দুরন্ত বার্তা ডিজিটাল ডেস্কঃ ১০৮ শিবমন্দির অবস্থিত পূর্ব বর্ধমান জেলার বর্ধমান শহরে। বছরের প্রায় প্রত্যেকদিনই দূর দূরান্ত থেকে বহু ভক্তরা আসেন এই মন্দির দর্শনের জন্য। অনেকে এই মন্দির সম্পর্কে কম বেশি জানেন, আবার অনেকে রয়েছেন যাঁদের এই বিষয়ে কোনো সম্যক ধারণা নেই। আসুন এবার জেনে নেওয়া যাক বর্ধমান শহরে লুকিয়ে থাকা এই প্রাচীন শিব মন্দিরটির সম্পর্কে।
পূর্ব বর্ধমানের বর্ধমান শহরের নবাবহাট এলাকায় রয়েছে এই মন্দির। নবাবহাট বাসস্ট্যান্ড থেকে স্বল্প দূরত্ব অতিক্রম করলেই চোখে পড়বে এই মন্দির। তবে যারা মোটর সাইকেল অথবা চারচাকা গাড়ি নিয়ে আসবেন , তারাও নিশ্চিন্তে আসতে পারেন। পার্কিং থেকে শুরু করে বিশ্রাম নেওয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রয়েছে এই মন্দিরে। এই প্রসঙ্গে মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে হরিহর দে বলেন , বর্ধমান স্টেশন থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে এই মন্দির রয়েছে স্টেশন থেকে টোটো করে এই মন্দিরে আসা যাবে মন্দিরে পার্কিংয়ের সম্পূর্ণ ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়াও বিশ্রাম নেওয়ার জন্য ঘরও রয়েছে।
ভক্তদের পুজো দিতে কোনও অসুবিধা হবে না মন্দির প্রাঙ্গনে ব্রাহ্মণ থাকেন। সকাল আটটা সময় এই মন্দির খোলা হয় এবং সন্ধ্যা আরতির পর আবার সন্ধ্যা আটটায় বন্ধ হয়ে যায় এই মন্দির। মন্দিরে প্রবেশ করতে হলে আপনাকে প্রথমেই দুই টাকা দিতে হবে। যদিও এই টাকা মন্দির রক্ষণাবেক্ষণ এবং পরিস্কার রাখার জন্য নেওয়া হয়।
মন্দিরে প্রবেশ করলেই আপনি সম্পূর্ণ ঘুরে মন্দিরগুলির দর্শন করতে পারবেন। পুজো দেওয়ার জন্য ফুল , ধুপকাঠি অথবা অন্যান্য সরঞ্জাম লাগলে তা পেয়ে যাবেন মন্দিরের মধ্যেই। এছাড়াও মন্দির প্রাঙ্গণেই থাকবে পুরোহিত, পুজো দিতে কোনও সমস্যা হবে না। তবে যদি কেউ ব্যক্তিগত ভাবে অনুষ্ঠান করে পুজো দিতে চান , তাহলে সেই ব্যবস্থাও করে দেওয়া হবে মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে। এছাড়াও মন্দিরে বিশ্রাম নেওয়ার ঘরের ব্যবস্থাও রয়েছে।
কিন্তু পুজোর আয়োজন এবং ঘরের জন্য ৮৬৫৩৩৭২০৮৮ অথবা ৮৬৫৩৫১২০৮৮ এই নাম্বারে ফোন করে আগে থেকে জানাতে হবে। বিশ্রাম নেওয়ার ঘরের ব্যবস্থা থাকলেও মন্দির প্রাঙ্গণে রাত্রী যাপনের কোনও ব্যবস্থা নেই। এই মন্দির নামে ১০৮ হলেও আদতে রয়েছে ১০৯ টি শিব মন্দির। জপমালার মত ছড়িয়ে রয়েছে ১০৮টি শিব মন্দির এবং একটি রয়েছে কিছুটা দূরে।
বর্ধমান শহরের নবাবহাট এলাকার এই শতাব্দী প্রাচীন মন্দিরের সারা বছরের ভিড় জমান পুণ্যার্থীরা। দূর দূরান্ত থেকে বহু মানুষ আসেন অনন্য এই স্থাপত্য শৈলির টানে। আজ থেকে ২৩০ বছর আগে লক্ষাধিক টাকা ব্যয় এই অনন্য স্থাপত্যটি নির্মাণ করেছিলেন বর্ধমানের তৎকালীন মহারানী বিষ্ণু কুমারী দেবী। ১৭৮৮ সালে এই মন্দির নির্মাণ শুরু হয় এবং শেষ হয় ১৭৯০ সালে।