Travel

1 year ago

Travel: শুশুনিয়া পাহাড়ের কোলে অপরূপ আদিবাসী গ্রাম 'শিউলিবনা'

Travel
Travel

 

দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ    বাঁকুড়ার বহু জায়গাই এখন ভ্রমণ পিপাসুদের আকর্ষণ করে। পাহাড়, নদী,জঙ্গল আর সঙ্গে অপরূপ আদিবাসী সহজ-সরল মানুষ। যদি এর সাথে পাওয়া যায় আদিবাসী 'ধামসামাদল' তাহলে তো কথাই নেই। যতদূর চোখ যাবে শুধু পলাশ,পিয়াল, শিমুল,মহুয়া,শাল আর ইউক্যালিপটাস গাছের বন। মাঝে সরু পায়ে হাঁটার রাস্তা। আপনাকে ভ্রূক্ষেপ না করে ছুটে যাচ্ছে খরগোশ,বেজি, শুয়োর আর বন-মোরগের দল। এমন নৈশব্দিক প্রকৃতি যাদের পছন্দ তাদের ডেস্টিনেশন হোক 'শিউলিবনা।'

 

  শিউলিবনা যাওয়া যায় যে কোনো ঋতুতে।তবে বর্ষা,শীতের শেষে শিউলিবনার প্রকৃতি নিজেকে উজাড় করে দেয়।শীতের শেষে আর বসন্তে এই পাহাড় পলাশের আবিরে নিজেকে সাজায়।বসন্তে সেইরূপ যেন রক্তঝরা শুশুনিয়া।তবে মার্চ এপ্রিল থেকেই গরম পরে যায়।তাই জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারি আদর্শ সময়।শুধু পলাশের রক্তঝরা রূপ আর মহুয়ার মাদকতার গন্ধ। বর্ষাতেও শিউলিবনা অপূর্ব। 

বর্ষা মানেই যে ঘরবন্দি দশা এমন নয়। বর্ষা মানে বাইরে আঝোর ধারা। শাল,মহুয়া,পলাশ আর পিয়ালের জঙ্গল। সবুজ পাহাড়। এক কাপ চা হাতে নিয়ে বন বাংলোয় বসে বর্ষা উপভোগের মজাই আলাদা। আর তার জন্য আপেক্ষা করে রয়েছে শিউলিবনা। গরমে বাঁকুড়া- পুরুলিয়ার নাম শুনলেই আঁতকে ওঠেন অনেকে। তাই বর্ষার এখানে উপভোগ্য। বর্ষার কটা দিন কাটিয়ে যেতে পারেন শিউলিবনায়।


  এখানে প্রধান আকর্ষণ আদিবাদী অনাড়ম্বর জীবনের রঙ-রূপকে দেখা।শুশুনিয়া পাহাড়ের কোলে আদিবাসী গ্রাম শিউলিবনা। সবুজ পাহাড় বর্ষায় আরও সবুজ হয়ে ওঠে। বর্ষায় যেন প্রাণ ফিরে পায় লাল মাটির গ্রাম। পাহাড়ের খাঁজ বেয়ে উঠে আসতে হবে অনেকটা। তবেই পৌঁছনো যাবে শিউলিবনিতে। পাশেই বয়ে চলেছে শালি নদী। চারিদিকে শাল-পিয়াল আর ইউক্যালিপটাসের জঙ্গল। শহুরে বর্ষা ঝক্কি এখানে নেই। বর্ষণ যতই আঝোরে হোক জল জমা কাকে বলে জানেনা শিউলিবনা। বর্ষায় সবুজ আরও সুন্দর হয়ে ওঠে। শুশুনিয়া পাহাড়ের সৌন্দর্য আরও বেড়ে যায় এখানে।

  শিউলবনাতে রয়েছে অনেক পুরাতাত্বিক নিদর্শন। পাহাড়ের গায়ে খোদাই করা রয়েছে রাজা চন্দ্র বর্মনের প্রাচীন শিলালিপি। কাছই আছে ভরতপুরের পটশিল্পীদের গ্রাম। সেখানে প্রতিদিন শিল্পীরা তাঁদের নিপুন হাতের ছোঁয়ায় গড়ে তুলছে রামায়ন মহাভারতের কাহিনী আঁকা সব পটচিত্র। তার সঙ্গে দেখা যাবে পাথর শিল্পীদের। তাঁরা নিপুন কৌশলে পাথর খোদাই করে তৈরি করছে দুর্গামূর্তি, গণেশ। চাইলে এদের কাছ থেকে পাথরের বাসনও কিনে নিতে পারেন। রয়েছে শািল নদীর জলাধার যাতে গাংদুয়ার বলা হয়। এখানে সূর্যাস্ত মনোরম।এক কথায় প্রকৃতির মনোমুগ্ধকর দৃশ্য।

 যাওয়া - 

   শিউলিবনা দু'ভাবে যাওয়া যায়। বাসে বা ট্রেনে প্রথমে বাঁকুড়ার ছাতনায় আসতে হবে। সেখান থেকে শিউলিবনার দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। আর ট্রেনে বাঁকুড়া অথবা রানিগঞ্জ স্টেশনে নামেও গাড়িতে শিউলিবনা যাওয়া যায়। গাড়িতে খরচ পড়বে ১,১০০ থেকে ১৪০০ টাকা। হাওড়া স্টেশন থেকে অনেক ট্রেন রয়েছে বাঁকুড়া আসার। 

  থাকা - এখানে থাকার জায়গার অভাব হবে না। রয়েছে কটেজের মত থাকার জায়গা। কটেজে থাকতে টাকা একটু বেশি লাগবে। এছাড়াএ পশ্চিমবঙ্গ বন দফতরের ইকো ট্যুরিজিম সেন্টার রিসর্ট রয়েছে। সেখানে খরচ একটু কম। সেটা অবশ্য একেবারে শিউলিবনাতে নয়। ছাতনা থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে সেই রিসর্ট। অনলাইনে বুকিংয়ের সব সুযোগ রয়েছে সেখানে। এ ছাড়াও পাবেন একাধিক প্রাইভেট হোটেল।সব হোটেল এখন on line booking এর সুবিধা আছে।

  আসুন একবার ওই নির্ঝঞ্ঝাট আদিবাসী মানুষদের মাঝে দু'একটা দিন কাটিয়ে আসি।



You might also like!