দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ ফের বন্যার কবলে পড়ল বাংলাদেশের সিলেট। সিলেট জেলার ১৩টি উপজেলার মতই বন্যা কবলিত হয়েছে সিলেট সিটি কর্পোরেশন এলাকা। একইভাবে বন্যার কবলে সুনামগঞ্জের ৬৯টি ইউনিয়ন এবং দুটি পৌরসভা। সেখানে বিভিন্ন নদীতে জল বাড়ছে। একাধিক নদীর জল বইছে বিপদসীমার ওপর দিয়ে। এদিকে মেঘালয় রাজ্যে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। এর ফলে ওই এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাতের সঙ্গে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে থাকা সিলেট এবং সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সিলেটের জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই সেখানে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় পৌনে চার লাখ মানুষ। সিলেটের গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সবচেয়ে বেশি বন্যাকবলিত। অন্যদিকে, সুনামগঞ্জের ৬৯টি ইউনিয়ন এবং দুটি পৌরসভাতেও প্রায় চার লাখ মানুষ বন্যাক্রান্ত হয়েছেন। সেখানের প্রায় সাড়ে ১২হাজার মানুষ ঠাঁই নিয়েছেন বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ইদের আগের দিন থেকেই সেখানে জল বাড়তে শুরু করে। পাহাড়ি ঢলে অতিরিক্ত বৃষ্টির কারণে প্লাবিত হয় সিলেট এবং সুনামগঞ্জের ছাতক ও দোয়রাবাজার উপজেলাসহ সুনামগঞ্জ সদর উপজেলা। এই কারণে এখন ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ সড়ক, দোয়ারাবাজার-ছাতক সড়ক, জামালগঞ্জ-সুনামগঞ্জ সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। একইভাবে জলের তলায় সিলেটের বিভিন্ন রাস্তাও।
সুনামগঞ্জের মতই সিলেট এলাকায় বিভিন্ন নদীতে বাড়ছে জল। সিলেটের আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সেখানে ১৫৩মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বুধবারও সেখানে বৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে চেরাপুঞ্জিসহ মেঘালয়ে আগামী দুদিন আরও ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। প্রশাসনের আশঙ্কা, এর ফলে সিলেটের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হবে।
আধিকারিকরা জানান, সিলেটের ১১টি পয়েন্টের মধ্যে ৬টি পয়েন্টেই নদীর জল বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে সুরমা নদী সিলেট পয়েন্টে বিপদসীমার ২৭সেন্টিমিটার এবং কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ১২২সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া কুশিয়ারা, সারি, গোয়াইন নদীর জল বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুনামগঞ্জে সুরমা নদীর জলও আছে বিপদসীমার ওপরে।
সিলেট এবং সুনামগঞ্জ জেলার প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যা কবলিত এলাকায় ত্রাণ বিলি করা ছাড়াও তাদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র করা হয়েছে। ত্রাণ এবং উদ্ধারকাজ পরিচালনার জন্য নৌকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গোয়াইনঘাটের উপজেলা নির্বাহী আধিকারিক তৌহিদুল ইসলাম। সুনামগঞ্জ-এর জেলাশাসক মোহাম্মদ রাশেদ ইকবাল চৌধুরী জানান, সেখানে বন্যার্তদের জন্য ৫৩১টি আশ্রয়কেন্দ্র করা হয়েছে।
বন্যার্তদের জন্য প্রতি উপজেলায় ত্রাণ, শুকনো খাবার সহ সরকারি সাহায্য পাঠানো হচ্ছে। অন্যদিকে, সিলেটের নদ-নদীর জল বৃদ্ধি পেয়ে এলাকার পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে আশঙ্কা করে সব কর্মীর ছুটি বাতিল করা হয়েছে বলে জানান সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী।