার ওপর আবার টিনের চাল। ফলে সকাল থেকেই হোটেলে গরম আরও তীব্র হতে শুরু করছে। তাই তীব্র দাবদাহের মধ্যেও সেখানে খেতে আসা লোকজনদের একটু স্বস্তি দিতে অভিনব পদ্ধতি বেছে নিয়েছেন রবিউল ইসলাম।
ওই হোটেলটিতে দুপুর হলেই দোকানে নামে বৃষ্টি। কারণ টিনের চালে বৃষ্টির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাতেই টিনের চালকে ঠান্ডা রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এর ফলে, রবিউলের ওই হোটেলের মধ্যে তাপমাত্রা অনেকটাই কমে যাচ্ছে। বাইরা তাপমাত্রা প্রায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলেও ওই ‘কুলিং সিস্টেম’-এর কারণে রবিউলের হোটেলের ভেতরের তাপমাত্র থাকছে ২৭ থেকে ২৮ ডিগ্রি।
কেন এই ব্যবস্থা?
দীর্ঘ ৫৭ বছর ধরেই এই খাবার হোটেল ব্যবসায় যুক্ত দৃষ্টি প্রতিবন্ধী রবিউল। রেজিস্ট্রি অফিসের পেছনে হওয়ায় তার হোটেলে এমনিতেই কাস্টমার বেশি হয়। হোটেলে খাসি, মুরগি, মাছ, সবজি সবই পাওয়া যায়। রবিউল জানান, তাঁর বাপ-ঠাকুরদার আমল থেকেই হোটেল চলছে। তিনি বলেন, 'মানুষের ভালোবাসায় ব্যবসায় ভালোই চলছিল। সম্প্রতি লক্ষ্য করলাম যে গরমের কারণে আমার হোটেলে মানুষ আসতে চাইছেন না। কারণ এটা টিনের চালার হোটেল। তাই গরম বেশি। সেই কারণে কাস্টমারের সংখ্যা অনেক কম ছিল। তাই এই তাপ কমানোর বুদ্ধি বার করি। মূলত ইন্টারনেট থেকে দেখে আমি আমার হোটেল ঘরের টিনের চালার ওপর ওয়াটার কুলিং সিস্টেম লাগাই। এটা করতে খরচ হয়েছে ২৫ হাজার টাকা।'
সেই কারণে এই কৃত্রিম বৃষ্টিতে ভ্যাপসা গরমের পরিবর্তে ওই তাপমাত্রা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে থাকছে। এখন একটু আরামে খাওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে দেখে অনেকেই আবার খাবার খেতে আসছেন এই হোটেলটিতে। তারা জানান, দামী হোটেলের তুলনায় অনেক কম খরচে খাওয়া যাচ্ছে। সেই সঙ্গে গরমের মধ্যে একটু স্বস্তিও পাওয়া যাচ্ছে।