দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ হাওর-বাওর ইত্যাদি শব্দের সঙ্গে বাঙালির পরিচয় দীর্ঘ দিনের। কারণ বাংলা প্রধানত নদী-নালার দেশ। আসলে বড়ো জলাশয়কেই বলা হয় 'বাওর'। এমন জলাশয় বাংলায় প্রচুর আছে। তবে পাঁচপোতা বাওর তাদের মধ্যে অন্যতম একটি। তাই এক উইকেন্ড ডেস্টিনেশন হয়ে উঠতে চলেছে উত্তর ২৪ পরগনার পাঁচপোতা বাওর। গাইঘাটায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া এই প্রান্তের মনোরম জলরাশি দেখতে ইতিমধ্যেই দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন ভিড় করতে শুরু করেছেন। সাড়ে সাত কিলোমিটার লম্বা বিল ও চারপাশের প্রান্তর দেখে মনে হবে যেন এক টুকরো কেরালা। অনুপম চোখের আরামের জায়গা। দূর-দুরন্ত পর্যন্ত শুধু জল আর জল। নিস্তরঙ্গ নীল জলরাশি।
একধারে সুটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের পাঁচপোতা, অন্যপারে বেরি গোপাল পুর। এখনো এখানে রাত্রিবাসের ব্যবস্থা হয় নি। তবে প্রস্তুতি প্রায় শেষ। দু'এক মাসের মধ্যেই রাত্রিবাসের ব্যবস্থাও হয়ে যাবে। এখানকার গ্রামবাসীরা সমবায় সমিতি তৈরি করে বাওড় এ মৎস্য চাষ করেন। আগে বিক্ষিপ্তভাবে পর্যটকরা আসতেন এখানকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে। করোনা আবহে এই ধরনের ভ্রমণ পিপাসু মানুষ ঘরের কাছে খুঁজে পেতে চাইছেন আরশিনগর। বর্তমানে পর্যটকরা এইখানে এসে সারাদিন ঘোরাঘুরি দিনের শেষে বাড়ি ফিরে যান। সপ্তাহান্তে এখানে বেড়াতে এসে পর্যটকরা যাতে থেকেও যেতে পারেন দিন দুয়েক, তার জন্য ইতিমধ্যেই বিস্তীর্ণ জলরাশির ধরে শুরু হয়ে গিয়েছে ছোট ছোট একুশটি কটেজ তৈরির কাজ। রয়েছে নৌকা বিহারের ব্যবস্থা, পাশাপাশি রয়েছে একটি স্পিড বোটও। কটেজগুলো তৈরি হয়ে গেলে থাকবে হোম স্টের ব্যবস্থা। নৌকা করে পর্যটকরা পৌঁছে যেতে পারেন ইছামতী নদীর তীর পর্যন্ত ।এমন উপভোগ্য সুন্দর জায়গা খুব বিরল। অথচ তা হাতের কাছেই।
এলাকাটিতে ইকোট্যুরিজম সেন্টার গড়ে তোলার জন্য ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক উদ্যোগ শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসনের চূড়ান্ত অনুমোদন পেলে চালু হয়ে যাবে এই কটেজ গুলি। কম টাকায় এখানে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান সব দিক খতিয়ে দেখে এখানে ইকোট্যুরিজম সেন্টার গড়ে তোলার কাজ দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সদর বারাসত থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে এই পর্যটন কেন্দ্রটি দ্রুত মানুষের নজর কাড়ছে। শেষ পাওয়া খবরে ফেব্রুয়ারিতেই খুলে দেওয়া হবে ওই কটেজ। তাই দু'দিন দু'দন্ড বিশ্রাম নিতে চলে আসুন পাঁচপোতা বাওর।