দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ ভূমিধসে বিদ্ধস্ত পাপুয়া নিউ গিনি। ক্রমেই বেড়ে চলেছে মৃতের সংখ্যা। ওশিয়ানিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রে বৃহস্পতিবার প্রথম ভূমিধস হয়। কিন্তু তার প্রভাব চলে রবিবার পর্যন্ত। রাষ্ট্র সংঘের অভিবাসন সংস্থার খবর অনুযায়ী ভূমিধসে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ২ হাজার ছাড়িয়েছে। ভূমিধসের জেরে আম্বালি এনং এনগা প্রদেশে ১৫০ টি বাড়ি ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে।
তবে এখনও পর্যন্ত মাত্র কয়েকটি দেহ উদ্ধার করা গিয়েছে। বেশিরভাগ দেহই এখনও পর্য়ন্ত মাটির নীচে চাপা পড়ে আছে বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকারীরা। ভূমিধসে বেশিরভাগ সড়কপথই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। ফলে উদ্ধারকারীদের বিপর্যস্ত এলাকায় পৌঁছতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে। সড়কপথ বন্ধ থাকায় হেলিকপ্টারে করে সেখানে পৌঁছতে হচ্ছে।
গত বৃহস্পতিবার পাপুয়া নিউ গিনির এনগা প্রদেশের ইয়াম্বালি গ্রামে প্রথমবার ভূমিধসের ঘটনা ঘটে। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রে জাতিসংঘের সংস্থার মিশনের প্রধান সেরহান আক্তোপ্রাক জানিয়েছেন, ইয়াম্বালি গ্রাম এবং এনগা প্রাদেশিক কর্মকর্তাদের গণনার ভিত্তিতে মৃতের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রথমবারের ভূমিধসেই ১৫০ টিরও বেশি বাড়ি চাপা পড়েছে।
আক্তোপ্রাক জানিয়েছেন, ‘এখনও পর্যন্ত ভূমিধস প্রবণ এলাকার অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। সেই সঙ্গে ভূগর্ভস্থ জল বেরিয়ে এলাকাবাসীদের জন্য তা বিপদের সৃষ্টি করেছে।’
ইতিমধ্যেই জরুরী প্রতিক্রিয়াকারীরা বিশাল ভূমিধস থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে। তবে কয়েকটন অস্থিতিশীল মাটির কারণে উদ্ধার প্রচেষ্টাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।
পিএনজির কেয়ার অস্ট্রেলিয়া মানবিক গোষ্ঠীর প্রতিনিধি জাস্টিন ম্যাকমোহন বলেছেন, কাঠামোগত ক্ষতির কারণে উদ্ধার ও ত্রাণ বণ্টন বিপর্যস্ত এলাকায় পৌঁছানো আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।
ভূমির অবস্থা বেশ সঙ্গীন হওয়ায় উদ্ধারকারীদের পক্ষে এলাকাটিতে পৌঁছানো বেশ কঠিন হয়ে উঠেছে। মূল রাস্তাটিও প্রায় ২০০ মিটার কেটে গিয়েছে, যা ত্রাণ প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্থ করেছে বলে জানিয়েছেন জাস্টিন।
পোর্ট মোর্সবির উত্তর-পশ্চিমে ৬০০ কিলোমিটার পাহাড়ী এলাকাটিতে ভারী মাটি সরানোর যন্ত্র এখনও পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। বেশ কয়েকটি জায়গায় এখনও ভূমিধস চলছে সেই সহ্গে গাড়ির আকারের পাথর এবং উপড়ে পড়া গাছের কারণে উদ্ধারকারীদের পক্ষে কাজ করা আরও দুষ্কর করে তুলেছে।
উদ্ধরাকারী স্ংস্থাগুলি জানিয়েছে যে, ভূমিধসে গ্রামের গবাদি পশু, সব্জির ক্ষেত এবং বিশুদ্ধ জলের উৎসগুলিকে পুরো নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে।
সরকারি কর্মকর্তারা রপ্রায় চরটি ফুটবল মাঠের আয়তনের বিশাল ধ্বংসাবশেষের দুপাশে নিরাপদ মাটিতে আশ্রয় কেন্দ্র বানানোর চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু তা সম্ভব হয়নি।
অবরুদ্ধ রাস্তার কারণে ত্রাণ পরিবহণকারী গাড়িগুলি অর্ধেক পথে এসে আটকে পড়েছে বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবারের মধ্যে সরকার সিদ্ধান্ত নেবে যে তারা আনুষ্ঠানিকভাবে আরও আন্তর্জাতিক সাহায্যের অনুরোধ করবে কিনা।